ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬, নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৮:২২ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

জাপায় রওশন-কাদের দ্বন্দ্বের শেষ কোথায়?

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:০২ পিএম, ১৫ অক্টোবর ২০২২ শনিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

জাতীয় পার্টির (রওশনপন্থী-জাপা) কাউন্সিলের বাকি ৪১ দিন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে দলটির দশম জাতীয় কাউন্সিল। এ কাউন্সিল করতে মরিয়া জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদপন্থীরা। অন্যদিকে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরপন্থীরা কাউন্সিল বন্ধ করতে তৎপর।

আগামী ২৬ নভেম্বর কাউন্সিলের ঘোষণা করেছেন রওশান এরশাদ। ওই দিনই জাপার নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে। তৃণমূলের ডেলিগেট কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচন করা হবে আগামী ৩ বছরের জন্য জাপার নেতৃত্ব। যদিও কাউন্সিল ঘিরে রয়েছে নানা জটিলতা ও শঙ্কা। এই ইস্যুতে দলের ভেতরেই দুই ভাগে বিভক্ত জাপা। কাউন্সিলের জটিলতার পাশাপাশি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচন নিয়েও দ্বন্দ্ব চরমে।

সংসদের বিরোধী দলের নেতার আসন থেকে রওশন এরশাদকে সরিয়ে দিতে ইতোমধ্যে স্পিকার বরাবর চিঠি দিয়েছে জিএম কাদের পন্থিরা। তবে এখানো বিষয়টির সুরাহা হয়নি। কাউন্সিল প্রত্যাহার না করলে রওশন এরশাদ ও তার ছেলে সাদ এরশাদকে দল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দিয়েছেন জিএম কাদের গ্রুপ।

এছাড়া গণমাধ্যমে কথা বলায় জাপার সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙাসহ কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যানকে দল থেকে বহিষ্কার করেন জিএম কাদের। তবে তাদেরকে রওশন এরশাদ দলে ফিরিয়েছেন। অনেকে সম্মেলন ঘিরে কাজও করছেন। ইতোমধ্যে রাঙাকে জাপার সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে অন্তভুর্ক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও কাদের গ্রুপ থেকে কাজী ফিরোজ রশীদসহ কয়েকজন এমপি রওশন এরশাদের সঙ্গে যোগযোগ রাখছেন।

এদিকে জানা গেছে, আসন্ন কাউন্সিলের আগে যেকোনো মূল্যে সঙ্কট নিরসন করতে চান জিএম কাদের। বেগম রওশন এরশাদ দেশে ফিরলে তার কাছে বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে যাবেন কাদেরপন্থিদের গ্রুপ। তার কাছে কাউন্সিল প্রত্যাহার করতে বলবেন। কারণ হিসেবে কাদেরপন্থিরা বলছেন, জিএম কাদেরও বুঝতে পারছেন নির্বাচন আগে জাপা বিভক্ত হলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্যক্তি হিসেবেও তিনি ক্ষতির শিকার হতে হবেন। পাশাপাশি কূটনৈতিক মহলেও জাপার বিভক্তি নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি। এছাড়া দলের অনেকে এমপি রওশন এরশাদ দেশে ফিরলে তার সঙ্গে যোগ দিতে পারেন। অনেকেই তলে তলে রওশন এরশাদ গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং পরিস্থিতি বুঝে তারা সুর পাল্টাবেন।

এদিকে সম্মেলন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক ও এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বেগম রওশন এরশাদ সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নেতাকর্মীদের একত্রিত করে জাতীয় কাউন্সিলের ডাক দিয়েছেন। এই সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে যোগ্য নেতা নির্বাচিত হবেন।

জানতে চাইলে জাপার সম্মেলন প্রস্তুতির কমিটি সদস্য সচিব ও রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ বলেন, কোনো গ্রুপিং-বিভক্তি নয়, সবাইকে নিয়ে কাউন্সিল হবে। আমাদের কাউন্সিলও সময় মতোই অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশা করি, সময় মতো সবাই আসবেন।

জাপার দশম জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন রাজু  বলেন, আমাদের মোট ৭২টি জেলা কমিটি রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা প্রায় ৩২টি জেলায় কমিটি করেছি। ২৫ তারিখের মধ্যে বাকি কমিটিও করা হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি আমরা কয়েকটা উপ-কমিটিও করেছি, আরো কাজ চলছে।

রওশান এরশাদের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী ২৮ তারিখের আগেই তিনি দেশে ফিরবেন।

এক প্রশ্নরে জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়নি। যেহেতু জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ম্যাডাম কাউন্সিল ডেকেছেন, কাজেই আমরা আশাবাদী চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসবিচ মো. মুজিবুল হক চুন্নুসহ সবাই থাকবেন। আমাদের দল একটাই। জিএম কাদেরকে আমরা চেয়ারম্যান বলি, আমরা তো অস্বীকার করি না। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ম্যাডাম কাউন্সিল ডেকেছে। সেখানে সবাই উপস্থিত থাকবেন।

এ বিষয়ে জাপার মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, কারা কাউন্সিল ডেকেছে তা আমার জানা নাই। কে কোনো কাউন্সিল করলো এটা নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। সম্পর্কও নেই। আমাদের দলের দুই একজন বিশৃঙ্খলা করেছিল, সেজন্য তাদের আমরা অব্যাহতি দিয়েছি। তিনি দাবি করেন, দলের মধ্যে কোনো বিভক্তি নেই।