ঢাকা, বুধবার ২৭, নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৫০:১১ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

রাজধানীর পশুর হাটে ক্রেতা বাড়লেও বিক্রি কম

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:৪২ পিএম, ২৭ জুন ২০২৩ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

রাজধানীতে জমতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। নগরীর বিভিন্ন হাটে ক্রেতা বাড়লেও বিক্রি এখনও কম। পশুর দাম নিয়ে বিস্তর অভিযোগও রয়েছে ক্রেতাদের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনের খরচ বেড়েছে। এদিকে, সারা দেশের কোরবানির পশুর হাটে প্রতারণা ঠেকাতে নজরদারি বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটে সারা বছরই থাকে নানা জাতের পশুর যোগান। তবে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে সেই যোগান অনেকটাই বেড়েছে। গরু-ছাগলের পাশাপাশি আছে দুম্বা-ভেড়া-মহিষ।

রাজধানীর অন্যতম বড় গাবতলী পশুর হাটে ক্রেতার উপস্থিত কম থাকলেও ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পশু বিক্রেতারা হাটে এসে জায়গা করে নিচ্ছেন।

গাবতলীর হাটে মিলছে ছোট বড় সব রকমের গরু। সত্তর আশি হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১২ বা ১৫ লাখ টাকা দামের গরুও মিলছে গাবতলি হাটে।

তবে বিক্রি এখনও তেমন একটা শুরু হয়নি। অলস সময় পার করছেন বড় গরুর বেপারিরা। তবে, মাঝারি গরুর চাহিদা বরাবরই বেশি।

হাটে এখনও পুরোপুরি বেচা-বিক্রি শুরু না হলেও গরু বিক্রেতারা দাম কিছুটা চড়া হাঁকছেন। বড় গরুর তুলনায় মাঝারি আকারের গরুর দাম বেশি দেখা যায়।

তাই এক ব্যাপারী থেকে আরেক ব্যাপারীর কাছে ছুটছেন ক্রেতারা। হাটে ক্রেতারা দাম শুনে ফিরে যাচ্ছেন বারবার। দামের সঙ্গে মনের মতো গরু মেলে না বলে জানান তারা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গো খাদ্যের উচ্চ মূল্যের কারণেই এবার পশুর দাম বেড়েছে। তারা স্বীকার করলেন, বড় গরুর থেকে মাঝারি ও ছোট গরুর দাম বেশি।

তারা জানান, এক মণের গরু চাওয়া হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা। বিক্রিও হচ্ছে। আর ২০ মণের একটি গরুর দাম সাত লাখ চাওয়া হলেও পাঁচ লাখের বেশি উঠছে না। গাবতলী পশুর হাটের ব্যবস্থাপক আবুল হাসেম বলেন, মোটামুটি সব কিছু ভালো আছে। তবে এখনো গরু বিক্রি কম। মঙ্গলবার সারা দিন একটু কম বিক্রি হয়েছে। সাধারণত সন্ধ্যার দিকে বিক্রি বাড়ে। ঈদের আগের দিন অনেক গরু বিক্রি হবে আশা করছি।’

রাজধানীর মেরাদিয়ায় অস্থায়ী পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা হাটে ঘুরে ঘুরে নিজের পছন্দমতো কোরবানির পশু খুঁজছেন। মনের মতো হলে দাম জানতে চাইছেন। গরু ব্যবসায়ী বেশি দাম হাঁকালেও নিজের সাধ্যের মধ্যেই দাম বলছেন ক্রেতারা। অন্যদিকে নিজের পালন করা পশু বিক্রির জন্য ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছেন কিছুসংখ্যক বিক্রেতা।

মালিবাগ এলাকার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা আবু তাহের দেড় লাখ টাকার মধ্যে একটি কোরবানির পশু কিনতে হাজির হন ৩ নম্বর শেডের সামনে। লালচে রঙের একটি গরু পছন্দ হওয়ায় দাম জানতে চান রাজবাড়ীর গরু ব্যবসায়ী আব্দুল খালেকের কাছে। খালেক দাম চান আড়াই লাখ টাকা। দরাদরির এক পর্যায়ে আব্দুল খালেক এক লাখ ৪০ হাজার টাকায় রাজি হলেও আবু তাহের মানতে পারেননি।

ফিরে যাওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘আসলে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা রেখেছিলাম কোরবানির জন্য, যা এক লাখের বেশি নয়। কিন্তু বাজারের ছোট ছোট গরুর এক লাখের ওপরে দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। দুই ঘণ্টা ঘুরে একটা গরু পছন্দ করলাম; কিন্তু দাম আমার সাধ্যের বাইরে।’

মেহেরপুর থেকে রাজধানীর আফতাবনগর হাটে সাতটি গরু নিয়ে এসেছেন আক্তার হোসেন নামের এক বিক্রেতা। তিনি বলেন, ‘হাটে গরুর কোনো অভাব নেই। এসব গরুর মধ্যে মাঝারি ও ছোট আকারের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। সেই সঙ্গে দামও বেশি। এবার গরুর দাম বেশিই থাকবে, কারণ এবার বেশি দামে গরু কিনেছেন পাইকাররা। গরুর খাবারের দাম অনেক বেশি। তাই সব ধরনের গরু বাড়তি দামে কেনা আমাদের। গত বছর যে গরু দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এবার সেই গরু কমপক্ষে এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে।’

ভাটারা সাঈদনগর হাটে দেড় শতাধিক ছাগল নিয়ে এসেছেন মাসুম বিল্লাহ। মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০০টির বেশি ছাগল বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘বড় ছাগলগুলো এখনো রয়ে গেছে। তবে ছোট ও মাঝারি ছাগলগুলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।’

এদিকে, হাটগুলোর নিরাপত্তায় কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যে কোন সমস্যায় ব্যাপারীরা পুলিশ-র‌্যাবের সহায়তা পাবেন বলে জানিয়েছেন দুই বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা।

মহাসড়কে পশুবাহী গাড়ি আটকানোর অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানান পুলিশ মহাপরিদর্শক। এছাড়া ঈদ পরবর্তী পশুর চামড়া বিক্রির ওপরও নজরদারি থাকবে।

হাটের সামনের সড়কটি যানজট মুক্ত রাখা হচ্ছে। গরু ক্রেতাদের বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার জন্য ছোট ছোট পিকআপও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।