শেষ সময়ে রাজধানীবাসীর কেনাকাটার ধুম
সালেহীন বাবু
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০১:৩৫ পিএম, ১৫ জুন ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ১২:৫৭ এএম, ১৬ জুন ২০১৮ শনিবার
আজকের দিনটিই বাকি। রাত পোহালেই ঈদ। ঢাকা মোটামোট ফাঁকা, যানজট নেই রাস্তায়। তবে মার্কেটে আজ শুক্রবার ক্রেতার ভিড়ের মাত্রা অতিক্রম করেছে। ফুটপাত থেতে শুরু করে ঝলমলে মার্কেটগুলোতে যেন পুরো রাজধানীবাসীই হাজির হয়েছে ঈদ কেনাকাটার আনন্দে শামিল হতে।
রাজধানীর বিপণি বিতানে আজ ক্রেতার সমাগমে গমগম করছে। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, আজিজ সুপার মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, চাঁদনী চক, রাপা প্লাজা, এআর প্লাজা, ফার্মগেটের সব মার্কেট, ফুটপাথ, গুলিস্থানের পুরো এলাকা, মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, শাহ আলী মার্কেট, খিলক্ষেতের রাজউক ট্রেড সেন্টার, উত্তরার নর্থ টাওয়ার, রাজলক্ষী, মাসকট প্লাজাসহ বিভিন্ন বিপণি বিতানে আজ ক্রেতারা শেষবারের মত ঢু মারছেন।
ভিড় দেখা গেল শাড়ি ও থ্রি পিসের দোকানে। ভারতীয় পোশাকের সাথে পাল্লা দিয়ে দেশি কাপড় ও ডিজাইনারদের তৈরি পোশাকের বুটিক হাউসগুলোতে এখনও তরুণীরা ভিড় করছেন। এছাড়া শিশুদের পোশাক ও খেলনা সামগ্রী, কসমেটিক্স ও গহনার দোকান, জুতোর দোকানেও ভিড় লেগেই আছে।
যমুনা ফিউচার পার্কে এসেছেন জলি তার পরিবারকে নিয়ে। বলেন,আজকে কিছুটা ফুরসুৎ পেলাম। আমরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। সময় না পাবার কারণে মনের মত মার্কেট করতে পারিনি। সারাদিন অফিস করার পর আবার জ্যাম ঠেলে মার্কেটে যাওয়াই কষ্ট। তাই আজকের দিনটি আমার জন্য আদর্শ। যতক্ষণ সময় লাগে কেনাকাটা করব।
আজ রাজধানীর সব মার্কেটেই ক্রেতার অত্যাধিক্য। ক্রেতার সাথে বিক্রেতারাও আজ প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। অনেক জায়গায় দেখা গেল দাম কম নিচ্ছেন অনেক বিক্রেতারা। শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের বিক্রেতারা ন্যায্য দামেই পণ্য ছেড়ে দিচ্ছেন। আহামরি শপের বিক্রেতা জুঁই বলেন,আমরা সালোয়ার,থ্রিপিস যত দাম না নিলেই নয়,সে দামেই ছেড়ে দিচ্ছি। বেশি লাভ করতে চাচ্ছিনা। বড় বড় শপিংমলের পাশাপশি নিউমার্কেট,গাউসিয়ায় অনেক ভিড়। যে বিষয়টি লক্ষ করার মত এখানের বিক্রেতারা আজ অনেকটাই উদার। দাম ধরে না রেখে পণ্য কিভাবে সর্বোচ্চ বিক্রি করা যায় সেদিকেই মনযোগ তাদের।
গাউসিয়ার ব্যবসায়ী আদনান বলেন, আজকে ক্রেতার সাথে দামের কোন তুলনা নেই। একটু লাভেই ছেড়ে দিচ্ছি। অনেকে এ চিন্তা করেই আজকে এসেছে। বিডিআর ৫ নম্বর গেট থেকে নিউমার্কেটে এসেছেন সুমী। বরাবরই ঢাকায় ঈদ করেন। বলেন,কেনাকাটা আগেই সেরেছি। দেখি আজ কোনটা পছন্দ হয় কিনা। পছন্দ হলে কিনে রেখে দিব। ঈদের পর বানাবো।
ফুটপাতেও বেশ ভিড় দেখা গেল। চিরায়িত এক ডায়লগ,বাইছ্যা লন,বাইছ্যা লন। এর মধ্যেই ঠেসাঠেসিতে জামা কিনছেন অনেকে। মৌচাক মার্কেটের সামনের ফুটপাত থেকে মেয়ে রোখসানাকে নিয়ে জামা কিনছেন শেফালি। বলেন, আজকে দেখি ফুটপাতেও দাম বেশি। এবার ঈদে বাড়ি যাইনাই। এখানেই আছি। কি করমু। টেহাপয়সা নাই। মেয়ের লেইগ্যা জামা কিনমু। আনছি ৩০০ টাকা, দাম চায় ৪০০ টাকা।
চলছে ঈদের শেষ কেনাকাটা। ঢাকায় নিন্মবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত সবাই উদযাপন করবে ঈদ। সবার সামর্থ্য এক না হলেও উপলক্ষ কিন্তু একটিই। আর এ উপলক্ষকে পুঁজি করে আনন্দে মাতবেন ঢাকা বাসীসহ পুরো বাংলাদেশ ।