১০ নারী শিক্ষিকার যোগদানে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৫:২৬ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বৃহস্পতিবার
প্রতীকী ছবি
আদালতের আদেশ পাওয়ার ৫ দিনের মধ্যে স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বদলিকৃত ১০ নারী শিক্ষিকাকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। তিনি আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বদলিকৃত ১০ নারী শিক্ষিকাসহ ১১ জন শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ না করায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং যোগদানপত্র গ্রহণ করার নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুলও জারি করেছেন আদালত।
দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হওয়া ১০ নারীসহ ১১ শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ না করায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে এবং কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় বদলিকৃত ১১ শিক্ষকের যোগদানপত্র গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা চেয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন ওই ১১ শিক্ষক।
মশিউর রহমান, ফজিলত পারভিন, উম্মে কুলছুম, দিল আফরোজ, আমিনাতুর রহমানসহ মোট ১১ শিক্ষক রিটটি দায়ের করেন। রিটে সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ মোট ৬ জনকে বিবাদী করা হয়।
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, রিটকারীরা দেশের বিভিন্ন বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, জেলা এবং উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। রিটকারীদের মধ্যে একজন পুরুষ শিক্ষক এবং বাকী ১০ জনই নারী। রিটকারী মশিউর রহমানের স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায়, কিন্তু নিয়োগের সময় তিনি সদর দক্ষিণ উপজেলায় নিয়োগ পেয়েছিলেন। অন্য ১০ জনই নারী শিক্ষক, তারা বিভিন্ন বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, জেলা এবং উপজেলায় নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন বদলি বন্ধ থাকায় তারা বদলি হতে পারেননি।
সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা (সংশোধিত) ২০২২’ নামে বদলি নির্দেশিকা জারি করেন। ওই নির্দেশিকায় শিক্ষকদের তাদের স্থায়ী ঠিকানায় এবং নারী শিক্ষকদের তাদের স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় বদলির সুযোগ প্রদান করেছে।
ওই বদলি নির্দেশিকা অনুযায়ী রিটকারী শিক্ষকরা বদলির জন্য আবেদন করলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের আবেদন অনুযায়ী গত মার্চ মাসে সালে তাদের কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করে অফিস আদেশ জারি করেন। বদলির আদেশ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রিটকারী শিক্ষকদের তাদের বদলিকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করার জন্য ছাড়পত্র প্রদান করেন।
পরবর্তী সময়ে শিক্ষকরা তাদের বদলিকৃত প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, কুমিল্লা আদর্শ সদর, কুমিল্লা বরাবরে যোগদান পত্র দাখিল করতে গেলে তিনি তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। পরে রিটকারীরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দু’টি আবেদন দাখিল করলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ১৬ জুলাই অপর একটি চিঠি জারি করে রিটকারী শিক্ষকরাসহ মোট ১৫ জন শিক্ষককে পুনরায় বদলিপূর্বক তাদের যোগদানপত্র গ্রহণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, কুমিল্লা আদর্শ সদর, কুমিল্লাকে নির্দেশ দেন।
কিন্তু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। যার ফলে কোনো বিদ্যালয়ে কর্মরত না থাকায় রিটকারী শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে যায়।
পরে রিটকারী শিক্ষকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আরও কিছু আবেদন দাখিল করেন, কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিট দায়ের করা হয়। শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন।