রওশন এরশাদকে সরিয়ে দিতে স্পিকারের কাছে জাপার চিঠি
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১০:০৬ এএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ শুক্রবার
ছবি: সংগৃহীত
রওশন এরশাদকে সরিয়ে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। বিরোধীদলীয় নেতার পদে জি এম কাদেরকে মনোনয়ন দিতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠিও দিয়েছে দলটি।
বর্তমানে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ দলের কাউন্সিল ডাকার এক দিনের মধ্যেই জাপার সংসদীয় দল বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা অনেকদিন ধরে অসুস্থ। তিনি স্বাস্থ্যগত কারণে সংসদেও ঠিকমত আসতে পারছেন না। এজন্য সংসদীয় দল এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠক করেছি আমরা। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সিদ্ধান্তের কথা স্পিকারকে জানিয়েছি। ওই বৈঠকে ২৬ জন এমপির মধ্যে ২৩ জন উপস্থিত ছিলেন এবং একজন টেলিফোনে তার সম্মতির কথা জানিয়েছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে জি এম কাদেরের সভাপতিত্বে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সংসদ অধিবেশনে মাগরিবের নামাজের বিরতির সময় চুন্নু, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান, সালমা ইসলাম, ফখরুল ইমামসহ ৬/৭ জন সংসদ সদস্য দলের সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তের কথা স্পিকারকে জানান।
জাপা চিঠি দিলেও এ ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর। তবে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কোনও সিদ্ধান্ত নিলে স্পিকার সাধারণত সেটি অনুমোদন করেন। সংরক্ষিত আসনসহ সংসদে জাতীয় পার্টির সদস্য সংখ্যা ২৬ জন।
দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সঙ্গে জি এম কাদেরের দ্বন্দ্ব পুরনো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নানা বৈঠকে দুজন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এরশাদের গড়া দল জাতীয় পার্টি ভেঙেছে বেশ কয়েকবার। দলটির সাবেক মহাসচিবদের নেতৃত্বে আলাদা কয়েকটি দল এখনও সক্রিয় রয়েছে।
তিন বছর আগে এরশাদের মৃত্যুর পর দলে কর্তৃত্ব নিয়ে কাদের ও রওশনের বিরোধে দলটি আবার ভাঙনের মুখে পড়েছিল। তখন সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে সমঝোতা হয়। সেই সমঝোতায় রওশনকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পাশাপাশি দলে প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পদ দেওয়া হয়। আর কাদের দলের চেয়ারম্যানের পদ রাখার পাশাপাশি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা হন। সুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন বিদেশে থাকা রওশন গত বছর দেশে ফিরে দল নিয়ে নিজের ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন। বুধবার তার নামে আসা চিঠিতে আগামী নভেম্বর মাসে দলের কাউন্সিল ডাকা হয়।
এরপর জি এম কাদেরের পক্ষে তার প্রেস সচিব বিবৃতি দিয়ে বলেন, জাতীয় পার্টিতে চেয়ারম্যান ছাড়া আর কারও কাউন্সিলর ডাকার এখতিয়ার নেই। রওশনের ওই পদক্ষেপ ‘অবৈধ’। রওশন গত কিছুদিন ধরেই অসুস্থ। ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) টানা ৮৪ দিন থাকার পর গত বছর থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন তিনি। ছয় মাস পর গত জুন মাসে দেশে ফিরে সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দেন রওশন। ওই সময় রাজধানীর একটি হোটেলে মতবিনিময় সভা করে তিনি অভিযোগ করেন, অসুস্থতার সময়ে দলীয় নেতাদের কেউ তার খবর নেননি। এরপর ৪ জুলাই তিনি আবারও ব্যাংকক যান।