ঢাকা, সোমবার ১০, মার্চ ২০২৫ ১৫:১১:১৩ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

চীনে করোনার কোনো নতুন ধরনের আবির্ভাব হয়নি:ডব্লিউএইচও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:৫৮ এএম, ৫ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

চীনে সম্প্রতি করোনার যে ঢেউ শুরু হয়েছে, সেজন্য করোনাভাইরাসের নতুন কোনো ধরন দায়ী নয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বুধবার ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক বলেন, ডব্লিউএইচও চীনের কাছে সাম্প্রতিক সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে হালনাগাদ তথ্য চেয়েছিল। চীনের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (চায়না সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন- সিসিডিসি) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চাহিদা অনুযায়ী তথ্য সরবরাহও করেছে।

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক বলেন, সিসিডিসির দেয়া বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আমরা জানতে পেরেছি, চীনে সম্প্রতি করোনা সংক্রমণের যে ঢেউ শুরু হয়েছে— সেজন্য ভাইরাসের নতুন কোনো ধরন দায়ী নয়। অর্থাৎ চীনে এখনও করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের আবির্ভাব ঘটেনি। দেশটিতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী ওমিক্রনের বিএ.৫.২ এবং বিএফ.৭। এগুলো নতুন কোনো ধরন নয়। ২০২১ সালেই ওমিক্রন ধরনের এই উপধরন দু’টি শনাক্ত হয়েছিল।

২০২০ সালের ১১ মার্চ ডব্লিউএইচও করোনাকে মহামারি ঘোষণা করার পর এ রোগের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চীনসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ দীর্ঘ লকডাউন, সপ্তাহের পর সপ্তাহব্যাপী বাধ্যতামূল কোয়ারেন্টাইন, সামাজিক দূরত্ববিধি, বাধ্যতামূলক করোনাটেস্টসহ কঠোর সব বিধি জারি করেছিল। তবে ২০২১ সালের প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রায় সব বিধি উঠিয়ে নিলেও চীন সে পথে হাঁটেনি।

বরং মহামারির প্রায় তিন বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও দেশজুড়ে যাবতীয় কঠোর করোনাবিধি জারি রেখেছিল চীন। সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই দেশটির এ অবস্থান পরিচিতি পেয়েছিল জিরো কোভিড নীতি হিসেবে।

তার সুফলও অবশ্য পাওয়া যাচ্ছিল। মহামারির দুই বছরে যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেখানে লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত ও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে— সেখানে চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী এই সময়সীমার মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ৩৩ হাজারের কিছু বেশি মানুষ এবং মৃত্যু ছিল এক হাজারের কিছু ওপরে।

কিন্তু প্রায় তিন বছর কঠোর করোনাবিধির মধ্যে থাকার জেরে অতিষ্ঠ চীনের সাধারণ জনগণ গত নভেম্বরের শেষদিকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। জনগণের এই বিক্ষোভের পর চলতি ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে সরে এসে সব করোনাবিধি শিথিল করে দেয় দেশটির সরকার।

তার পর থেকেই দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন, হাসপাতালগুলো করোনা রোগীদের ভিড়ে উপচে পড়ছে এবং অনেক ওষুধের দোকানে করোনার ওষুধের যোগান শেষ হয়ে গেছে।

গত ২৯ ডিসেম্বর মানুষের।যুক্তরাজ্যেভিত্তিক স্বাস্থ্যতথ্য গবেষণা সংস্থা এয়ারফিনিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চীনে কোভিডজনিত অসুস্থতায় প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে প্রায় ৯ হাজার।

চীনের বিভিন্ন বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রদেশের হাসপাতাল ও শ্মশানগুলো উপচে পড়ছে আক্রান্ত রোগী ও মৃতদেহের ভিড়ে। এই আক্রান্ত ও মৃতদের প্রায় সবার বয়স ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে।

এদিকে চীনে করোনা সংক্রমণের খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর গত সপ্তাহে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চীন থেকে আগত যাত্রীদের জন্য করোনা বিধি কঠোর করেছে। কোনো নতুন ধরনের প্রভাবে দেশটিতে করোনার এই ঢেউ শুরু হলো কিনা— সেই আলোচনাও শুরু হয়েছিল বেশ জোরেশোরে।

বুধবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা চীনের করোনা পরিস্থিতি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে কী করণীয়— সে সম্পর্কে বৈঠকও করেছেন।

এদিকে থেকে বিবেচনা করলে ডব্লিউএইচওর বুধবারের সংবাদ সম্মেলন ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের জন্য খানিকটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।