৭ মার্চের ভাষণ বাজালে জেল-জুলুম হতো : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০৭:২৬ পিএম, ৭ মার্চ ২০১৮ বুধবার | আপডেট: ১২:৪১ এএম, ৮ মার্চ ২০১৮ বৃহস্পতিবার
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ৭ মার্চের ভাষণ আজ বিশ্ব ঐতিহ্য। অথচ এদেশে ৭ মার্চের ভাষণ বাজালে এক সময় জেল-জুলুম হতো। এ ভাষণ বাজাতে গিয়ে অনেকে নির্যাতিত হয়েছেন, আহত হয়েছেন। তবুও এ ভাষণ বাজানো থেমে থাকেনি।
বুধবার (৭ মার্চ) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের ৪৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ যেখানে শিশুপার্ক ঠিক সেখানে সেদিনের মঞ্চ ছিল। আমার সৌভাগ্য হয়েছিল সেখানে উপস্থিত থাকার। জাতির পিতা সেখানে দাঁড়িয়েই ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’- সেই ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন। তাঁর সে ঘোষণা সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে যায়। পাকিস্তানীরা যখন গণহত্যা শুরু করল, তখন বঙ্গবন্ধু ইপিআরের ওয়ারলেস ব্যবহার করে স্বাধীনতা না পাওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বলেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে জাতির পিতা আজীবন সংগ্রাম করেছেন। বাংলার মানুষ জাতির পিতার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতো। যেখানে বঙ্গবন্ধু অন্যায় দেখেছেন, সেখানেই প্রতিবাদ করেছেন।
তিনি বলেন, কি অন্যায় তিনি করেছিলেন? যে দেশে স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় আসে, সে দেশের কি উন্নয়ন হয়? দেশ স্বাধীন করেছিলেন, আত্মপরিচয় এনে দিয়েছিলেন। তারপরও তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় আসে। কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দিয়ে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, উপদেষ্টা করে ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, যারা একাত্তরে গণহত্যা চালিয়েছিল তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন জাতির পিতা। কিন্তু স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনি যারা তাদেরকে পরবর্তীতে জাতির পিতার হত্যার পর পুনর্বাসিত করা হয়েছিল। জাতির পিতাকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া যায় না। ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, জাতির পিতার নামটি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারে না। ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেসকো স্বীকৃতি দিয়েছিল। আড়াই হাজার বছরের ভাষণের ইতিহাসের মধ্যে এই ভাষণ অন্যতম শ্রেষ্ট ভাষণ।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করে থাকে। আমাদের লক্ষ্য জনগণের উন্নয়ন। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। কিন্তু এর আগে যারা সরকারে ছিল, সেই জিয়া সরকার, এরশাদ সরকার বা খালেদা জিয়ার সরকারের সময় দেশে তো এত উন্নত হয়নি। তাই আপনাদের কাছে আমার আহ্বান, যুদ্ধাপরাধী-খুনিরা যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে, সেজন্য সবাই সতর্ক থাকবেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় একটা ভাষাভিত্তিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিতি লাভ করিয়েছিল জাতির পিতা। এদেশের মানুষ ছিল শোষিত-বঞ্চিত, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, রাজনৈতিক মুক্তির জন্যই ছিল জাতির পিতার আন্দোলন সংগ্রাম। ফলাফল- তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, বারবার বন্দী হয়েছেন। আমাদের যুব সমাজ এক সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করেছেন।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ী করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে। উন্নয়নের সুফল গ্রাম পর্যায়ে চলে গেছে। আমরা মানবতার কথা চিন্তা করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমরা বুঝি তাদের কষ্ট। কারণ এক সময়ে আমাদের এক কোটি মানুষ আশ্রিত ছিল ভারতে।