বেড়েছে বইয়ের দাম, কপালে ভাঁজ পাঠকদের
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৮:৪১ পিএম, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার
ফাইল ছবি
বইয়ের দাম বাড়ায় বইমেলা থেকে চাহিদামতো বই কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। কাগজের দাম বাড়ায় প্রতিটি নতুন ছাপানো বই বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশের বেশি দামে। এ ছাড়া বইয়ের দাম বাড়ায় এবার গত বছরের তুলনায় অনেক প্রকাশকই কম সংখ্যক বই বের করেছেন। আর ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণের সুযোগ থাকায় দ্বিগুণ দামে বই বিক্রির অভিযোগও পাঠকের।
অমর একুশে বই মেলা। বাঙালির প্রাণের এই মেলায় চাহিদা থাকে নতুন পুরনো সব বই। যেখানে প্রত্যাশিত বই পেতে ব্যাকুল থাকে পাঠক হৃদয়।
মেলা প্রাঙ্গণে স্টলে সাজিয়ে রাখা বই মন টানে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। নতুন বইয়ের মলাটের গন্ধে মাতেন পাঠকরা। কেউ কেউ বই না পড়লেও কিনছেন পরিচিত বা আপন কারও জন্য। দিচ্ছেন উপহারও। তবে নতুন ছাপা কিংবা প্রকাশিত বইয়ের দাম বাড়ায় হতাশ তারা। অভিযোগ দ্বিগুণ দামেও বিক্রি হচ্ছে বই।
বইমেলায় আসা ক্রেতারা জানান, যে বইটা আগে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ছিল, সেটা এখন ৮০০ টাকা হয়ে গেছে। বই কেনা আমাদের জন্য একটু কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
বই যেন মা-বাবার হাত ধরে মেলায় আসা ছোট্ট শিশুর গল্পের ঝুড়ি। আছে মধুর সব গল্প-কবিতা, অজানা সায়েন্সফিকশন, প্রযুক্তি ও ছন্দ শেখার গৌরবময় বর্ণমালার ছাপ। শিশুদের এসব বইয়েও বোঝা হয়েছে দাম।
একজন অভিভাবক বলেন, বাচ্চাকে নিয়ে বইমেলায় এসেছি। দাম একটু কম থাকলে হয়তো আরও বই কিনতে পারতাম।
বাজারে একের পর এক কাগজের দাম বাড়ায় নতুন ছাপানো বই বিক্রি হচ্ছে ৪০ শতাংশের বেশি দামে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকলেও লেখকের প্রত্যাশা পাঠক ভালোবেসেই বই কিনবেন।
এ বিষয়ে লেখক কবির মজুমদার বলেন, বইয়ের দাম বাড়লেও ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে। কারণ বই কিন্তু মোবাইলের মধ্যেও ঢুকে গেছে। বই মানুষকে পড়তেই হবে।
বইয়ের দাম বাড়ায় এবার অনেক প্রকাশনী থেকে গত বছরের তুলনায় অর্ধেক বই প্রকাশ করার কথা জানিয়েছে। কোনো কোনো প্রকাশক পাণ্ডুলিপি সাজিয়ে পাঠক চাহিদা দেখে বই ছাপানোর কথা ভাবছেন। তবে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বাড়ানোর কথা জানান তারা।
ভাষাচিত্রের প্রকাশক খন্দকার সোহেল বলেন, এবার বই প্রকাশের সংখ্যা অনেক কম হবে। আমার প্রায় ১০০ পাণ্ডুলিপি তৈরি আছে। কিন্তু, আমি ২৫টার বেশি বই করার সাহস পাচ্ছি না।
অন্যপ্রকাশের প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম বলেন, গত এক বছরে কাগজের মূল্য আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু আমরা বইয়ের দাম আড়াই গুণ বৃদ্ধি করিনি। আমরা বাড়িয়েছি ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ।
এদিকে, প্রকাশক তার বইয়ের দাম নির্ধারণ করায় বাড়তি মুনাফার সুযোগ নিচ্ছেন কেউ কেউ। তবে নিজেদের ক্ষতির চিন্তা করে তা করবেন না বলে জানান পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির এই নেতা।
বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, এটা নিয়ে বাংলা একাডেমী কাজ করে না। আমাদের সমিতি হয়তো নির্দেশনা দিতে পারি।
তবে বইকে ভালোবেসে কিংবা মনের খোড়াক জোগাতে মেলা প্রাঙ্গণে আসছেন বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দুরবস্থায় কাগজের দাম বাড়ায় মেলায় আসা বইয়ের দাম বেড়েছে। এ অবস্থায় মেলায় বই কিনতে এসে আর্থিক হিসাব-নিকাশে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছেন পাঠকরা। তাই বইয়ের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বইপ্রেমীরা।