রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় প্রাণ গেল নারীর
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৮:৫৭ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০২২ সোমবার
ছবি: সংগৃহীত
ডায়াবেটিসের চিকিৎসা নিতে সোমবার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বাসা থেকে বারডেম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন হালিমা বেগম (৫০)। গুলিস্তানে পৌঁছে সকাল ৯টার দিকে রাস্তা পারাপারের সময় দুই বাসের চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরে দুপুর ১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান হালিমা।
হালিমা বেগমের জামাতা আতিকুর রহমান জানান, তার শাশুড়ি হালিমা ডায়াবেটিসের রোগী। তিনি নিয়মিত শাহবাগের বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা নিতেন। সোমবার সকাল ৮টায় তিনি বাসা থেকে একাই হাসপাতালের উদ্দেশে বের হন। এর কিছুক্ষণ পরই তারা খবর পান, গুলিস্তানে দুই বাসের চাপায় আহত হয়েছেন তিনি। পরে হাসপাতালে গিয়ে তাকে দেখতে পান।
হালিমা বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পথচারি লিটন জানান, গুলিস্তান পাতাল মার্কেটের উপরে রাস্তায় আহত অবস্থায় পড়েছিলেন ওই নারী। তখন ট্রাফিক সার্জেন্ট তার মাধ্যমে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে দুপুর ১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া জানান, সকালে গুলিস্তানে দুই বাসের চাপায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা দেখে পুলিশ বাস দুটিকে শনাক্তের চেষ্টা করছে।
মতিঝিল জোনের ট্রাফিক সার্জেন্ট দিদারুল ইসলাম জানান, সকালে পাতাল মার্কেটের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা আনন্দ পরিবহনের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মেঘালয় পরিবহনের একটি বাস ওই নারীকে চাপা দেয়। নিহত হালিমা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আইনথা গ্রামের লাল মিয়ার স্ত্রী। তার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
এর আগে রোববার দুপুরে গুলিস্তান লেভেল ক্রসিংয়ে বিআরটিসি বাসের ধাক্কায় হাসিনা বেগম নামে এক নারী মারা যান।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন নিহতের ছেলে রনি, মেয়ে ঝিনুক ও স্বামী লাল মিয়াসহ অন্য স্বজনরা। তাদের আহাজারিতের হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গ এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।
হালিমা বেগমের মেয়ে ঝিনুক আহাজারি করে বলছিলেন, মা তুমিতো একাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসো। আগেতো কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। আজ এমন দুর্ঘটনা ঘটলো সড়কের আজরাইল তোমারে চিরতরে দুনিয়া থেকে নিয়ে গেলে।
নিহতের স্বামী লাল মিয়া এ দুর্ঘটনায় অনেকটা বাকরুদ্ধ। তিনি এটুকুই বলছিলেন, ঘাতক বাসের চালকের শাস্তি চাই। যেন সড়কে আর এমন কোন মৃত্যু না হয়, এর নিশ্চয়তা চাই।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে।