কারাগারে হিমুর প্রেমিক
বিনোদন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০২৩ রবিবার
সংগৃহীত ছবি
অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর ‘আত্মহত্যার’ ঘটনায় তার প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিয়া র্যাবকে জানিয়েছেন, তার সামনেই হিমু গলায় ফাঁস নেন।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এদিকে হিমুর আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার (৪ নভেম্বর) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) সাব্বির হোসেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) রাতে এ ঘটনায় হিমুর খালা নাহিদ আক্তার রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় নাহিদ আক্তার অভিযোগ করেন, জিয়াউদ্দিন রুফি (৩৬) হিমুর বয়ফ্রেন্ড। ছয় মাস আগে থেকে তিনি নিয়মিত হিমুর বাসায় যাতায়াত এবং মাঝে মধ্যে রাত্রিযাপন করতেন। ১ নভেম্বর রুফির মোবাইল নম্বর ও ভিগো লাইভ আইডি ব্লক করে দেন হিমু। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝামেলা হয়। ২ নভেম্বর বিকেল ৩টার দিকে রুফি বাসায় এসে কলিং বেল দেন। মিহির দরজা খুলে দিলে তিনি বাসার ভেতরে যান। মিহির তার রুমে চলে যান। ৫টার দিকে রুফি মিহিরের রুমে গিয়ে চিৎকার করতে করতে বলেন, হিমু আত্মহত্যা করেছে।
তখন মিহির তাকে জিজ্ঞেস করে, আপনি তো রুমেই ছিলেন। তখন তিনি বাথরুমে ছিলেন বলে জানান। এসময় হিমু রুমের সিলিংফ্যানের হুকে রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মিহির সঙ্গে সঙ্গে হিমুর রুমে ঢুকে তাকে গলায় রশি লাগিয়ে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পান। রুমে থাকা দুটি কাঁচের গ্লাস ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে তারা দুজন হিমুকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তখন রুফি হিমুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন দুটি নিয়ে কৌশলে নিয়ে চলে যান।
তার আগে র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন জানান, হিমুর বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল জিয়ার। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া ও বাড়বিতণ্ডা হতো। অবশেষে বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) নিজেদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হিমু বলেছিলেন আত্মহত্যা করবেন। তবে জিয়া বিষয়টি পাত্তা দেননি। কারণ হিমু আগেও ৩/৪ বার আত্মহত্যা করবেন বলে জানালেও পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যা করেননি। কিন্তু বৃহস্পতিবার তিনি সত্যি সত্যি জিয়ার সামনেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় জিয়া হিমুর রুমেই খাটে বসা ছিলেন বলে জানিয়েছেন। তিনি হিমুকে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এসময় জিয়া পাশের রুমে থাকা হিমুর মেকআপ আর্টিস্ট মিহিরকে ডেকে আনেন। পরবর্তী সময়ে মিহির রান্নাঘর থেকে একটি বটি এনে রশি কেটে হিমুকে নিচে নামান। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
প্রসঙ্গত, হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় জিয়াকে একমাত্র আসামি করে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর বংশাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।