ঢাকা, বৃহস্পতিবার ০৫, ডিসেম্বর ২০২৪ ৮:৪২:৫৫ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

ভারতে হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১০:১৭ এএম, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর, খুলনা ও ফেনীতে বিক্ষোভ হয়েছে।

গতকাল সোমবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাবির শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর একটি মিছিল বের করা হয়। এ সময় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিলে যোগ দেন। পরে মিছিলটি ভিসি চত্বর হয়ে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে এক সমাবেশে মিলিত হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। স্লোগানগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘গোলামী না আজাদি, আজাদি আজাদি’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দাও জনগণ’, ‘হাইকমিশনে/আগরতলায় হামলা কেন, দিল্লি তুই জবাব দে’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আমরা কী চাই, আজাদি আজাদি’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি।

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ভারত আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ। তাদের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকবে, প্রতিবেশী হিসেবে ভালো সম্পর্ক থাকবে। কিন্তু কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে আমাদের রাজা-প্রজার সম্পর্ক হতে পারে না। ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার জন্য অবশ্যই ভারতকে ক্ষমা চাইতে হবে।

তারা বলেন, ভারতকে বলতে চাই— এ দেশে আর আওয়ামী লীগের ক্ষমতা নেই। সুতরাং তারা যেন আওয়ামী লীগের আমলের মতো করে এ দেশে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা না করে। দিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, শরীরে এক ফোটা রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা ভারতের আধিপত্য মেনে নেব না। যেভাবে আমরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি সেভাবেই আমরা দিল্লির আগ্রাসনও রুখে দেব।

এ সময় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ভারত বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা করে এক নগ্ন ইতিহাস রচনা করেছে। ভিয়েনা কনভেনশনের বিপরীতে গিয়ে তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। ভারত তাদের আচরণের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে তারা বিশ্বসভ্যতা এবং ভদ্রতাকে ধারণ করে না। ভারত সরকারকে তাদের এমন নির্লজ্জ আচরণের জন্য বাংলাদেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

তিনি বলেন, ভারতের ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের সর্বত্র বিদ্যমান। ভারতের তৈরি মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ আমাদেরকে হত্যা করার জন্য ডাকসুতে হামলা করেছে। গণঅভ্যুত্থানের সময় দেখা যায় সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানো অনেক সামরিক লোক হিন্দিতে কথা বলছে। ভারতের অনুগত হাসিনাকে রক্ষা করতে বিজেপি সরকার তাদেরকে এদেশে পাঠিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যদি না খেয়েও মারা যায়, তবু দেশকে বিক্রি করব না। ভারত বাংলাদেশে নিয়ে খেললে আমরা সেভেন সিস্টার নিয়ে খেলব। আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হামলায় সেভেন সিস্টার চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে।

রাবিতে বিক্ষোভ

বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৯টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জুহা চত্বরে মিলিত হয় শিক্ষার্থীরা। পারে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক দিয়ে তালাইমারি মোড়ে সমাবেশ করেন তারা।

এসময় তারা, ‘ভারতের দাদাগিরি, থুথু মারি থুথু মারি’, ‘ভারতের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান’, ‘ভারতীয় তালবাহানা, এই বাংলায় চলবেনা’, ‘হিন্দু মুসলিম ভাই ভাই, দাঙ্গাবাজদের ঠাই নাই’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘আপোষ না সংগ্রাম? সংগ্রাম, সংগ্রাম’, ‘গোলামী না মৃত্যু? মৃত্যু মৃত্যু’, ‘আমার দেশের অপমান, সইবেনা আর জনগণ’, ‘চাটুকারদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ভারতীয় বন্দিশালায়, লাথি মার, ভাংরে তালা’, ‘ভারতীয় আধিপত্য, নিপাত যাক, বিনাশ যাক’, ‘ভারতীয় আস্তানা, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ভারতের একমাত্র বন্ধুত্ব ছিল আওয়ামী লীগের সাথে, একমাত্র বন্ধুত্ব ছিল ওবায়দুল কাদেরের সাথে, একমাত্র বন্ধুত্ব ছিল শেখ হাসিনার সাথে এবং বন্ধু ছিল তার পরিবারের সাথে। বাংলাদেশের সাথে তাদের কোন বন্ধুত্ব ছিল না। আমরা আমাদের বিজয়টাকে আওয়ামী লীগের বিপক্ষে বিজয় বলে ধরি না। আমরা ভারতের বিপক্ষে বিজয় বলে মনে করি।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, মানুষের লাশের উপর দিয়ে ভারতের রাজ কায়েম হতে আমরা দেব না। ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের হাই কমিশনে অ্যাটাক করা হয়েছে। আমরা কিন্তু এখনো চুপ আছি। বাংলার মানুষ গর্জে উঠলে ভারতের আধিপত্য ছারখার হয়ে যাবে।

এ সময় বক্তারা ভারতের পণ্য বয়কটেরও ডাক দেয়। একদল শিক্ষার্থী ভারতের পণ্য পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায়।