ঢাকা, শনিবার ১৬, নভেম্বর ২০২৪ ৭:৩৪:২২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

যেসব খাবার গর্ভপাত ঘটাতে পারে

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৫৯ এএম, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

যেকোনো নারীর জন্য মা হওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতিগুলোর একটি, যার শুরুটা হয় গর্ভাবস্থার মধ্য দিয়ে। এ সময় সুস্থ এবং ফিট থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়াটাই সুস্থ শিশু জন্মদানের ভিত্তি।

গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়, কারণ একটি ছোট ভুল গর্ভপাত ঘটাতে পারে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গর্ভবতী নারীদের প্রথম তিন মাস খুব সাবধানী হতে হবে, কারণ এ সময়টায় গর্ভপাতের হার সবচেয়ে বেশি থাকে। 

অদ্ভুত শোনালেও এটা সত্যি যে, এমন কিছু খাবার রয়েছে যা আসলে গর্ভপাত ঘটাতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী নারীদের বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে বেশ কিছু খাবার এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

অঙ্কুরিত আলু: অঙ্কুরিত আলু গর্ভবতী নারীদের জন্য খুব বিপজ্জনক। এতে নানা রকমের টক্সিন থাকে যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। তাছাড়া অঙ্কুরিত আলুর সবুজ অংশে সেলোনিন থাকে, যা গর্ভস্থ শিশুর ভ্রুণের বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। এমনকি গর্ভপাতও ঘটাতে পারে।

সজনে: সজনে খুব পুষ্টিকর একটি সবজি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এটিও গর্ভবতীদের প্রাথমিক পর্যায়েই গর্ভপাতের জন্য দায়ী হতে পারে। এই সবজিটিতে আলফা সিটোসটেরল উপাদান আছে, যা গর্ভপাত ঘটাতে পারে।

কলিজা: পশুর কলিজায় পুষ্টিমান অনেক থাকলেও সেই কলিজা যদি অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত পশু থেকে নেওয়া হয়, তাহলে তাতে টক্সিন থাকতে পারে। যা গর্ভপাত ঘটাতে পারে। কলিজায় অতিরিক্ত ভিটামিন এ এবং কোলেস্টেরল থাকে। তাই অতি মাত্রায় পশুর কলিজা খেলে তা গর্ভপাতের জন্য দায়ী হতে পারে।

আনারস: প্রথম ত্রৈমাসিকের গর্ভাবস্থাকালে আনারস বিপজ্জনক। কারণ আনারস খাওয়ার ফলে জরায়ুতে তীব্র সংকোচন হতে পারে। এর ফলস্বরূপ গর্ভপাতও ঘটতে পারে। আনারসে ব্রোমেলাইন থাকে। এটি একটি এনজাইম, যা প্রোটিনকে ভেঙে দেয়। ফলে জরায়ু নরম হয়ে অকাল প্রসব ঘটতে পারে।

আঙুর: গর্ভাবস্থায় আঙুর খাওয়া উচিত নাকি উচিত নয়- এটি একটি বিতর্কিত বিষয়। অনেক বিশেষজ্ঞ বলেন যে, গর্ভাবস্থায় আঙুর সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ এবং অন্য বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, এ সময় এই ফলটি এড়িয়ে চলাই ভালো। যদি আঙুর আপনার খুব প্রিয় হয়, তাহলে নিজ বিবেচনায় অল্প পরিমাণে খেতে পারেন। কিন্তু খালিপেটে আঙুর খাবেন না অথবা অ্যাসিড রিফ্লাক্স থাকলে মোটেই খাবেন না। 

কাঁচাডিম বা আধা সেদ্ধডিম: গর্ভবতী নারীদের কখনোই কাঁচা বা আধা সেদ্ধডিম খাওয়া উচিত নয়। কাঁচাডিমের সালমোনেলা নামক ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে গর্ভবতী নারীর আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা খাবারে বিষক্রিয়া করে নানারকমের পেটের অসুখ, টায়ফয়েড, প্যারাটায়ফয়েড ইত্যাদি রোগের সৃষ্টি করতে পারে। সেদ্ধ করার পর ডিমের কুসুম ও সাদা অংশ যেন শক্ত হয় তা দেখে খেতে হবে।

অপাস্তুরিত দুধ: গর্ভবতীদের পাস্তুরিত দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কাঁচা বা অপাস্তুরিত দুধ খেলে ডিমের মতোই বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। ফলে হতে পারে গর্ভপাত।

অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরাযুক্ত কোনো খাবার গর্ভবতী নারীদের খাওয়াটা উচিত নয়। বিশেষ করে প্রথম তিন মাসে তো একদমই নয়। এটি জরায়ুর ভেতর অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণের মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটাতে সক্ষম।

পেঁপে: প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও ভিটামিন থাকলেও গর্ভবতীদের জন্য এই ফল উপযুক্ত নয়। কারণ পেঁপে শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে তোলে। এই ফল ল্যাটেক্সসমৃদ্ধ। যা জরায়ুর সংকোচন, রক্তপাত ও গর্ভপাত ঘটার কারণ হতে পারে। এটি ভ্রূণের বিকাশকেও বাঁধাগ্রস্ত করতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় কাঁচা বা পাকা পেঁপে খাওয়া এড়ানোই ভালো।
তেঁতুল: ভিটামিন সি’র অন্যতম সমৃদ্ধ উৎস হলো তেঁতুল। কিন্তু গর্ভাবস্থার প্রথম মাসে অতিমাত্রায় ভিটামিন সি খেলে প্রজেস্টরনের উৎপাদন কমে যেতে পারে, যা গর্ভপাত ঘটাতে পারে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া