দেশে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত ৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ঝুঁকিতে ২৬২
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৪:১০ পিএম, ৬ আগস্ট ২০২৩ রবিবার
বিশ্বে বিলুপ্ত-প্রায় একমাত্র পারুল গাছটি রয়েছে বগুড়ায়
প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে নানা প্রজাতির উদ্ভিদ। অযত্ন, অবহেলা, আর বৃক্ষের গুরুত্ব বুঝতে না পারার কারণেই বিলুপ্ত হচ্ছে গাছপালা। দেশীয় আনুমানিক ৫ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে ১ হাজারের ওপর পরিচালিত এক সরকারি গবেষণা বলছে, ইতোমধ্যেই ৭ প্রজাতির উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়েছে। তবে বিপন্ন উদ্ভিদ সংরক্ষণের কথা জানিয়েছেন বন ও পরিবেশ মন্ত্রী।
সবুজ-শ্যামল ও ঋতু বৈচিত্রে ভরপুর বাংলাদেশে রয়েছে বিপুল বৃক্ষ প্রজাতির সমাহার। ধারণা করা হয়, ছোট-বড় লতা-গুল্ম, ওষুধি, ফলদ-বনজ, জ্বালানি কিংবা টিম্বার কাঠ মিলে এক সময় দেশে ছিল প্রায় ৫ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ। তবে সময়ের পরিক্রমায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে কমতে থাকে গাছ।
এ ধারা অব্যাহত থাকায় গাছের প্রজাতির সঠিক সংখ্যা নির্ণয় ও সংরক্ষণে নেয়া হয় সরকারি উদ্যোগ। চলছে গবেষণা। প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার গাছের ওপর গবেষণায় উঠে এসেছে হতাশাজনক তথ্য।
দেশ থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়েছে ৭ প্রজাতির গাছ। বনাঞ্চলে বিলুপ্ত ১ প্রজাতি। এছাড়া অতি বিপন্ন ৫ প্রজাতি, ১২৭ প্রজাতি বিপন্নপ্রায়, ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ২৬২ প্রজাতি, ৬৯ প্রজাতি চলে গেছে ঝুঁকির কাছাকাছি। এছাড়া ২৭১ প্রজাতির অবস্থা ভালো থাকলেও কোন তথ্য নেই ২৫৮ প্রজাতির।
উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলেন, গাছের পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান জানা না থাকলে গবেষণা কার্যক্রম ঠিকভাবে চালানো যায় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জসিম উদ্দিন বলেন, যেগুলো এখন বিপন্ন বা হুমকির মুখে। এর মধ্য দিয়ে জানার সুযোগ তৈরি হলো কেন সেগুলো হুমকিতে পড়ছে।
উপকারি বা ওষুধি গাছের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, দেশীয় গাছ রোপণে অনীহা, বিদেশি গাছ বৃদ্ধিসহ গাছের গুরুত্ব না বোঝায় বিলুপ্ত হয়েছে বেশকিছু প্রজাতি। আর ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে অনেক গাছ।
ঢাবি অধ্যাপক বলেন, হারিয়ে যাওয়ার এক নম্বর কারণ হচ্ছে সেটা মানুষের কাছে বেশি উপকারী ছিল, অথবা অনেক দামী ছিল, অথবা তার পপুলেশন সংখ্যা খুব কম ছিল। মানুষ তার পপুলেশন জানার আগে ওটা কেটে-কুটে বিক্রি করে শেষ করে ফেলেছে।
বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া গাছ ফিরিয়ে আনা সম্ভব, যদি তা একই রকম পরিবেশের অন্য কোন দেশে থেকে থাকে। এছাড়া টিস্যুকালচার, গ্রাফটিং, কলম বা নানা পন্থায়ও বিলুপ্ত গাছ আবার প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনা যায়।
ড. জসিম উদ্দিন বলেন, এখন একটা সুযোগ থাকতে পারে যদি সেটা অন্য কোনো দেশে থাকে। রাষ্ট্র টু রাষ্ট্র যুক্তি আছে, সেই যুক্তির মাধ্যমে আমরা সেটাকে ফেরত আনতে পারি।
বণ ও পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, বিপন্ন ও বিলুপ্ত গাছ ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার।
বন ও পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, “একেবারে খুবই সংকটাপন্ন এবং বিপন্ন যেগুলো তা সংরক্ষণের জন্য আগে উদ্যোগ গ্রহণ করবো। বিপন্ন প্রজাতির বৃক্ষ ধরে রাখার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা তার ব্যবস্থা করবো।”
দেশের আরও অন্যান্য প্রজাতির অবস্থা জানতে গবেষণা চলমান রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। পরের ধাপের গবেষণার জানা যাবে আরও কতো প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে।