কারাগারেই থাকতে হবে ফারদিনের বান্ধবী বুশরাকে
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:৩৭ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২২ বুধবার
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশের হত্যা মামলায় তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতাইল্লাহ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, ডিবি পুলিশের খিলগাঁও জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক মজিবুর রহমান পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে বুশরাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এর আগে গত ১০ নভেম্বর আদালত আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আজকের শুনানিতে বুশরার পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। বুশরার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা মোখলেসুর রহমান বাদল, এ কে এম হাবিবুর রহমান চুন্নুসহ কয়েকজন আইনজীবী।
রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছিলেন, গত ৪ নভেম্বর দুপুর ৩টার দিকে ফারদিন পরীক্ষার জন্য বুয়েটের উদ্দেশে বের হন। ফারদিনের সঙ্গে যোগাযোগ না হওয়ায় বাবা নুর উদ্দিন রানা বুয়েটে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এবং তার মোবাইল বন্ধ। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীর বাবা রামপুরা থানায় ৫ নভেম্বর একটি জিডি করেন।
তিনি বলেন, ফারদিন বাসা থেকে বের হওয়ার দিন থেকে বিকেল পর্যন্ত বুশরার সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। প্রথমে তারা সিটি কলেজের কাছে একত্র হয়। পরে তারা নীলক্ষেত, ধানমন্ডি এলাকা ঘুরে এবং বিকেল ৫টার দিকে ‘ইয়াম চা ডিস্ট্রিক’ নামের একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়েছেন। পরে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে বেড়িয়েছেন।
আবেদনে বলা হয়, ৪ নভেম্বর রাত ১০ টার দিকে রিকশায় রামপুনা থানাধীন টিভি ভবন সংলগ্ন এলাকায় আসে। এদিকে তিন খোঁজাখুঁজির পর ৭ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে ফারদিনের বাবা খবর পান, তার ছেলের লাশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন শীতলক্ষ্যা নদী থেকে নৌ-পুলিশ উদ্ধার করেছে। পরে তিনি ছেলের লাশ শনাক্ত করেন।
আবেদনে আরও বলা হয়, ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামির সঙ্গে ভুক্তভোগীর প্রেমসহ ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন তারা একত্রে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করেছে। ফারদিনের হত্যার ঘটনাটি খুবই রহস্যজনক। ভুক্তভোগী বুয়েটের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তার এই রহস্যজনক মৃত্যুতে ভুক্তভোগীর পরিবার, সহপাঠী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং সবাই মর্মাহত। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচার-প্রচারণা চলছে। এই ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি বুশরাই একমাত্র ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানে। কারণ ঘটনার দিন তারা একত্রে অবস্থান করছিলেন। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ভুক্তভোগীকে কয়জন মিলে হত্যা করেছে, কীভাবে, কোথায় , কোন অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছে এবং কীভাবে, কোন স্থান থেকে ভুক্তভোগীর লাশ নদী ফেলানোর জন্য, কী কারণে ভুক্তভোগীকে হত্যা করেছে তা জানার জন্য আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করা প্রয়োজন।
বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন গত ৫ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওইদিনই রাজধানীর রামপুরা থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের দুদিন পর গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূর পরশের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।