ঢাকা, বুধবার ১২, মার্চ ২০২৫ ১:৪১:৪৬ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

মেহেরপুরে নুর নাহারের ইফতার ও সেহরি বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৪৫ পিএম, ৬ এপ্রিল ২০২৩ বৃহস্পতিবার

মেহেরপুরের ফার্মেসী ব্যবসায়ী নুর নাহার রমজানে রোজাদারদের হাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন।

মেহেরপুরের ফার্মেসী ব্যবসায়ী নুর নাহার রমজানে রোজাদারদের হাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন।

একমাত্র মৃত সন্তানের আত্মার মঙ্গল কামণায় মেহেরপুরের ফার্মেসী ব্যবসায়ী নুর নাহার রমজানে রোজাদারদের হাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন।
রোজ সন্ধ্যায় মেহেরপুর পিডিবি মসজিদের মুসল্লিদের জন্য ইফতার ও রাতে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের রোজাদার রোগী ও রোগীর স্বজনদের জন্য সেহরির ব্যবস্থা করেন তিনি।  আট বছর ধরে রমজান মাসজুড়ে এ কাজটি করে চলেছেন তিনি। একমাত্র মৃত ছেলের আত্মার শান্তি কামনায় তার এ কাজ স্থানীয়ভাবে  প্রসংশা কুড়িয়েছে।
রাত ২টা বাজার পর থেকেই মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দূর গ্রামের রোগী ও তাদের স্বজন থালাবাটি নিয়ে হাসপাতাল গেটের বাইরে চলে আসে। হাসপাতাল পার্শ্ববর্তী দুস্থ পরিবারেরও অনেকে আসে। সেখানে নুর নাহার বিনামূল্যে সেহরি বিতরণ করেন। কেউ সেখানে বসে নুর নাহারের দেয়া সেহরি খায়, কেউবা থালাবাটি ভরে সেহরি নিয়ে যায়। হাসপাতালের কাছেই নুর নাহার বেগমের বাড়ি। তিনি পুরো রমজান মাসজুড়ে হাসপাতালের রোগী, রোগীর স্বজন এবং নিকটবর্তী দুস্থদের মাঝে সেহরি বিতরণ করেন। হাসপাতাল গেটের সামনে নিজের ‘নাহার ফার্মেসি’র সামনে নারী-পুরুষকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সেহরি গ্রহণ করতে দেখা যায়। নুর নাহার বাড়ির পাশের পিডিবি মসজিদের মুসল্লিদের মাঝেও প্রতিদিন ইফতার বিতরণ করেন। এ হিসেবে ইফতার ও সেহরি মিলে প্রতিদিন তিনি দু‘শতাধিক রোজাদারকে নিজ খরচে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন।
নুর নাহার বেগম জানান, ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই তার একমাত্র সন্তান এক দুর্ঘটনায়  মারা যায়। সন্তানের আতœার শান্তি কামনায় মানুষকে তিনি সেহরি খাওয়ায়। মসজিদের মুসল্লিদের ইফতার দেন। নুর নাহারের স্বামী নুরুল ইসলাম মেহেরপুর পিডিবি অফিসে কর্মরত। হাসপাতাল গেটে তাদের ‘নাহার ফার্মেসি’ নামে একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। আছে বিঘা দশেক জমি। নুর নাহার ফার্মেসি ব্যবসা করেন। প্রতিদিন নিজ হাতে মসজিদের মুসল্লিদের জন্য ইফতার আয়োজন এবং রাত ১০টার পর দুস্থদের জন্য সেহরি রান্না করেন। ডিম, মাংস অথবা মাছের সঙ্গে চিকন চালের ভাত, ডাল একটি সবজি দিয়ে সেহরি সারেন।
সেহরি নেয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নার্গিস আরা, মনোহরপুর গ্রামের বিলকিস, গাংনী উপজেলার সামসুল ইসলাম, রফিকুল আলম, মুজিবনগর উপজেলার মিনুয়ারাসহ অনেকেই জানান, কয়েকদিন ধরে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নুর নাহার বেগম তাদের সেহরি দেয়ার কারণে সেহরির জন্য চিন্তা করতে হয় না। রোগীদের মাঝে সেহরি বিতরণে নুর নাহারকে সহযোগিতা করেন হাসপাতাল এলাকার সাইফুল ইসলাম ও তারিকুল ইসলাম নামের দু’জন।  হাসপাতালের সেবক সেবিকারাও সহায়তার হাত বাড়ান সেহরি বিতরণে।ফলে রোগীরা  সেহরির সময় হাসপাতাল গেটে গিয়ে নাহার ফার্মেসীর সামনে থেকে থালা ভরে সেহরির খাবার নিয়ে আসে। নুরনাহারের বেদনার কথা শুনে তারা প্রাণখুলে দোওয়া করে।