ঢাকা, মঙ্গলবার ১৭, সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২:১৬:৪৯ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

নিম্নচাপ এগোচ্ছে বাংলাদেশের দিকে, কাল রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৬:৪০ পিএম, ২৪ মে ২০২৪ শুক্রবার

`ঘূর্ণিঝড়ের প্রাথমিক ধাপই হচ্ছে সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হওয়া`

`ঘূর্ণিঝড়ের প্রাথমিক ধাপই হচ্ছে সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হওয়া`

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ইতোমধ্যেই নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সেটির অভিমুখ এখন বাংলাদেশের দিকে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, আরো শক্তি অর্জন করে আজ রাতে এটির গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বর্তমানে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং এর কাছাকাছি পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরের অংশ জুড়ে অবস্থান নিম্নচাপটির। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

বাংলাদেশ উপকূলের সুন্দরবন ও খেপুপাড়ার দিকে এর গতিপথ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান আজ শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, "বর্তমানে যেই অবস্থান দেখাচ্ছে তাতে কেন্দ্রটিই বাংলাদেশের ওপর দিয়ে অতিক্রম করার সম্ভাবনা আছে।"

নিম্নচাপটি শুক্রবার দুপুরে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দর দু'টি থেকে যথাক্রমে ৭৩০ এবং ৭৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

এছাড়া, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮০৫ কিলোমিটার এবং কক্সবাজার থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে ছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, 'মনসুন' (বর্ষা মৌসুম) শুরুর ঠিক আগে আগে আর্দ্রতা অনেক বেশি থাকে। ফলে এই সময় কোনো ঘূর্ণিঝড় দেখা দিলে তার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক বেশি হয়।

ফলে, নিম্নচাপ যদি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, বায়ুতাড়িত জ্বলোচ্ছাস, দমকা ও ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে বলে জানান আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক।

আর আজিজুর রহমান বলেন, এটিই যতই অগ্রসর হবে ততই ভারী বর্ষণ দেখা দেবে।

এদিকে আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় তিনটায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।

এতে বলা হয়েছে, নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া আকারে ৫০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকবর্তী এলাকায় সাগর মাঝারি ধরনের উত্তাল রয়েছে।

সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য সতর্কতাও জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

জানানো হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে এক নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে জেলেদের মাছ ধরতে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরেও জেলেদের বিচরণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

"উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।"

অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, শুক্রবার খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টিপাত হলেও দেশের অন্যান্য জায়গায় আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাছাড়া, নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের ১৪টি জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে বলেও জানানো হয়েছে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেলেও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে অস্বস্তি অব্যাহত থাকতে পারে।

তবে, শনিবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়বে বলে জানানো হয়েছে পূর্বাভাসে।

আটটি বিভাগেই অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এতে বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায়ই অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

শনিবার সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে অস্বস্তি অব্যাহত থাকতে পারে।

রোববার থেকে পরবর্তী পাঁচ দিনের বৃষ্টিপাত বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।