২৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেশে
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১০:২৮ এএম, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ মঙ্গলবার
ফাইল ছবি।
দেশে এবারের মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সোমবার। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গায় এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে, ১৯৯৫ সালের পহেলা মে দেশটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই বছরের ২৫ এপ্রিল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪৩ ডিগ্রি।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ওই দুটি শীর্ষ তাপমাত্রাও পাওয়া গিয়েছিল চুয়াডাঙ্গাতেই।
১৯৮৯ সালেও একবার ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়েছিল জেলাটির তাপমাত্রা। ওই বছরের চৌঠা মে তাপমাত্রা ৪৩.৩ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়, বলছিলেন মি. মল্লিক।
এদিকে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদরাসা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
আদালতের নির্দেশনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের আলাদা ঘোষণা আসে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর তরফ থেকে।
ফের বন্ধ স্কুল কলেজ:
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, চলমান তীব্র তাপদাহের কারণে শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আগামী ৩০শে এপ্রিল থেকে দোসরা মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি শিশু কল্যাণ ট্রাস্ট পরিচালিত শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারসমূহকেও এই নির্দেশনার অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
আর, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কাল বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এছাড়া, ঢাকা বিভাগের ঢাকা, টাঙ্গাইলসহ সাত জেলা, রংপুর বিভাগের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীর স্কুল-কলেজের জন্যও এই নির্দেশনা প্রযোজ্য।
এর আগে, প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে ছুটি ছিল ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত। ২১ এপ্রিল থেকে স্কুল-কলেজ খোলার কথা থাকলেও ছুটি আরো এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়।
কারণ, টানা তাপপ্রবাহে দেশের কোনো কোনো স্থানে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
গতকাল ২৮ এপ্রিল শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলেও আজ সোমবার পাঁচ জেলার হাইস্কুল-কলেজ ছুটি দেয়া হয়েছে। অবশ্য খোলা রাখা হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়।
তবে, সারাদেশের একই রকম সিদ্ধান্ত গ্রহণের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের একজন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ।
লেখক ও গবেষক গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, “ঢাকাকে দিয়ে সারা দেশকে বিচার করা হচ্ছে। সব জায়গায় আবহাওয়া পরিস্থিতি একই রকম নয়।”
'হিট অ্যালার্ট' চলছে:
সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় প্রকাশিত আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিন থেকে জানা যাচ্ছে, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, পাবনা ও রাজশাহী জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আর তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ঢাকা বিভাগের ওপর দিয়ে।
এছাড়া আরও অনেকগুলো জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের যে তাপপ্রবাহ বইছে তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এ কারণে, গতকাল বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর নতুন করে আরো তিনদিনের জন্য ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে। সংস্থাটি জানায়, এই তিনদিনে জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে মানুষের মধ্যে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
মঙ্গলবারও বিরাজমান এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে এরপর বৃষ্টিপাত ভালো করে হলে তাপমাত্রা কিছুটা কমতেও পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূচক অনুযায়ী, ৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৩৯.৯ মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১.৯ তীব্র তাপপ্রবাহের অন্তর্ভুক্ত। তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে গেলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে গণ্য করা হয়।