সীমান্তে দেবী দুর্গার বিসর্জনে দুই বাংলার মানুষের মিলন মেলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১১:৩৫ এএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৪ সোমবার
সংগৃহীত ছবি
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে দুর্গােৎসবের শেষদিনে দেবী দুর্গার বিসর্জনে দুই বাংলার মানুষ একসঙ্গে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছিলেন। বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের উপস্থিতিতে মাথাভাঙ্গা নদীর দুইপাড়ে বসেছিল দুই বাংলার মানুষের মিলন মেলা।
রোববার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে এ দৃশ্য দেখা যায়। বিজয়া আনন্দে তারা আত্মীয়তার বন্ধনও করেছে অটুট। তবে সীমান্তরক্ষীদের কড়া নিরাপত্তার কারণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই দেবী দুর্গার বিসর্জন হলে এ মিলন মেলার শেষ হয়।
ওপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শিকারপুর সীমান্ত আর এপারে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ সীমান্ত। মাঝখানের সরু মাথাভাঙ্গা নদী তার সীমানা। এ নদীর দুইপাড়ে দুর্গোৎসবের শেষদিনে কাঁটাতারের সীমানা বিভেদ ভুলে দুই দেশের মানুষের মধ্যে কিছু সময়ের জন্য ঘটেছিল আনন্দ ও সৌহার্দপূর্ণ মিলন।
দেবী দুর্গাকে বিসর্জন দিতে এসে দুই পারের মানুষ সাঁতরিয়ে নদী পারাপার হয়ে সৌহার্দ ও বন্ধনকে করেছে অটুট। সেই সাথে করেছেন একে অপরকে মিষ্টি মুখ। তাদের মধ্যে হয়েছে কুশল বিনিময়। অশ্রুসজল নয়নে আত্মীয় স্বজনরা একে অপরকে বেঁধেছে মমতার বন্ধনে। বছরে একটি উৎসবের অপেক্ষা। আর তা হলো দুর্গোৎসবে দেবী দুর্গা বিসর্জন। যারা আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দুই দেশে যাতায়াত করতে পারেন না তাদের অপেক্ষার অবসান হয় বিজয় দশমীর এই দুর্গার বিসর্জনক্ষণে। দুপুর হতে না হতেই ব্যাকুল হয়ে থাকা মানুষগুলো ছুটে যান মাথাভাঙ্গা নদীপাড়ে আপনজনের দেখা পেতে। অশ্রুসজল নয়নে দূরদৃষ্টি দিয়ে দেখতে থাকেন এপার ও ওপারে থাকা আপনজনদের।
দীর্ঘদিন পর একপলক দেখা পেতেই মিলে মনের শান্তি। ফিরে স্বস্তি এমনটা জানিয়েছেন আশরাফুল ইসলাম নামে এক স্কুলশিক্ষক। তিনি প্রতিবছরই এভাবে ওপারের স্বজনদের সাথে দেখা করতে ছুটে যান ধর্মদহ সীমান্তে।
দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি-বিএসএফ’র কড়া নজরদারি থাকলেও কিছু সময়ের জন্য তারাও সীমানা নজরদারি ভুলে নদীর দুইপাড়ে থাকা বাঙালিদের সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হতে সহায়তা করে থাকেন।
সারা দেশের ন্যায় কুষ্টিয়াতে রোববার (১৩ অক্টোবর) বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। কড়া নিরাপত্তায় বিকেল ৪টার পর থেকে দেবী দুর্গাসহ প্রতিমাগুলো নেওয়া হয় পদ্মা, গড়াই ও মাথাভাঙ্গা নদীসহ বিভিন্ন স্থানে। কুষ্টিয়া শহরের দুর্গা বিসর্জন হয় গড়াই নদীতে। কুষ্টিয়ায় এবছর ২৩০টি মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় শারদীয় দুর্গোৎসব। কুষ্টিয়ায় প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষ্যে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে প্রশাসন।