পরীমণির বিরুদ্ধে নাসিরের মামলা সিআইডিতে
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১১:১৯ এএম, ১৯ জুলাই ২০২২ মঙ্গলবার
ছবি: সংগৃহীত
চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী ও ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদের মামলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৮ জুলাই) এ আদেশ দেন ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসান।
গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল বলেন, আগামী ৬ অক্টোবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ৬ জুলাই ভয়ভীতি, ভাঙচুর, হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে পরীমণির বিরুদ্ধে ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসানের আদালতে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে মামলা করেন।
ওই দিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে আদালত মামলার বিষয়ে আদেশের জন্য ১৮ জুলাই দিন নির্ধারণ করেন।
মামলার অভিযোগে নাসিরউদ্দিন উল্লেখ করেন, পরীমণি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করে না। পরীমণি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে এবং দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন।
এতে আরও বলা হয়, বাদী (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত ১টা ১৫ মিনিটে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমণি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাসিরকে ডাক দেন। তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসারও অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরীমণি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন। নাসির উদ্দিন এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি তাকে গালমন্দ করেন। নাসির এবং আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, ‘পরীমণি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসিরউদ্দিনকে) মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও বোট ক্লাবে ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমণি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা করেন।’
এর আগে ২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পরীমণি ঢাকার সাভার থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
গত বছরের ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯-এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন নাসিরসহ তিন আসামি। তবে দুই মামলায় ২ সপ্তাহ কারাভোগের পর গত বছর কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বুধবার (৩০ জুন) রাত ৮টার দিকে মুক্তি পান।
প্রসঙ্গত, গত বছর চিত্রনায়িকা পরীমণির করা ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় জামিনের পর পাল্টা মামলা করবেন বলে জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ।
এ প্রসঙ্গে তখন তিনি গণমাধ্যমে তখন জানান, মিথ্যা অপবাদ, সম্মানহানি করা, পারিবারিকভাবে অপদস্থ করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে নায়িকা পরিমণির বিরুদ্ধে করব।
নাসির ইউ মাহমুদ আরও বলেছিলেন, মামলা করার জন্য প্রস্তুত আমি। তবে কখন করব কীভাবে করব এটা আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেই করব। আপনারা জানেন আমার সম্পর্কে যে ধরনের অভিযোগ করেছেন সবই মিথ্যা, পারিবারিকভাবে আমাকে হয়রানি করা হয়েছে। মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগের কারণে আমার দীর্ঘদিনের অর্জিত মান-সম্মান সবকিছুই মিশে গেছে।