ঢাকা, শুক্রবার ১৮, অক্টোবর ২০২৪ ১২:২৩:৩৬ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

৭ই মার্চ ও ১৫ আগস্ট বাতিলের তীব্র প্রতিবাদ তসলিমা নাসরিনের

তসলিমা নাসরিন:

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১১:৪৭ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০২৪ বৃহস্পতিবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

ঐতিহাসিক সাত মার্চ ও ১৫ই আগস্টসহ আট জাতীয় দিবস বাতিল করার সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিন। বলেছেন, এখন ২১ ফেব্রুয়ারি ও ১৬ ডিসেম্বরকে বাতিল ঘোষণা করলেও অবাক হবো না। 

বুধবার (১৬ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব মন্তব্য করেন তিনি। এদিনই ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, ঐতিহাসিক সাত মার্চ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস এবং চার নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবসসহ আট জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, বাংলাদেশের ‍‍`এনজিও সরকার‍‍` ৮টি দিবস বাতিল করেছে। এর মধ্যে ৬ টি দিবস নিয়ে আমার কোনও আপত্তি  নেই। তবে দুটো দিবস নিয়ে আমার  আপত্তি আছে।  ৭ই মার্চ আর ১৫ আগস্ট। ১৫ আগস্ট সম্পর্কে বলবো, এই দিবসটি   বাতিল করা উচিত নয়, এটিকে  জাতীয় শোক দিবস হিসেবে রাখা উচিত, কারণ সেদিন নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল জাতির পিতাকে। 

‘তবে আমার ঘোরতর আপত্তি, বাংলাদেশের  সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিবস ৭ই মার্চকে বাতিল করা নিয়ে। ৭১‍‍`এর ৭ই মার্চে ঐতিহাসিক যে ভাষণ দিয়েছিলেন শেখ মুজিবর রহমান, সেই ভাষণটি না শুনলে মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তো না, দেশের কোটি কোটি  মানুষকে বর্বর পাকিস্তানি সেনা  আর বিশ্বাসঘাতক রাজাকাররা মিলে   হত্যা করতো। বিজয়ের মুখ হয়তো আমরা দেখতাম না। বাংলাদেশ নামের একটি দেশই হয়তো পেতাম না। হয়তো পশ্চিম পাকিস্তানের গোলামী করেই যেতে হতো বাঙালিকে।’


আরও পড়ুন
রাজাকার হিসেবে নিজেরাই আবার জাতির সামনে: জয়
রাজাকার হিসেবে নিজেরাই আবার জাতির সামনে: জয়
তসলিমা আরও লিখেছেন, ৭ই মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতার ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধ, বিজয় অর্জন, পাকিস্তানের শোষণ থেকে মুক্তি পাওয়া, নতুন দেশ বাংলাদেশের জন্ম হওয়া -- এসব কাদের সহ্য হয় না? রাজাকারদের, রাজাকারের বাচ্চাদের, আর রাজাকারের নাতিপুতিদের। এদের রাগ ভারতের ওপরও। কারণ দেশ স্বাধীন করতে ভারত আমাদের সাহায্য করেছে। ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেও গাড়লগুলো এখন মুখের লাগাম টেনেছে। কারণ বুঝতে পেরেছে ভারতকে ক্ষেপিয়ে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি।

‘অগত্যা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের ক্ষেপালে ক্ষতি নেই বলে ক্ষেপাচ্ছে। তারা ভুলে গেছে যে শুধু আওয়ামী লীগই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক নয়। রাজাকার এবং তাদের গোষ্ঠী ছাড়া দেশের সবাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক, ৭ই মার্চের ভাষণ শুনলে এখনও তাদের গুজবাম্প হয়, এখনও তাদের চোখ জলে ভরে ওঠে,’ যোগ করেন তিনি। 


আরও পড়ুন
জাতীয় দিবস বাতিল করায় আওয়ামী লীগের নিন্দা ও প্রতিবাদ
জাতীয় দিবস বাতিল করায় আওয়ামী লীগের নিন্দা ও প্রতিবাদ
নিজের পোস্টে তসলিমা লেখেন, ‘রাজাকারের বাচ্চা আর নাতিপুতিগুলো এখন যদি ২১শে ফেব্রুয়ারি আর ১৬ই ডিসেম্বরকে বাতিল ঘোষণা করে, অবাক হবো না। যদি শহীদ মিনার আর স্মৃতিসৌধ ভেঙ্গে গুঁড়ো করে, অবাক হবো না। যদি দেশের নাম বদলে ইসলামিক রিপাবলিক অফ বাংলাস্তান বা পূর্ব পাকিস্তান  রাখে, অবাক হবো না। যদি ১৪ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করে,  অবাক হবো না। যদি জাতির পিতা হিসেবে জিন্নাহর ছবি টাঙায়, অবাক হবো না। যদি শরিয়া আইন জারি করে, অবাক হবো না। দেশকে যদি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়, অবাক হবো না।’