শীতে ঘুমিয়েই কমবে ওজন
লাইফস্টাইল ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০২:১৫ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার
সংগৃহীত ছবি
শীতের হিমেল হাওয়া গায়ে লাগতেই আলসেমি এসে ভর করেছে শরীরে। আলমারি থেকে কম্ফোর্টার আর কম্বল বের করে গায়ে জড়াতে শুরু করেছেন অনেকে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় একটু বেশিসময় ঘুমিয়ে থাকতে কার না ভালো লাগে? কিন্তু বাড়তি ওজন নিয়ে যারা বিপদে আছেন তারা আর সকালে ঘুমানো হয় না। ভোরেই উঠতে হয় ব্যায়াম বা জিমের জন্য।
কেমন হতো যদি এই শীতে ঘুমিয়ে শরীর থেকে ৪-৫ কিলো ওজন কমিয়ে ফেলা যেত। স্বপ্ন নয়, সত্যিই এমনটা সম্ভব। গবেষণায় উঠে এসেছে পর্যাপ্ত ঘুমের সঙ্গে ওজন কমার অত্যন্ত নিবিড় সংযোগ রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণা অনুযায়ী, ঘুম না হলে শরীরের বিপাকক্রিয়ার সমস্যা হতে পারে।
ঘুমিয়ে কীভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?
ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের প্রয়োজন। ঘুমের সঙ্গে প্রয়োজনীয় হরমোন ক্ষরণ ও বিপাক হারের যোগাযোগ রয়েছে। যারা রাতে ৬ ঘণ্টার কম যারা ঘুমান, তাদের ওজন, বডিমাস ইনডেক্স অনেকটাই বেশি।
সূর্যোদয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বিপাকহারের গতি বৃদ্ধি পায়। দেহের তাপমাত্রাও কিছুটা বৃদ্ধির দিকে থাকে। অন্যদিকে রাতে এর উল্টোটা ঘটে। সূর্যাস্তের সঙ্গে-সঙ্গে কমতে থাকে বিপাকক্রিয়াও।
আবার যারা বেশি রাত জেগে থাকেন তাদের খিদে পাওয়া স্বাভাবিক। এসময় দেহের কোষগুলো ইনসুলিন প্রতিরোধী হিসেবে কাজ করে। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাও বৃদ্ধি পায়। এতে শরীরে বাড়তি ক্যালোরি জমা হয়, যা পরবর্তীতে ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়।
মানতে হবে কিছু শর্ত
ঘুমিয়ে ওজন কমাতে চাইলে ঘুমানোর আগে কয়েকটি কাজ করতে হবে। এতে দেহে মেটাবলিজমের হার বৃদ্ধি পাবে। যা ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
অতিরিক্ত ঘুম
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি, গবেষণায় জানা গেছে প্রায় ১ ঘণ্টা অতিরিক্ত ঘুমালে কোনো পরিশ্রম ছাড়াই ২৭০ ক্যালোরি পর্যন্ত কমাতে সাহায্য হতে পার।৷ তাহলে গণিতের হিসেব কী বলছে? যদি কেউ ২৭০ কিলো ক্যালোরি ফ্যাট বার্ন করতে পারে, তাহলে বছরে প্রায় ৯ পাউন্ড অবধি ওজন কমানো সম্ভব। কোন নিয়মগুলো এজন্য মানতে হবে, চলুন জেনে নিই-
প্রোটিন শেক
বিছানায় যাওয়ার আগে চেষ্টা করুন এক গ্লাস প্রোটিন শেক খাওয়ার। এটি সারা রাত ধরে হজম হয়। ফলে ঘুমের মধ্যেও মেটাবলিজম বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে নিঃসরিত হব অ্যামিনো অ্যাসিড।
কম তাপমাত্রা
সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, কম তাপমাত্রা ঘুমালে এক্সট্রা ক্যালোরি বার্ন হতে থাকে। আসলে কম তাপমাত্রায় ঘুমালে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায়। যার ফলে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করার জন্য এক্সট্রা ক্যালোরি খরচ হতে শুরু করে। ফলে শরীরের চর্বি ঝরতে শুরু করে।
খালি পেটে থাকা চলবে না
অনেকেই রাতে হালকা খাবার খেতে পছন্দ করেন। তাই বলে একদম কিছু না খেয়ে থাকা যাবে না। এতে অ্যাসিডিটি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই হালকা প্রোটিনযুক্ত কিছু খেয়ে ঘুমাতে যান।
স্লিপ মাস্কের ব্যবহার
হয়তো পড়ে হাসি পাচ্ছে। ভাবছেন, এটি দিয়েও কি চিকন হওয়া সম্ভব? কিন্তু এর পেছনেও রয়েছে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা। গবেষণা বলছে, অন্ধকারে ঘুমালে শরীরে মেলাটোনিন হরমোন বেশি উৎপাদন হয়। যা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে। ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘুমানোর সময় শরীরের গ্রোথ হরমোন নিঃসরণ হয়। যা ফ্যাট বার্ন করতে সাহায্য করে।
মনে রাখা জরুরি
শীতে সারাক্ষণ লেপ-কম্বল মুড়ে শুয়ে থাকবেন আর ৭ দিনেই চিকন হয়ে যাবেন এমনটা কিন্তু কখনোই সম্ভব নয়। তাই সুষম খাবার, এক্সারসাইজ আর তার সঙ্গে রাখুন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার টানা ঘুম। ধৈর্য ধরে এই রুটিন চালিয়ে গেলেই দেখবেন ধীরে ধীরে কমছে ওজন।