মেয়েকে নিয়ে দেশত্যাগ, জাপানি মায়ের বিরুদ্ধে শুনানি আজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:০৬ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২৪ রবিবার
সংগৃহীত ছবি
আদালতের আদেশ অমান্য করে বড় মেয়ে জেসমিন মালিকা শরীফকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন জাপানি মা ডা. এরিকো নাকানো। এ নিয়ে এরিকোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফ। ওই আবেদনের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে আজ।
রোববার (২১ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
এর আগে ইমরান শরীফের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১১ জুলাই জাপানি আইনানুসারে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন জাপানি নাগরিক ডা. এরিকো নাকানো ও বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক শরীফ ইমরান। বিয়ের পর টোকিওতে বসবাস শুরু করেন তারা। সেখানে তাদের ১২ বছরের সংসারে তিন সন্তানের জন্ম হয়। এরপর বনিবনা না হওয়ায় দুই মেয়েকে নিয়ে দেশে চলে আসেন ইমরান শরীফ। পরবর্তীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশে এসে রিট করেন এরিকো। তখন সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি পারিবারিক আদালতে নিষ্পত্তি করতে বলেন।
২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান শিশুদের জিম্মা চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ করে রায় দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে পরদিন ইমরান শরীফ আপিল করেন জেলা জজ আদালতে। ১২ জুলাই জজ আদালতেও ইমরান শরীফের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তারপর তিনি হাইকোর্টে রিভিশন করেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার সে রিভিশন আংশিক মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।
আদেশে উচ্চ আদালত বলেন, জেসমিন মালিকা শরীফের হেফাজত মায়ের পক্ষে নির্ধারণ করা হবে, তবে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি বিবেচনা করে কন্যা লায়লা লিনা শরীফের হেফাজত প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বাবার কাছে থাকবে।
রায়টি সম্প্রতি প্রকাশ করার পর দুই পক্ষই (বাবা ও মা) পৃথক পৃথক দুটি আপিল আবেদন করেন। ইমরান শরীফ বড় মেয়েকে তার কাছে ফেরাতে চেয়ে এবং নাকানো এরিকো মেজো মেয়েকে তার কাছে নিতে চেয়ে লিভ টু আপিল আবেদন করেন।
এর মধ্যে ইমরানের আবেদনে একটি নিষেধাজ্ঞার আবেদন ছিল। যেখানে বলা হয়েছে, মেয়েকে যেন দেশের বাইরে না নেওয়া হয়। ওই আবেদনের ওপর ৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত শুনানির জন্য গত ১৫ এপ্রিল দিন ধার্য করে স্থিতাবস্থার আদেশ দেন। কিন্তু এর মধ্যেই বড় মেয়েকে নিয়ে মা নাকানো এরিকো জাপানে চলে গেছেন।
ইমরান শরীফের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, সন্তানদের দেশের বাইরে যেতে আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। তা সত্ত্বেও বড় সন্তানকে নিয়ে এরিকো চলে গেছেন। এ কারণে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে। আজ (২১ এপ্রিল) আদালত অবমাননার আবেদন ও লিভ টু আপিলের ওপর করা পৃথক দুটি আবেদনও শুনানি হবে।
তবে এরিকোর আইনজীবী মো. শিশির মনির জানান, গত ৯ এপ্রিল দুপুর ১টায় আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। এ আদেশ হওয়ার পূর্বেই বেলা ১১টার দিকে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে তারা দেশত্যাগ করেন। এছাড়া হাইকোর্টের রায়ের কোথাও বলা নেই যে, বাবা ও মা সন্তানদের নিয়ে দেশত্যাগ করতে পারবেন না।