ঢাকা, মঙ্গলবার ১৭, সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২:০৪:১৫ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

কোটা সুবিধা কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:২৬ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২৪ রবিবার

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি: ফোকাস বাংলা  

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা  

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় কঠোর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চীন সফর নিয়ে আজ রবিবার বিকেলে গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ সমালোচনা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে তাদের এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে না তো কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে? এটি দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? তারা দেশ স্বাধীন করার জন্য জীবনপণ লড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায় কীভাবে? মুক্তিযুদ্ধ তাদের এখন ভালো লাগে না।’

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ২০১৮ সালের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘২০১৮ সালে তারা আন্দোলন করল। নানা ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছিল, আক্রমণ করা হচ্ছিল, আঘাত করা হচ্ছিল, ঘরে বসে মিথ্যাচার, অপপ্রচার করা হচ্ছিল। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে বলেই ফেলি, কোটাই বাদ দিলাম। কিন্তু তারপর কী ঘটল?’

কোটা তুলে দেওয়ার পর নারীদের সরকারি চাকরি পাওয়ার হার কমেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার ৪৬তম বিসিএসেই দেখুন। ফরেন সার্ভিসে (বিবিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার) মাত্র দুজন মেয়ে চান্স পেয়েছে, পুলিশ সার্ভিসে (বিসিএস পুলিশ ক্যাডার) মাত্র চারজন। অথচ নারী অধিকারের জন্য আমরা সবসময় কাজ করে এসেছি। জাতির পিতা নির্যাতিত নারীসহ মেয়েদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা রেখেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ। আমি যখন সরকারে আসি, দেখি কোটা থেকে সব পদ পূর্ণ হয় না। আমি বলে দিয়েছিলাম, কোটায় পদ পূরণ না হলে সেখানে মেধাতালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। সেটাই শুরু করে দিয়েছিলাম। তারপরও তারা আন্দোলন শুরু করল। আমিও কোটা বন্ধ করে দিলাম। তাতে ফলাফল কী?’

অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সুবিধার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের সব এলাকা তো সমানভাবে উন্নত না। অনেক অনগ্রসর এলাকা আছে, অনগ্রসর সম্প্রদায় আছে। সেসব এলাকার মানুষের অধিকার থাকবে না? সেই বিবেচনা করেই তো জেলা কোটা রাখা হয়েছিল। আজ বিভিন্ন কোটা বন্ধ করে দেওয়ার পর যদি হিসাব নেন, একটি বিসিএসে ২৩ জেলায় কেউ পুলিশের চাকরি পায়নি, প্রশাসন বা ভালো কোথাও কারও চাকরি হয়নি। তাহলে লাভটা কী হলো?’

কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্তরা আদালত নয়, নির্বাহী বিভাগের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেই সমাধান চান—এ বিষয়টিও জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘কোটা নিয়ে মামলা হলো, আদালত থেকে রায় হলো। সেখানে তো নির্বাহী বিভাগের কিছু করার নেই। আদালতে গেলে সমাধান আদালত থেকেই আসতে হবে। যারা আন্দোলন করছে, তারা আইন মানবে না, আদালত মানবে না, সংবিধান কী সেটা চেনে না। তারা কার্যনির্বাহী বিধিমালা মানবে না, সরকার কীভাবে চলে সেই ধারণাই নেই। তাদের সেই জ্ঞানটা নেই। কিন্তু তারাই তো ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্ব দেবে। তাই তাদের ধারণাগুলো দরকার। সংবিধান কী বলে, সেটা তাদের জানা দরকার। একটি রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হয়, সেটাও তাদের জানা দরকার।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোটার বিষয়টি যখন আদালতে চলে গেল, আদালত থেকেই সমাধান আসবে। সত্যি কথা বলতে বিষয়টি যখন আদালতে চলে গেছে, সেই রায়ের বিরুদ্ধে আমার দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। সংবিধান, সংসদ, কার্যপ্রণালীবিধি কোনো কিছু দিয়েই আমার এর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই। এটা বাস্তবতা, এই বাস্তবতা মানতে হবে। না মানলে কিছু করার নেই। আন্দোলন করছে, করতেই থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে, কিছু বলার নেই। কিন্তু অন্য কিছু যদি করে, পুলিশের ওপর যদি হামলা করে, যদি গাড়ি ভাঙচুর করে, তাহলে আইন আপন গতিতে চলবে। আমাদের কিছু করার থাকবে না।’