মমতার পদত্যাগ দাবি করলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৫:৪১ পিএম, ১৩ অক্টোবর ২০২৪ রবিবার
শ্রীলেখা মিত্র (বাঁয়ে) ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আর জি কর মেডিকেল কলেজের শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় এখনও পুরো রাজ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এদিকে ওই চিকিৎসকের বাবা-মায়ের সাথে দেখা করেছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। গতকাল শনিবার রাতে নাটাগড়ে পরিবার মঞ্চে এসে তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি।
পরে চিকিৎসকের ঘরে গিয়ে বসেন শ্রীলেখা। ওই চিকিৎসক যেখানে ঘুমাতেন সেই ঘর ঘুরে দেখেন, তার স্টেথোস্কোপ দেখেন, ওয়াশরুম ব্যবহার করেন।
শ্রীলেখা বলেন, আমরা সবাই বিচার চাই। বাবা-মায়ের কষ্ট আমরা বুঝবো না। ওদের যে অনুভূতি সেটা আমার আপনার হচ্ছে না। কারণ তাদের সন্তান গেছে আমার আপনার সন্তান যায়নি। কষ্ট করে ওই মেয়েটি বাড়িটি বানিয়েছে, গাড়ি কিনেছে। তবে ওই বাড়িতে গিয়ে আমার অদ্ভুত একটা অনুভূতি হলো। সেটা মুখে বলে বোঝানো যাবে না।
তার প্রশ্ন অভয়ার (মৃত চিকিৎসকের ছদ্মনাম) বাড়ির সামনে এত পুলিশ মোতায়েন কেন? আমরা তো এখানে কেউ গোলা, বন্দুক নিয়ে আসিনি। যারা অভয়ার বাবা-মাকে দেখতে আসছেন তারা তো কেউ পিস্তল নিয়ে আসছে না। পুলিশ চাইলে খুঁজে দেখতে পারে। এখানে তো কেউ থ্রেট দিতে আসেনি। তবে কীসের ভয়ে কার ভয়ে ১০ জন পুলিশ এখানে দাঁড়িয়ে আছে?
যখন ডাক্তার সন্দীপ ঘোষকে ধরার কথা ছিল তখন তাকে প্রাইজ পোস্টিং দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে দেওয়া হয়নি, পুলিশ টাকা দিয়ে ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল। পুলিশ এবং মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করতে হবে আপনারা এত ভয় পাচ্ছেন কেন?
চিকিৎসকদের আন্দোলনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আন্দোলনের কোনো তুলনাই চলে না। মুখ্যমন্ত্রী যখন ধরণায় বসে ছিলেন তখন দামি চকোলেট খেতো শুনেছি। কারণ ২৬ দিন ওভাবে অনশন করা যায় না, তাছাড়া ২৬ কেজি ওজনও বাড়ে না! ৫-৬ দিনে যদি ইয়াং ছেলেমেয়েদের এই অবস্থা হয় তবে আমরা কি একদিন না খেয়ে থাকতে পারবো? সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আমরা না খেয়ে দেখি আমাদের কি অবস্থা হয়! এদের সাত-আট দিনে এ অবস্থা, আর উনি ২৬ দিন? এটা কি মগের মুল্লুক?
উনি (মমতা) ল’ পাস করেছেন, উনি ছবি আঁকেন, গান গান, বাসন মাজেন... আরও কত কি করেন। উনি সব কিছু পারেন। ওনার তুলনা উনি নিজেই। ওদের প্রশ্ন করতে হবে কেন সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিলেন? কেন বাবা-মায়ের মুখ বন্ধ করার জন্য টাকা দিয়েছিলেন? কেন তড়িঘড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হলো? কেন আর জি করের এই পাশের দেওয়ালটা ভাঙা হচ্ছিল?
জুনিয়র ডাক্তাররা যেখানে আন্দোলন করছেন, সেখানে পূজার উদ্বোধনের পাশাপাশি ঢাক বাজাতে ডান্ডিয়া নাচতে দেখা গেছে মুখ্যমন্ত্রীকে। তা নিয়ে শ্রীলেখার কটাক্ষ ‘এবার সাধারণ মানুষ উনার (মমতা) ঢাক বাজাবে, ওনার দলের (তৃণমূল কংগ্রেস) ঢাক বাজাবে।’
তিনি বলেন, সিবিআই’র ওপর আমার এখনও ভরসা আছে। কারণ আমি ভীষণ পজিটিভ একটা মানুষ। অনেক নেগেটিভিটির মধ্য দিয়ে গেছি।
মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে শ্রীলেখা বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর এখনই পদত্যাগ করা উচিত। কারণ তিনি চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ। তিনিই দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দু। তিনি একাধারে মুখ্যমন্ত্রী, আবার পুলিশ, আবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি সম্পূর্ণভাবে রাজ্যকে ব্যর্থতার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। আমরা শিক্ষকদের রাস্তায় দেখেছি, এবার ডাক্তাররা রাস্তায় নেমেছেন। এই দুটো সমাজের স্তম্ভ। এই স্তম্ভ দুটো এখন নড়বড়ে হয়ে গেছে। অন্যদিকে তিনি ডান্ডিয়া নেচে বেড়াচ্ছেন। আমরাও কয়েকদিন পরে খেলা শুরু করব।
শ্রীলেখার প্রশ্ন কেন সবাই মিলে বলবে না, যে আমরা উৎসব চাই না, আমরা জাস্টিস চাই। আমরা কোন রাজ্যে বাস করছি? আমরা কি হিটলারের শাসনকালে বাস করছি? ওপরে ওপরে চকচকে, লাইট জ্বলছে... লাথি মারুন এই উৎসবে।