আরিফা খাতুন: গৃহিনী থেকে সফল উদ্যোক্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০১:১৮ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার
ফাইল ছবি
অদম্য ইচ্ছাশক্তি, আত্মবিশ্বাস ও মনোবল কাজে লাগিয়ে গৃহিনীর পাশাপাশি একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন দিনাজপুরের খানসামার আরিফা খাতুন (৪০)। সফল নারী উদ্যোক্তা হিসাবে জয়ীতা পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। সফল এই নারী উদ্যোক্তা উপজেলার গোবিন্দপুর পানুয়া পাড়াএলাকার বাসিন্দা।
জানা যায়, এসএসসি পরীক্ষার আগেই ২০০০ সালে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর ২০০১ সালে এসএসসি ও ২০০৩ সালে এইচএসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি।
গৃহিনী হিসেবে কেটে গেছে অনেক সময়। ছোটবেলা থেকেই কিছু করার ইচ্ছা থেকেই ২০০৯ সালে ভ্রাম্যমাণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সেলাই প্রশিক্ষণ নেন। এই প্রশিক্ষণ নিয়ে তার দেবরের দেয়া একটি সেলাই মেশিন দিয়ে তিনি নিজ বাড়িতে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে বিভিন্ন ধরনের সেলাই কাজ শুরু করেন।
সময় যতই যায় ততই তার কাজের চাপ বাড়তে থাকে। সেজন্য ২০১৫ সালে বাড়ির পাশেই একটা দোকান ভাড়া নিয়ে আরো কিছু সেলাই মেশিন কিনে কাজের পরিসর বাড়ান আরিফা। জয়িতা সেন্টার নামে সেই দোকানে এখন ৩জন কর্মচারী। যা থেকে খরচ বাদে প্রতি মাসে তার আয় হয় ১৫-২০ হাজার টাকা। এতে সংসারে যেমন ফিরেছে সচ্ছলতা তেমনি এলাকার সবার কাছে তিনি প্রশংসিত।
কয়েক বছর আগে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ব্লক-বাটিক, নকশি কাঁথাসহ সেলাইয়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেন আরিফা আক্তার। পরে নানা সময়ে প্রায় ৯০০-১০০০ জন নারীকে এসব প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী হয়ে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করেন তিনি।
এই নারীরা আজ নিজ সংসারে বোঝা না হয়ে আর্থিকভাবে সচ্ছলতা নিয়ে এসেছেন। ফলে অনেকেরই নিজস্ব কর্মসংস্থান হয়েছে।
এসব কাজের স্বীকৃতি হিসেবে গত কয়েক বছর বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে পুরষ্কৃত হন তিনি। এছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কাজে আরিফার রয়েছে সবসময় উপস্থিতি।
ব্রাকের পল্লী সমাজ নামে একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে তিনি এলাকার মানুষের বিভিন্ন বিপদে-আপদে ও সামাজিক সমস্যায় এগিয়ে আসেন।
উদ্যোক্তা আরিফা খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সংসারের বোঝা হয়ে না থেকে ইচ্ছাশক্তি থেকেই সেলাই কাজ শুরু করেছি। যা থেকে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছি অন্যদেরও উৎসাহিত করছি। তবে সহায়তা পেলে এই প্রশিক্ষণ কাজ ব্যাপক পরিসরে করা যাবে।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা পারভীন বলেন, আরিফা উপজেলার নারীদের মডেল। তার এসব কাজ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অনেক নারীই সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।