আবুল হায়াত নিজে কাঁদলেন, অন্যদের কাঁদালেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:১১ পিএম, ৪ নভেম্বর ২০২৪ সোমবার
সংগৃহীত ছবি
টানা ১০ বছর ধরে নিজের জীবনী বইয়ে লিপিবদ্ধ করেছেন অভিনেতা একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা আবুল হায়াত। প্রচ্ছদ এঁকেছেন আবুল কন্যা বিপাশা হায়াত। শনিবার বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ছিল ‘রবি পথ’নামের সে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে দুই কন্যা বিপাশা, নাতাশাসহ সস্ত্রীক উপস্থিত হয়েছিলেন আবুল হায়াৎ। এসেছিলেন নাট্যাঙ্গনের গুণীজনেরা। সকলের অংশগ্রহণে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যেখানে আবুল হায়াত নিজেও কাঁদলেন অন্যদেরও কাঁদালেন।
কান্নাভরা কণ্ঠে স্ত্রীকে জড়িয়ে আবুল হায়াত বলেন, “এই মানুষটি আমাকে জীবনে সব ধরনের সাপোর্ট দিয়ে গেছেন। আজ থেকে দুই বছর আগে আমার হাসপাতালে গিয়ে আমরা শুনতে পাই আমি ক্যানসারে আক্রান্ত। এই কথা শোনার পর আমি চুপ হয়ে গেছি। পুরো রাস্তা আসার সময় তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। রাতে খাওয়া দাওয়া করে আমি শুয়ে ছিলাম। তিনি অন্ধকারে গিয়ে আমাকে জড়িয়ে কি যে কান্না। এটা হয়তো বলে বোঝানো যাবে না। ও শুধু বলছিল, ‘সৃষ্টিকর্তা কি আমাকে চোখে দেখলো না?’ সারাজীবন ও আমার সঙ্গে যুদ্ধ করেছে, এখনও করছে।”
আরও বলেন, ‘হঠাৎ মনে হয়েছিল, জীবনে তো অনেক ঘটনা আছে। ছোটবেলা থেকে অনেক কিছু দেখেছি। সেগুলো গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেছি বইতে। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা জানেও না, এ রকম পুরোনো অনেক ঘটনা আছে। আমার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব সবাই উৎসাহ দিয়েছে। পরে ভাবলাম, লিখেই ফেলি। আমার মনে হয়, এটার একটা ভালো দিক আছে। ৮০ বছরের একটা ভ্রমণ আমার, অনেক কিছু দেখেছি, যা অনেকে হয়ত জানে না। সুতরাং আমার মতো যারা আছেন, তারাও যদি নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আত্মজীবনী লেখেন, তাহলে অবশ্যই সেটা নতুন প্রজন্মের জন্য ভালো।’
আত্মজীবনী নিয়ে বর্ষীয়ান এ অভিনেতা বলেছিলেন, ‘এটা আমাকে নিয়েই লেখা। কোনো গল্প নয়, উপন্যাস নয়। নিজের জীবনের কথা লিখেছি। অনেকে উৎসাহী আমার কথা জানতে, অনেকে এমনটা বলে উৎসাহও প্রকাশ করেছে। আমার নিজেরও মনে হয়েছে, উত্তরপুরুষ যারা আসবে, আমার নাতি-নাতনি যারা এখনো অনেক কিছু জানে না, তাদেরও বংশধর হয়তো এক সময়...যদিও আই অ্যাম নট ভেরি ইমপর্ট্যান্ট পারসন, বাট ইভেন দ্যান তাদের কাছে তো আমি একজন ইম্পর্ট্যান্ট পারসন। হয়তো অনেকে এ–ও ভাবতে পারেন, তিনি কী এমন মানুষ যে তার আত্মজীবনী পড়ব। আমার মেয়েরা, তাদের স্বামী, নাতি-নাতনি, বংশধরেরা হয়তো পড়ে আগ্রহ বোধ করবে।’
৩০০ পৃষ্ঠার হবে বই ‘রবি পথ’। প্রকাশ পেয়েছে মেয়ে নাতাশার বান্ধবীর প্রকাশনী সংস্থা সুবর্ণ থেকে।