ঢাকা, বৃহস্পতিবার ৩১, অক্টোবর ২০২৪ ৫:৩৪:২৪ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ঘরে ঘরে জ্বর, যা করবেন

স্বাস্থ্য ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১০ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২৪ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা প্রভাব ফেলছে শরীরে। ঘরে ঘরে এখন ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। মূলত মরসুম বদলের এসময়ে ভাইরাসের হানায় সর্দি-কাশি আর জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার হার বাড়ে। বিশেষত শিশু, বয়স্ক এবং যেসব ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তাদেরই বেশি সমস্যা হয়। 

দিন কয়েক ওষুধ খেলে জ্বর কমলেও সপ্তাহখানেক ধরে থেকে যায় হাতে-পায়ের যন্ত্রণা, চোখে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট। দুর্বল হয়ে পড়ছে শরীরও। 

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বললেন, জ্বর ১০০ এর আশেপাশেই ঘোরাফেরা করছে। কারো ঘুরেফিরে জ্বর আসছে আবার কারো দেহের তাপমাত্রা খুব একটা বাড়ছে না। কিন্তু সর্দি, নাক দিয়ে অনবরত পানি পড়া, শুকনো কাশি ভোগাচ্ছে বেশি। 

চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গু, ইনফ্লুয়েঞ্জার পাশাপাশি এসময় অ্যাডিনোভাইরাস, রেসপিরেটারি সিনসেশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি)-এর দাপট বেড়েছে। হালকা কোভিডের উপসর্গও দেখা দিচ্ছে। তবে তা মারাত্মক নয়। 

কেন বাড়ছে ভাইরাসের দাপট?

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে, এখন আবহাওয়ার কোনো ঠিকঠিকানাই নেই। আজ গরম, তো কাল ঝমঝম করে বৃষ্টি। কয়েক পশলা বৃষ্টির পর আবার প্যাচপ্যাচে গরম ফিরে আসছে। এই বদল এত ঘন ঘন হচ্ছে যে জীবাণুরাও পরিবর্তিত আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে। দ্রুত বংশবিস্তার করছে। আরও বেশি সংক্রামক ও ছোঁয়াচে হয়ে উঠছে। সর্দি-কাশির অ্যাডিনোভাইরাস, রাইনো ভাইরাস করোনার চেয়েও বেশি ছোঁয়াচে হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস তো আছেই

কী কী লক্ষণ দেখা দিচ্ছে?

প্রথমেই জ্বর, সর্দি-কাশি, নাক বন্ধ, গলা ব্যথার মতো লক্ষণগুলো দেখা দিচ্ছে। ক্রমাগত নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা নিয়েও ভুগছেন অনেকে। 


কারো কারো ক্ষেত্রে দ্রুত শ্বাস নেওয়া, শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় বুক ধড়ফড় করা, নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এমন সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। গুরুতরভাবে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হলে গলা ও ঘাড়ের চার দিকের গ্ল্যান্ড ফুলে যেতে পারে। সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। 

রাইনোভাইরাস নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। এর সংক্রমণ হলে গলা ব্যথা, ঢোঁক গিলতে না পারা, শুকনো কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়। 

অধিকাংশ রোগীর সপ্তাহখানেক কাশি থাকে। কম বয়সিদের ক্ষেত্রে কাশি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা কম হলেও বয়স্কদের ঝুঁকি বেশি। যাদের আগে থেকেই হাঁপানি, ডায়াবেটিস বা ফুসফুসে সমস্যা আছে তাদের বিশেষ সতর্ক হতে হবে। শ্বাসকষ্ট বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনহেলার নেওয়া যেতে পারে।

এর পাশাপাশি মারাত্মক গায়ে, হাত-পায়ে মারাত্মক ব্যথা, শরীর অতিরিক্ত দুর্বল লাগার মতো সমস্যাগুলোও দেখা দিচ্ছে। অনেকের পেটে গোলমাল দেখা দিচ্ছে। ঘন ঘন বমি, ডায়েরিয়া, খিদে কমে যাওয়া, মুখে অরুচি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।


সতর্কতায় করণীয় 

চিকিৎসকদের মতে, থুতু-লালার মাধ্যমে ছড়াতে পারে এসব ভাইরাস। তাই জ্বর হলে মাস্ক পরা খুব জরুরি। বারবার হাত ধুতে হবে। বিশেষ করে বাইরে থেকে এলে হাত ভালো করে ধুয়ে, স্যানিটাইজ করে তবেই ঘরে ঢুকুন।

বেশি ভিড় বা জমায়েতে এড়িয়ে চলুন। বিয়েবাড়ি, সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলে চেষ্টা করুন মাস্ক পরার এবং সঙ্গে স্যানিটাইজার রাখার। জ্বর হলে প্যারাসিটামল আর বেশি করে পানি খাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তবে জ্বর তিন দিনের বেশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টেস্ট করিয়ে নিতে হবে।  খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ নজর দিতে হবে। রাস্তার খাবার ভুলেও খাওয়া যাবে না। বাড়িতে কম তেলে রান্না খাবার খেতে হবে।