বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে নাজমা-অপুর পৃথক শ্রদ্ধা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৮:৫৬ পিএম, ৭ জুন ২০২২ মঙ্গলবার
ফাইল ছবি
বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না যুব মহিলা লীগের। একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে বিভিন্ন সময় সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকছে সংগঠনটি। এবার খোদ সভাপতি সাধারণ-সম্পাদক নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবসে।
মঙ্গলবার বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবসে ধানমন্ডি ৩২ এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে একসাথে পুস্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা থাকলেও আলাদাভাবে নিজ অনুসারীদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গেছে কেন্দ্রীয় সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলকে।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পৃথকভাবে ফুল দেয়ার ছবি নিজেদের ফেসবুক ওয়ালে পোস্টও করেছেন তাদের অনুসারীরা।
এ বিষয়ে যুব মহিলা লীগ সভাপতি নাজমা আক্তারকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমাদের সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা ছিল। কিন্তু ট্রাফিক জ্যামের কারণে আমার পৌঁছতে কিছুটা দেরি হয়। ইতোমধ্যে সাধারণ সম্পাদক ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ফেলেন।
সভাপতিকে ছাড়া সাধারণ সম্পাদকের একা শ্রদ্ধা নিবেদনের বিষয়টা সংগঠনের জন্য নেতিবাচক কিনা জিজ্ঞেস করা হলে নাজমা আক্তার বলেন, বিষয়টা অবশ্যই দৃষ্টিকটু। কিন্তু এক্ষেত্রে আমার কী করার আছে? আপনি তাকে (অপু উকিল) জিজ্ঞেস করতে পারেন।
এ ব্যাপারে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,সভাপতি আসতে দেরি করেছেন। আমাদের মধ্যে সেই বোঝাপড়া আছে বলেই আমি আগে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছি। আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।
এসময় সাংবাদিকরা জোর করে বিরোধ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। নিজেকে সাংবাদিক প্রেমী দাবি করে অপু উকিল বলেন, শুধু নেগেটিভ নিউজই নিউজ না। আপনাদের উচিৎ আমাদের পজিটিভ নিউজ তুলে ধরা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমি শুনেছি। কী কারণে এমনটা হয়েছে এখনো জানি না, খোঁজ নিয়ে দেখবো।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এমন বিভাজন দৃশ্যমান হওয়াটা দলের জন্য নেতিবাচক ও বিব্রতকর কিনা জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন দলের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, সবকিছু তো ভালোভাবেই চলছে। আশা করি কোনো সমস্যা নেই। শেষপর্যন্ত কোনো সমস্যা থাকবে না।
এর আগে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি সাবিনা আক্তার তুহিনকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেন সভাপতি নাজমা আক্তার। বহিস্কারাদেশে কেবল সভাপতি স্বাক্ষর করেন, সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর সেখানে ছিল না।
পরবর্তীতে বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলেও নিজেকে ঢাকা উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি দাবি করে সকল সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে তিনি অংশগ্রহণ করছেন।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে নাজমা আক্তার বলেন, সাবিনা আক্তার তুহিনকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিনি আর ঢাকা উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি নন।
যুব মহিলা লীগ সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয় পাপিয়া কাণ্ডে। নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকা অবস্থায় শামিমা নূর পাপিয়া বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক হন। ধরা পড়ার পর তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। পাপিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় অর্থপাচার ও জাল টাকা রাখার ঘটনায় একটি মামলা এবং শেরেবাংলা নগর থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা হয়।