মধ্যপ্রাচ্যে ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: ফরিদা আখতার
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৩:১৭ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ বুধবার
সংগৃহীত ছবি
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা হিসেবে ১০০ দিন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
ইলিশ প্রাপ্তি প্রবাসীদের অধিকার উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, প্রবাসীরা যেসব দেশে আছেন সেখানে স্বল্প পরিসরে কিছু ইলিশ পাঠানো যায় কি না, সে বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ-আমেরিকায় আমাদের প্রবাসীরা আছেন। এর মধ্যে ইউরোপ-আমেরিকায় যেসব এলাকায় আমাদের বাঙালিরা আছে, সেখানে কিছু ইলিশ যায়। এখন আমরা মধ্যপ্রাচ্যে ইলিশ রপ্তানির উদ্যোগ নেব।
তিনি বলেন, এ বছর ইলিশ মাছের আহরণ গত বছরের তুলনায় কম ছিল। তার একটি অন্যতম কারণ ছিল সময়মতো বৃষ্টি না হওয়া। তাছাড়া ভারত থেকে অবৈধভাবে ট্রলার ফিশিংয়ের মাধ্যমে ইলিশ আহরণ করা হয় বলে অভিযোগ আছে। তবে, এ বছর আমাদের নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড এবং নৌ-পুলিশ এ বিষয়ে সতর্ক অভিযান চালিয়েছে এবং বেশ কিছু ভারতীয় ট্রলার এবং জেলে আটক করতে পেরেছে।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, বাজারে ইলিশের দাম কেজিপ্রতি ১৫শ’ টাকা থাকায় এখনও সাধারণ মানুষের চাহিদা মেটাতে পারছে না। ইলিশের দামের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট, মধ্যস্বত্বভোগী এবং দাদন-ব্যবসাকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করছে।
মা ইলিশ রক্ষার এবারের অভিযান সফল হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইলিশের ডিম ফোটার হার ছিল গড়ে ৫৪ শতাংশ; কোথাও ৭০ শতাংশেরও বেশি হয়েছে। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় বিগত তিন মাসে (আগস্ট-অক্টোবর) ১ হাজার ৪২৪টি ইলিশ আহরণকারী জেলে পরিবারের মধ্যে বিকল্প আয়ের উপকরণ (এআইজি) বিতরণ এবং ১ হাজার ৮২৫ জন সুফলভোগী ইলিশ জেলেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, অভিযান চলাকালে জেলেদের জন্য মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য এ বছর মোট ১৪ হাজার ১৬৪.১২৫ টন চাল ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৫৬৫টি জেলে পরিবারের মাঝে বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৩ হাজার ৯৬২.১ টন চাল ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬০টি জেলে পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে (বিতরণের হার ৯৯ শতাংশ)। আগামীতে ৪০ কেজি মাসিক ভিজিএফের পরিবর্তে ৫০ কেজি এবং ২৫ কেজির পরিবর্তে ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং সব জেলে যাতে সরকারের সুবিধা পেতে পারে, সে জন্য জেলেদের তালিকা হালনাগাদ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ফরিদা আখতার আরও বলেন, দুর্গাপূজার সময় ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও ভারতে গেছে মাত্র ৬৬৫ টন। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ এর আওতায় মোট ২ হাজার ১৬৫টি মোবাইল কোর্ট ও ৯ হাজার ৮০২টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব মোবাইল কোর্ট ও অভিযানের মাধ্যমে ৫৪.৮৪ টন ইলিশ জব্দ, ৬১১.৬৩৮ লাখ মিটার জাল আটক, ৩ হাজার ২৫টি মামলা দায়ের, ৭৫.২৭৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং ২ হাজার ৯ জনকে জেল দেওয়া হয়েছে। ইলিশ রক্ষার জন্য অবৈধ জাল আটক এবং কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। মুন্সিগঞ্জে কারখানায় অভিযান চালিয়ে ২৪.৯০ লাখ মিটার এবং ৬ হাজার ৬০০ পিস রেইল আটক করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত আছে এবং কারখানাগুলো বন্ধ করার চেষ্টা চলছে।