বিক্রি হয়নি সেই মানিক, হামিদার স্বপ্ন এবার দুগ্ধ খামার
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১০:৪৩ এএম, ১২ জুলাই ২০২২ মঙ্গলবার
ফাইল ছবি
অনেক যত্নে লালন করা ষাঁড় মানিককে এবারের ঈদে বিক্রি করতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী হামিদা আক্তার। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন হামিদা এবং ষাঁড়টি নিয়েও বিপাকে পড়েছেন তিনি।
তবে হামিদার স্বপ্ন, এবার ছোট পরিসরে হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের দুগ্ধ খামার গড়ে তুলবেন। পাশাপাশি বিশাল আকৃতির মানিককে লালন-পালন করে যাবেন।
হামিদা দেলদুয়ার উপজেলার সীমান্তবর্তী লাউহাটি ইউনিয়নের ভেঙ্গুলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদের মেয়ে। তিনি টাঙ্গাইলের করটিয়ার সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইতিহাস বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী।
হামিদা বলেন, ঈদের দুদিন আগে ঢাকার গাবতলীর হাটে মানিককেসহ দুটি ষাঁড় নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত মানিককে বিক্রি করার জন্য কোনো গ্রাহক পাইনি। এত বড় ষাঁড় কেউ কিনতে চায় না। আমাদের মতো স্বপ্ন দেখা গরিব মানুষের জন্য ধনীরা নন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা একটি ফোন নম্বর দিয়েছিলেন। ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে তিনি ষাঁড়টি না দেখেই তিন লাখ টাকা দাম বলেছিলেন। অথচ ষাঁড়টির দাম ১৫ লাখ টাকা।
গত বছর করোনার সময় গাবতলী হাটে মানিকের দাম উঠেছিল পাঁচ লাখ টাকা। তার আগের বছর মানিককে নেওয়া হয়েছিল পুরান ঢাকার ঢলপুর বাজারে। কিন্তু সেখানে কোনো ক্রেতা পাননি হামিদা।
কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নারী হয়ে হাটে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না। ভেবেছিলাম বাড়ি থেকেই কাঙ্ক্ষিত দামে ক্রেতা পাব। তারপরও দুজন শ্রমিক ও এক মামাকে সঙ্গে করে মানিককে ঢাকার গাবতলীর হাটে গিয়েছিলাম। বিক্রি তো হলোই না, উল্টো অনেক টাকা খরচ হলো দুই দিনে। হাটের জায়গা ভাড়া নেওয়া এক ব্যবসায়ীর স্থানে গরু দুইটা তুলেছিলাম। কিন্তু সেখানেও দুই হাজার টাকা দিতে হয়েছে। অথচ ওই ব্যবসায়ী টাকা দিয়েই জায়গা বরাদ্দ নিয়েছিল। বিক্রি না হওয়ায় সকালেই মানিককে নিয়ে বাড়িতে চলে আসি।
লাউহাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হামিদার ৪৫ মণের ষাঁড়টি বিক্রি হয়নি শুনে আমি খুবই কষ্ট পেয়েছি। তারা অনেক টাকা খরচ করে গরুটিকে বড় করেছে।
দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বাহাউদ্দিন সারোয়ার রিজভী জানান, করোনার পর থেকেই দেশে বড় গরুর চাহিদা কমে গেছে। দেশের প্রায় প্রতিটি হাটেই এবার চাহিদা ছিল মাঝারি আর ছোট গরুর। বেশির ভাগ বড় গরুই এবার অবিক্রীত রয়ে গেছে। এ কারণে কলেজছাত্রী হামিদার গরুটি বিক্রি হয়নি।