ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১, নভেম্বর ২০২৪ ২১:৪২:১৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

যেভাবে ফুড ব্লগার হয়ে উঠলেন শিক্ষার্থী জেসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৩৫ পিএম, ৭ মে ২০২৩ রবিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

ডিজিটাল বিশ্ব যেভাবে রেসের লাগামহীন ঘোড়ার মতো দৌড়াচ্ছে তাতে পরিবর্তন এসেছে জীবনযাত্রার মানে এবং কর্মক্ষেত্রে। করোনা অতিমারির সময়ে দক্ষতাহীন মানুষজন একদিকে হারিয়েছেন বেঁচে থাকার অবলম্বন চাকরি অপরদিকে ডিজিটাল স্কিল নির্ভর তরুণরা পথ বের করেছেন সম্ভাবনার। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে দেশে বেড়েছে ই-কমার্স এবং এফ-কমার্সের ক্ষেত্র।

অনলাইন নির্ভর দক্ষতাগুলোর প্রয়োজনীয়তা বেশ ভালোভাবেই টের পাওয়া যাচ্ছে করোনাকালে। তরুণ প্রজন্ম নিজেদের মেধা আর শ্রম কাজে লাগিয়ে প্রতিনিয়তই উদ্ভাবন করে যাচ্ছেন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্রের। স্যোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এখন আয়ের অন্যতম বড় উৎস বিশ্বব্যাপি। আগে শুধু ইউটিউব আয়ের বড় উৎস হলেও এখন ফেসবুকও ক্রিয়েটরদের অনেক বড় একটা সুযোগ করে দিয়েছে আয় করার।

কেউ কেউ ব্লগিং করছেন, কেউবা করছেন ডিজিটাল আঁকিবুঁকি আর কেউ মার্কেটিং। দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি অল্প কিছু সময় দক্ষতার সাথে এসব মিডিয়াতে ব্যয় করে সফলতার মুখ দেখছেন অনেকেই।

তেমনি একজন বগুড়ার আনিকা তাবাসসুম জেসি। পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজিতে পড়াশোনা করছেন জেসি। বগুড়ার মধ্যে খাবারের রিভিউ দিয়ে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। ২০২২ সালের মে মাস থেকে ফুড ব্লগিং দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও তিন মাস পর থেকে প্রায় সব ধরনের কনটেন্ট নিয়েই কাজ শুরু করেন। যার মধ্যে রয়েছে ফানি, সচেতনতা মূলক, রান্না, মুভি রিভিউসহ ডেইলি লাইফ।

জানতে চাইলে জেসি বলেন, প্রায় প্রতিদিনই বাহিরে খাওয়া হয়তো তাই ভাবলাম একটা ব্লগ বানাই। তারপর পেজ তৈরি করে আপলোড দিলাম। আর দেখি প্রায় ১০ হাজার মানুষ দেখেছেন, সেই অনুপ্রেরণা থেকেই আমি রেগুলার ব্লগিং শুরু করি। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি, এখন পেইজে প্রায় ৬০ হাজারের কাছাকাছি ফলোয়ার রয়েছে। এই যাত্রায় সব থেকে বেশি সহযোগিতা করেছে আমার বন্ধু বুশান, ভিডিও এডিটিং এবং ক্যামেরার পিছনে সেই কাজ করেছে। বর্তমানে ফেসবুক বিজ্ঞাপন এবং স্পন্সর থেকে যা উপার্জন হচ্ছে তাতে নিজে খুব ভালো ভাবে চলতে পারছি।

জেসি আরও বলেন, আমাদের আসে পাশে অনেকে দারিদ্র্যতার কারণে চিকিৎসা করতে পারেনা, তাদের সমস্যা আমি ফেসবুকে তুলে ধরি এবং সেখান থেকে তাদের অনেক বড় একটি সাহায্য হয় এবং আমি নিজেও সাহায্য করি।

তিনি বলেন, উপার্জিত অর্থ দিয়ে শীতের মধ্য কম্বল দিয়েছি, একটা এতিম মাদ্রাসার কোরআন শরিফ থেকে শুরু করে কম্বল, তোষক, চাল, ডালসহ মাসের পুরো বাজার করে দিয়েছি। কয়েক মাস আগে প্রায় ৮-১০ জন এতিম বাচ্চাদের শখ পূরণ করার চেষ্টা করেছি।

আনিকা তাবাসসুম জেসি জানান, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সব জেলার বিশেষ যেসব বিষয়বস্তু আছে সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবো। এমনকি দেশের বাহিরের বিষয়বস্তুও তোলা ধরার ইচ্ছা আছে। সবসময় অসহায় মানুষের পাশে থাকতে চাই। এখন ছোট পরিসরে করছি যখন আয় বেশি হবে তখন বড় পরিসরে করবো ইনশাআল্লাহ।

ফেসবুকে ভিডিও বানানোর ক্ষেত্রে ফুড ব্লগিং খুব ভালো একটা সেক্টর বলে মন্তব্য করে জেসি বলেন, কেউ যদি মনে করেন তার কথায় কোনো জড়তা নেই এবং কনফিডেন্স আছে তারা ভিডিও বানানো শুরু করতে পারে। তবে ফুড ব্লগার হতে হলে শুরুর দিকে আপনার প্রচুর টাকা খরচ করা লাগবে এটাও মাথায় রাখা লাগবে। ফেসবুক এবং ইউটিউব থেকে ইনকাম করার জন্য সাধারণ মানুষের ধৈর্য ধরে কমপক্ষে ১-৩ বছর অপেক্ষা করার মানুষিকতা থাকা লাগবে। হাল ছেড়ে দিলে হবে না। আর আল্লাহ হয়তো আমার ভাগ্য এইদিকে ভালো রেখেছেন তাই পেজ খোলার মাত্র এক মাসের মধ্যেই আমার পেজ মনিটাইজেশন হয়েছে। যেটা এক কথায় মিরাকল একজন সাধারণ মানুষের জন্য। এটা সম্ভব হয়েছে আমার সাপোর্টারদের জন্য। তাদের কাছে কৃতজ্ঞ আমি।