ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১২, ডিসেম্বর ২০২৪ ৫:৪৭:৩১ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

মেহেরপুরে আগাম গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজে কৃষকদের বাজিমাত

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০৯:৫৪ এএম, ২ ডিসেম্বর ২০২৪ সোমবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

মেহেরপুরে আগাম জাতের গ্রীষ্মকালীন নাসিক জাতের পেঁয়াজ চাষে সফলতা পেয়েছেন কৃষকরা। এ বছর জেলাজুড়ে দুই হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে মুলা ও পালং শাকও আবাদ করছেন তারা।

এদিকে নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করায় কেজিতে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা কমে  ক্রেতারা পেঁয়াজ কিনতে পারছেন।

কৃষকরা বলছেন, ভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হলে এবং ন্যায্য দাম পেলে তারা লাভবান হবেন। 

কৃষি বিভাগ বলছে, গ্রীষ্মকালীন আগাম জাতের পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। খুব শিগগিরই  নতুন পেঁয়াজে দাম সাশ্রয় হবে। 

সীমান্তবর্তী জেলা মেহেরপুরের মাঠজুড়ে গ্রীষ্মকালীন নাসিক-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। গেল বছর পেঁয়াজের ভালোদাম পেয়ে এ বছরে আগাম জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ করেন  অধিকাংশ কৃষক। 

সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে পেঁয়াজ চারা রোপণ করে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বাজারে উঠতে শুরু করেছে। প্রতিবিঘা জমিতে ৬০ থেকে ৬৫ মন পেঁয়াজ হবে বলে আশা কৃষকদের।

জেলা কৃষি অফিসের ডেভেলপমেন্ট কর্মকর্তা আশরাফুন্নেসা জানান, মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলার বিভিন্ন মাঠে এ বছর নাসিক ৫৩ জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে। এ জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হবে প্রায় ৪৮ হাজার ২০০ টন। এক কাঠা জমিতে সাড়ে তিন থেকে ৪ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হওয়ার আশা চাষিদের। যা জেলার চাহিদার প্রায় তিনগুণ। 

গাংনীর জুগিন্দা গ্রামের পেঁয়াজ চাষি সাহারুল ইসলাম, ফয়েজ উদদীন, আব্দুল কাদের বলেন, আমরা এর আগে কখনও গ্রীষ্মকালীন নাসিক- ৫৩ জাতের পেঁয়াজের আবাদ করিনি। স্থানীয় পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির কৃষি অফিসারের পরামর্শ পেয়ে এ বছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ করি। পেঁয়াজ অনেক ভালো হয়েছে। ফলনও ভালো হচ্ছে। বাজারে নতুন পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জমি থেকে পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা থেকে ৯০ টাকা কেজি।

আমাদের জেলায় কমবেশি বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ আবাদ হয়। গেল বছর দুএকজন কৃষক গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ করে লাভবান হন। এ বছর পেঁয়াজের আবাদে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক। একইসঙ্গে পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে মুলা ও পালং শাক আবাদ করেছেন চাষিরা।

মুজিবনগর গ্রামের কৃষক আক্কাস আলি ও মুক্তার মুনসি বলেন, এক বিঘা জমিতে দুই কেজি পেঁয়াজের বীজ বপন করতে হয়। প্রতি কেজি পেঁয়াজের বীজের দাম ২ হাজার টাকা। আমাদের পেঁয়াজের বীজ, সারসহ বিভিন্ন উপকরণ বিনামূল্যে প্রদান করে পল্লি কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতি। 

পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে মুলা ও পালংশাকের বীজ বপন করেছিলাম। দুই সপ্তাহ পর মুলা ও পালংশাক বিক্রি করে ভালো টাকা আয় হয়েছে।

সদর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের কৃষক আব্দুল আলীম বলেন, গেল বছর দশ কাঠা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করে ৩০ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। এ বছর দেড় বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ করেছি। একই জমিতে লালশাকের বীজ বুনে ছিলাম। লালশাক আগে বিক্রি করেছি। এখন পেঁয়াজ বিক্রি করছি। দাম ভালো পাচ্ছি। বিক্রি শেষে খরচের দেড়গুণ টাকা লাভের আশা আছে।

পিএসকেএস এর কৃষি কর্মকর্তা জুয়েল বিশ্নাস বলেন, সমন্বিত কৃষি ইউনিটের কৃষি খাতের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পিকেএসএফ এর অর্থায়নে অনেক কৃষকদের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করতে প্রদর্শনী দেওয়া হয়। পেঁয়াজের আবাদ অনেক ভালো হয়েছে।