শীত নিবারণের ব্যর্থ চেষ্টায় নগরীর ছিন্নমূলরা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১১:০৪ এএম, ৮ জানুয়ারি ২০২৩ রবিবার
সংগৃহীত ছবি
হিম হিম ঠান্ডা বাতাস বইছে। তার ওপরে কুয়াশা। সূর্যের দেখা নেই এই কয়দিন। মাঝে মাঝে সূর্যিমামা উঁকি দিলেও হিম ঠান্ডা কমার কোনো সম্ভাবনা দেখছে না আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আরও কিছু দিন থাকবে।
রাজধানী ঢাকায় চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর শীতের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। যার ফলে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ পড়েছে বিপাকে। শীত রাজধানীর বুকে বেশ চেপে বসেছে।
পৌষের হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে পথশিশু ও নগরীর ছিন্নমূল মানুষেরা। রাতের নিস্তব্ধতার মধ্যে রাস্তায় গাড়ির আওয়াজ আর মাঝে মাঝে ক্ষুধার্ত কুকুরের হুংকার শোনা যায়। ফুটপাতে পথচারী চলাচল খুব একটা চোখে পড়ে না। আর তাই খালি ফুটপাতে রাত্রিযাপনের চেষ্টা করে শতশত মানুষ। তবে তাদের গায়ে জড়ানোর মতো কাঁথা বা কম্বল না থাকায় শীত হাড়ে হাড়ে জানান দেয়।
রাজধানী ঘুরে দেখা যায়, শুধু ধানমন্ডি নয়, রাজধানীর কাকরাইল, পল্টন, গুলিস্তান, শাপলা চত্বর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ ও ফুটপাতে রাত্রিযাপন করে অনেক মানুষ। গ্রীষ্ম, বর্ষা সারাবছর তাদের একইভাবে কাটে।
ধানমন্ডি লেক এলাকায় দেখা মেলে পথশিশু রাজের, রাস্তার ফুটপাতে ঘুমাচ্ছে। কনকনে শীতে কোনো রকমে পাতলা কম্বল মুড়িয়ে রাস্তার উপরে রাত কাটিয়ে দিচ্ছে। রাজ বলেন, বোতল কুড়িয়ে যা উপার্জন হয়, তা দিয়ে কোনো রকমে খাওয়াদাওয়া করে। গরম পোশাক কেনার টাকা নাই, শীতের শুরুর দিকে একজন একটি পাতলা কম্বল দিয়েছিলো, তা নিয়ে রাতে ঘুমায়। এই কম্বলে শীত মানায় না। ভোরের দিকে খুব ঠান্ডা লাগে। ফুটপাতে রাত কাটানো বেশিরভাগ মানুষ ভিক্ষুক। সারাদিন ভিক্ষা করে রাতে মাথাগোঁজার ঠাঁই না থাকায় তারা ফুটপাতকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বেছে নেয়।
ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় ভিক্ষা করতে আসা ৫০ বছর বয়সী জরিনা বেগম জানান, তার আপন বলতে কেউ নেই। ভিক্ষা করে তার খাওয়া চলে। আর থাকার জায়গা না থাকায় রাতে আশ্রয় হয় ফুটপাতে। অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি জানান, সারাদিন একভাবে কাটলেও রাতে ফুটপাতে থাকতে খুব কষ্ট হয়। একে তো শীতের কাপড় নেই তার ওপরে মশার কামড়। সারারাত একরকম না ঘুমিয়েই কাটান তিনি। ফুটপাতে জরিনার সঙ্গে থাকা আরো বেশ কযেকজন।