কাশিমপুর থেকে পাপিয়াকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১১:২৮ এএম, ৪ জুলাই ২০২৩ মঙ্গলবার
সংগৃহীত ছবি
কারাবন্দি যুব মহিলা লীগের সাবেক নেত্রী শামীমা নুর পাপিয়াকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের (ভারপ্রাপ্ত) জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সোমবার (৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে প্রিজন ভ্যানে তাকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪০ মাস ধরে শামীমা নুর পাপিয়া গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে জেল বিধি অনুযায়ী তাকে ‘রাইটার’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। পাপিয়া রুনা লায়লা নামে এক হাজতিকে সম্প্রতি নির্যাতন করে। তার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেন। এমন অভিযোগে রুনার ছোট ভাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে গঠন করা হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি। তার প্রেক্ষিতে পাপিয়াকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়।
অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যায়, নথি চুরির একটি মামলায় শিক্ষানবিস আইনজীবী রুনা লায়লাকে গত ১৬ জুন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আনা হয়। কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে নেওয়ার পর রুনার দেহ তল্লাশি করে কর্তব্যরত মেট্রন তার কাছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা পান। পরে ওই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য শামীমা নুর পাপিয়া ও তার সহযোগী কয়েদিরা গত ১৯ জুন রুনার ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। এ নিয়ে কারাগারের ভেতরে কেস টেবিল বা সালিশ বৈঠকখানা বসে। সেখানে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বন্দি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, বন্দি এক হাজতিকে নির্যাতনের ঘটনায় তিনজনকে শোকজ করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঘটনাটি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শোকজ করা তিনজন হলেন, ওই কারাগারের জেলার ফারহানা আক্তার, ডেপুটি জেলার জান্নাতুল তায়েবা ও মেট্রন হাবিলদার ফাতেমা। তবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্বামী মফিজুর রহমানসহ পাপিয়া দম্পতিকে আটক করা হয়। সে সময় তাদের কাছে থেকে একাধিক পাসপোর্ট, নগদ অর্থ, জাল নোট উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে রাজধানীর ফার্মগেট ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, বিদেশি মদ, নগদ অর্থ ও ভারতীয় রুপি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি করে দুটি ও বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে সিআইডি। এরমধ্যে অস্ত্র আইনের মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামীকে ২৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।