ঢাকা, সোমবার ২৫, নভেম্বর ২০২৪ ৪:৪৩:৩৭ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

বিশ্বের কোনো দেশেই সমানাধিকার পান না নারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:৪২ পিএম, ৮ মার্চ ২০২৪ শুক্রবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

জাতিসংঘের সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, আধুনিক যুগে এসেও বিশ্বের কোনো দেশেই কর্মজীবী নারীদের সমঅধিকার নিশ্চিত হয়নি। এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকাটি।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, গত ৪ মার্চ প্রকাশিত হয়েছে জাতিসংঘের নারী, ব্যবসা ও আইন সম্পর্কিত প্রতিবেদনের দশম সংস্করণ। এতে বলা হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে কেবল নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করা গেলেই বৈশ্বিক জিডিপি ২০ শতাংশেরও বেশি বাড়ানো সম্ভব।
বৈশ্বিক সংস্থাটির এবারের প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো ১৯০টি দেশের শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণের ওপর শিশুর যত্ন এবং নিরাপত্তা নীতির প্রভাব বিবেচনা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, কর্মক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় নারীদের আইনি সুরক্ষা পাওয়ার গড় মাত্র ৬৪ শতাংশ। উল্লেখিত দুটি কারণ বিবেচনার আগে এর হার ৭৭ শতাংশ বলে মনে করা হতো।

প্রতিবেদনের লেখক টি ট্রাম্বিক বলেন, শিশুর যত্ন এবং নিরাপত্তার সমস্যা বিশেষ করে নারীদের কাজ করার সক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। সহিংসতা শারীরিকভাবে তাদের কাজে যেতে বাধা দিতে পারে, শিশুযত্নের খরচও নারীদের কাজের পথে অন্তরায় হতে পারে। জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো নারী অধিকার সম্পর্কিত আইন এবং সেটি বাস্তবায়নের জন্য প্রণীত নীতিমালার মধ্যে ব্যবধানও মূল্যায়ন করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য যেসব ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল, গড়ে তার ৪০ শতাংশও নেয়নি দেশগুলো।

উল্লেখ্য, বিশ্বের ৯৫টি দেশ নারী-পুরুষ সমান বেতনের আইন প্রণয়ন করলেও সেটির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিয়েছে মাত্র ৩৫টি দেশ। বিশ্বব্যাপী পুরুষদের এক মার্কিন ডলার বেতনের বিপরীতে বর্তমানে নারীরা পাচ্ছেন মাত্র ৭৭ সেন্ট। কর্মজীবী নারীদের ওপর শিশুযত্নের প্রভাব জাতিসংঘের গবেষণা বলছে, শিশুযত্নের সমস্যা দূর করা গেলে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ অবিলম্বে এক শতাংশ বাড়তে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে অর্ধেকেরও কম দেশে অল্প বয়সী শিশুদের পিতা-মাতার জন্য আর্থিক সহায়তা বা ট্যাক্স ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এক-তৃতীয়াংশেরও কম দেশে রয়েছে শিশুযত্নের নির্ধারিত মানদণ্ড, যা তাদের পিতা-মাতাকে সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করতে পারে।

অনেক ক্ষেত্রে, শিশুর দেখভাল করার জন্য কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকলে ওই সময়ের জন্য নারীরা কোনো পেনশন সুবিধা পান না। এ ধরনের নিয়ম রয়েছে অন্তত ৮১টি দেশে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের ১৫১টি দেশে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে আইন রয়েছে। কিন্তু উন্মুক্ত স্থানে বা গণপরিবহনে দুর্ব্যবহার আটকানোর মতো আইন রয়েছে মাত্র ৪০টি দেশে। অর্থাৎ এসব দেশের নারীরা কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পথে সুরক্ষিত নন।

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইন্দ্রমিট গিল বলেন, সারা বিশ্বে বৈষম্যমূলক আইন ও কর্মকাণ্ড নারী-পুরুষ সমঅধিকারের ভিত্তিতে কাজ করতে বা ব্যবসা শুরুর অন্তরায়। এ ব্যবধান দূর করতে পারলে বিশ্বব্যাপী মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ২০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে। পাশাপাশি পরবর্তী দশকে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হারও দ্বিগুণ করতে পারে। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের গতি ধীর হয়ে গেছে।