ঢাকা, রবিবার ২৪, নভেম্বর ২০২৪ ৮:১২:১১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় 

খেলাধুলা ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৮:২১ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২৪ রবিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট জিতলো বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের পঞ্চম দিনে আজ বাংলাদেশ ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। টেস্ট ইতিহাসে এই প্রথম ১০ উইকেটে ম্যাচ জিতলো বাংলাদেশ। এছাড়াও টেস্ট ফরম্যাটে প্রথমবারের মত পাকিস্তানকে হারালো বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের ১৩ বারের মোকাবেলা ১২টি হার ও ১টি ম্যাচ ড্র করেছিলো টাইগাররা। এখন পর্যন্ত নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে ১৪৩ টেস্টে ২০তম জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।
দুই স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের ঘুর্ণিতে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। ফলে ম্যাচ জিততে মাত্র ৩০ রান টার্গেট পায় বাংলাদেশ। মিরাজ ৪টি ও সাকিব ৩টি উইকেট নেন। ৩০ রানের সহজ টার্গেট সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলেই স্পর্শ করে ফেলে টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের করা ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানের জবাবে মুশফিকুর রহিমের অসাধারন সেঞ্চুরিতে ৫৬৫ রানের বড় স্কোর গড়েছিলো বাংলাদেশ। মুশফিক ১৯১ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের ম্যাচ সেরা হয়েছেন মুশফিক।
প্রথম ইনিংসে ১১৭ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে চতুর্থ দিন শেষে ১ উইকেটে ২৩ রান করেছিলো পাকিস্তান। ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৯৪ রানে পিছিয়ে ছিলো তারা।
আজ পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশের পেসার হাসান মাহমুদের বলে উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে ১৪ রানে সাজঘরে ফিরেন পাকিস্তানের অধিনায়ক শান মাসুদ। মাসুদের বিদায়ে ক্রিজে এসে পেসার শরিফুল ইসলামের ডেলিভারিতে প্রথম বলেই লিটনকে ক্যাচ দিয়ে জীবন পান বাবর আজম। জীবন পেয়ে ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিকের সাথে ৩৮ রান যোগ করেন বাবর। দলীয় ৬৬ রানে বাবরকে ২২ রানে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন টাইগার পেসার নাহিদ রানা। বাবর ফেরার ৮ বল পর সাকিবের বলে স্টাম্পড আউট হন প্রথম ইনিংসে ১৪১ রান করা সৌদ শাকিল। এই ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি শাকিল। ৬৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান।
পঞ্চম উইকেটে ৩৭ রানের জুটিতে পাকিস্তানকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন শফিক ও উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান। উইকেটে সেট হয়ে সাকিবের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাদমান ইসলামকে ক্যাচ দেন ৩৭ রান করা শফিক। সাকিবের ব্রেক-থ্রুর পর পাকিস্তানের বিপদ বাড়ান আরেক স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। স্লিপে সাদমানকে ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক মারেন আঘা সালমান। এতে ১০৫ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে পাকিস্তান।
মধ্যাহ্ন বিরতির পরও পাকিস্তানের উপর আধিপত্য ধরে রাখে বাংলাদেশের বোলাররা। ২ রানে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। এরপর রিজওয়ানের সাথে দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করেন নতুন ব্যাটার নাসিম শাহ। তাদের ৭ রানের জুটিতে লিড নেয় পাকিস্তান। ২১ বল খেলার পর সাকিবের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে মুশফিককে ক্যাচ দেন ৩ রান করা নাসিম। ১১৮ রানে অষ্টম উইকেট পতনের পর দ্রুত রান তুলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১০ম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন বাংলাদেশের পথের কাঁটা রিজওয়ান। তবে অর্ধশতকের পর মিরাজের বলে বোল্ড হন রিজওয়ান। ৬টি চারে ৮০ বলে ৫১ রান করেন রিজওয়ান। ১৪২ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে রিজওয়ান ফেরার পর ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই সর্বনি¤œ স্কোর পাকিস্তানের। ২০০৩ সালে মুলতানে ১৭৫ রান ছিলো এতদিন পর্যন্ত সর্বনি¤œ।
বল হাতে মিরাজ ২১ রানে ৪টি, সাকিব ৪৪ রানে ৩টি উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ৩০ রানের সহজ টার্গেট স্পর্শ করতে ৩৯ বল খেলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম। সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলে স্পিনার সালমানকে চার মেরে বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক জয়ের স্বাদ দেন জাকির। ৩টি চারে অপরাজিত ১৫ রান করেন জাকির। ১টি বাউন্ডারিতে ৯ রান করেন প্রথম ইনিংসে ৯৩ রান করা সাদমান।  
এই জয়ে বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে দুই ধাপ এগিয়ে ষষ্ঠ স্থানে উঠলো বাংলাদেশ। ৫ ম্যাচে ২ জয় ও ৩ হারে ৪০ শতাংশ পয়েন্ট অর্জিত হয়েছে টাইগারদের। টেস্ট হেরে এক ধাপ পিছিয়ে অষ্টম স্থানে নেমে গেল পাকিস্তান। ৬ ম্যাচে ২ জয় ও ৪ হারে ৩০.৫৬ শতাংশ পয়েন্টে আছে পাকিস্তান। টেবিলের শীর্ষে আছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া।
আগামী ৩০ আগস্ট রাওয়ালপিন্ডিতেই সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান প্রথম ইনিংস : ৪৪৮/৬ ডি, ১১৩ ওভার (রিজওয়ান ১৭১*, শাকিল ১৪১, হাসান ২/৭০, শরিফুল ২/৭৭)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৫৬৫/১০, ১৬৭.৩ ওভার (মুশফিক ১৯১, সাদমান ৯৩, মিরাজ ৭৭, নাসিম ৩/৯৩)।
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ১৪৬/১০, ৫৫.৫ ওভার (রিজওয়ান ৫১, শফিক ৩৭, মিরাজ ৪/২১, সাকিব ৩/৪৪)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৩০/০, ৬.৩ ওভার (জাকির ১৫*, সাদমান ৯*)।
ফল : বাংলাদেশ ১০ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা : মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)
সিরিজ : দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ