চলুন দেখে আসি জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর
শাহিন মিয়া
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ১২:৫৫ এএম, ২৬ জুন ২০১৮ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৭:৪৪ পিএম, ২৮ জুন ২০১৮ বৃহস্পতিবার
শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ও তার পরিবারের ব্যবহৃত জিনিসপত্র সংরক্ষণ করতেই এক সময় এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো। কিন্তু প্রকৃত অর্থে এখানে প্রদর্শিত আলোকচিত্র এবং ডকুমেন্টসমূহ শুধু সন্তানের জন্য এক মায়ের বুকচেরা আর্তনাদেরই প্রতিচ্ছবি নয়। বরং প্রতিফলিত করছে একাত্তরের পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে মেঘাচ্ছন্ন আকাশে সূর্যালোকের মতো এই মহৎ নারীর অবস্থান। যা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস অনুধাবনে সহায়তা করবে।
রাজধানী ঢাকার পুরনো এলিফ্যান্ট রোডের শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মরণীতে অবস্থিত এই জাদুঘর। জাহানারা ইমাম এই বাড়িতেই স্বপরিবারে বসবাস করতেন।
মুক্তিযুদ্ধে তিনি হারিয়েছিলেন তার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান রুমীকে। বিজয়ের মাত্র তিন দিন আগে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নির্যাতন ও পুত্রশোকে স্বামী শরীফ ইমামকেও হারান তিনি। এ মহীয়সী নারীর অবদান ও ভূমিকাকে স্মরণীয় করে রাখতেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর। অকুতোভয় এই নারী শত বাধা পেরিয়েও গণ-আদালতকে জনমানুষের মনের গভীরে প্রথিত করে দিয়েছিলেন।
তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং শহীদ রুমি ও শহীদ জননী জাহানারা ইমাম সম্পর্কে জানার জন্য জাদুঘরে শহীদ জননী এবং তার পরিবারের অন্য সদস্যদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, আসবাবপত্র, আলোকচিত্র, ১৯৭১ এবং তৎপরবর্তী বিভিন্ন ডকুমেন্ট, দিয়ে সাজানো হয়েছে।
ঢুকেই বাঁ দিকে চোখে পড়বে এক আলমারি, যাতে ডিনার সেট, চায়ের সরঞ্জাম সাজানো। যেন এসব দিয়ে শহীদজননী অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। এরপর তিন প্রজন্মের তিনজনের ছবি। অর্থাৎ দাদা, বাবা ও নাতি। তাঁদের জন্ম ও মৃত্যু সালের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে, দাদার মৃত্যু হয়েছে সবার পরে, স্বাধীন দেশে। বাবার মৃত্যু হয়েছে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়টিতে। আর শাফি ইমাম রুমীর শুধু জন্মের বছরটাই লেখা রয়েছে। কারণ, একাত্তরে রুমীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর কবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, সেটা জানা যায়নি কখনো।
শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘরের প্রবেশমূল্য, খোলা ও সাপ্তাহিক বন্ধের দিন
প্রতি শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য এই জাদুঘর খোলা থাকে। প্রবেশ মূল্য নেই। শীতকালে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে।