বরিশাল ও সাতক্ষীরায় ‘হামুন’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:২৮ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০২৩ মঙ্গলবার
প্রতীকী ছবি
ধেয়ে আসছে সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ ঘূর্ণিঝড়। বরিশালের উপকূল অঞ্চলে এবং বরিশাল ও সাতক্ষীরা জেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বরিশাল আবাহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা বশির আহমেদ জানান- উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং বর্তমানে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এটি মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ২১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত যে গতিপথ তাতে ধারণা করা হচ্ছে এটি বরিশাল উপর দিয়ে আগামীকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এতে ঝড়ের গতি এবং শক্তি কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কাল বুধবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এটি দুর্বল হয়ে উপকুল অতিক্রম করতে পারে। পাশাপাশি গভীর সাগরে অবস্থানরত নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, বরিশাল, পটুয়াখালী উপকুলীয় অঞ্চলগুলো উপর দিয়ে পূর্ব বা উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বরিশাল অভ্যন্তরীর নৌ-পরিবহন (বিআইডাব্লিউটিএ)- পোর্ট অফিসার মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবেলায় ছোট-বড় সকল প্রকার নৌ-চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছেন। পরবর্তি ঘোষণা না আসা পর্যন্ত সকল প্রকার নৌ চলাচল বন্ধ থাকবে।
বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, এ ব্যপারে আমাদের প্রজেক্ট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করা হয়েছে। সভায় সিন্ধান্ত নেয়া হয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট দপ্ততরগুলোকে সকল দূর্যোগ মোকাবেলায় ব্যবস্থ গ্রহন ও সতর্ক থাকার জন্য উদ্ব্যোগ গ্রহন করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ৫৪১ টি আশ্রায়ণ প্রকল্প প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একাধিক নিয়ন্ত্রক কক্ষ খোলা হয়েছে। এছাড়াও জেলার প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইএনও) বিভিন্নভাবে দিকনির্দেশনা ও সাইক্লোন সেন্টারগুলো প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়েছে।
অন্যদিকে সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবেলায় জেলায় ৩ শত সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেছেন- ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবেলায় সাতক্ষীরায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ৩শত সাইক্লোন শেল্টার। প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। আমাদের লক্ষ্য থাকবে কিভাবে ক্ষয়-ক্ষতি কমানো যায়। সব সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুতি রাখা হবে। ট্রলারগুলো রিকুইজেশন করা হবে। তারা মানুষের পারাপার করবে।
জেলা প্রশাসক জানান, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায় ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে। শুকনো খাবার ও ওষুধ প্রস্তত রাখা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, প্রস্তুত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড।
আবহাওয়া বিষয়ক কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, বর্তমানে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের যে গতিপথ আছে তা পরিবর্তন না হলে আপাতত সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা নেই। তবে ঝড়ের প্রভাবে দমকা বাতাস, ভারী বৃষ্টি ও নদীতে পানির উচ্চতা বাড়তে পারে।