ভাঙন ধরেছে সূর্যে, অবাক র্বিজ্ঞানীরা!
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০২:০৪ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শনিবার
সংগৃহীত ছবি
সৌরজগতের কেন্দ্র হচ্ছে সূর্য। মহাবিশ্বের লাখো-কোটি নক্ষত্রের মধ্যে এটিই হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটতম নক্ষত্র। এর বয়স ৪৫০ কোটি বছর। পৃথিবী থেকে যার গড় দূরত্ব ১৫০ মিলিয়ন কিলোমিটার। আলোর বেগে চললে এই দূরত্ব পেরোতে লাগে প্রায় সাড়ে ৮ মিনিট। এত দূরে থেকেও মহাকর্ষ বলে পৃথিবীসহ আরও ৭টি গ্রহকে নিজের শাসনে বেঁধে রেখেছে সূর্য। নক্ষত্রটি না থাকলে কী হতে পারত, সেটা ভাবাও মুশকিল। সূর্য না থাকলে আমাদের সৌরজগতে কোনও আলো থাকত না, উষ্ণতা থাকত না, সেই সঙ্গে পৃথিবীতে থাকত না প্রাণের বিন্দুমাত্র কোনও স্পন্দনও। এ নক্ষত্র থেকে আসা আলো আর তাপের কারণেই পৃথিবীতে জীবন টিকে আছে।
সৌরজগতের কেন্দ্রবিন্দু এই সূর্যকে নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বিস্ময়ের শেষ নেই। সেই সূর্যের নতুন একটি অবস্থান বিজ্ঞানীদের কপালে কিছুটা ভাঁজ ফেলেছে। এই নক্ষত্রটির একটি বিশাল অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে তার উত্তর মেরুতে টর্নেডোর মতো ঘূর্ণি সৃষ্টি করেছে।
এই অসাধারণ ঘটনাটি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর দুই মেরুস্থানেই একটি বিশাল জায়গাজুড়ে নিম্নচাপ রয়েছে। সাধারণভাবে বললে, ঠাণ্ডা হাওয়া ঘড়ির উল্টো দিকে ঘূর্ণন করলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে ‘পোলার ভর্টেক্স’ বলা হয়। সাধারণত, গ্রীষ্মকালে এটি দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে শীতে এর শক্তি বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনায় হতবাক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
গত সপ্তাহে মহাকাশ আবহাওয়ার পূর্বাভাসদাতা ড. তামিথা স্কোভ টুইটারে বিষয়টি শেয়ার করেছেন।
সূর্য অগ্নিশিখা নির্গত করে থাকে। এটি কখনও কখনও পৃথিবীর যোগাযোগকে প্রভাবিত করে। তাই বিজ্ঞানীরা নক্ষত্রটির অভ্যন্তরীণ এই পরিবর্তন নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন।
ড. স্কোভ গত সপ্তাহে এক টুইটে বলেছিলেন, “মেরু ঘূর্ণির কথাই ধরুন! উত্তরের অংশে একটি অংশ নিজের পৃষ্ঠ থেকে ভেঙে গেছে এবং এখন আমাদের নক্ষত্রের উত্তর মেরুর চারপাশে একটি বিশাল ঘূর্ণিতে সঞ্চালিত হচ্ছে।”
নাসার দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এর আগেও সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে বড় উজ্জল অংশ বের হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে নতুন এই ঘটনাটি বিজ্ঞানী মহলকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।
ড. স্কোভ পরবর্তী একটি টুইটে বলেছেন, ‘#SolarPolarVortex-এর আরও পর্যবেক্ষণ থেকে জানা যায়- আনুমানিক ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশে মেরুকে প্রদক্ষিণ করতে উপাদানটির জন্য প্রায় চার ঘণ্টা সময় লেগেছে। এর মানে হল এই ঘটনায় বাতাসের অনুভূমিক গতি ছিল সেকেন্ডে ৯৬ কিলোমিটার বা সেকেন্ডে ৬০ মাইল।”
ইউএস ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফিয়ারিক রিসার্চের সৌর পদার্থবিদ স্কট ম্যাকিনটোশ কয়েক দশক ধরে সূর্য পর্যবেক্ষণ করছেন।
তিনি স্পেস ডটকমকে বলেছেন, সূর্যের অংশ ভেঙে এভাবে ‘ঘূর্ণি’ হওয়া এবং সৌর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে চাবুকের মতো পড়ার মতো ঘটনা তিনি কখনও দেখেননি।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এখন এই অদ্ভুত ঘটনাটি বিশ্লেষণ করছেন। তার এর সম্পর্কে আরও বিশদ তথ্য সংগ্রহ করছেন।