ধানের এই ভরা মৌসুমে আমদানি হচ্ছে ভারতীয় চাল, তবুও কমছে না দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:৩০ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার
সংগৃহীত ছবি
বেনাপোলে চালের মূল্য ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন আমন ধান ঘরে উঠলেও দাম কমছে না। ধানের এই ভরা মৌসুমে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হচ্ছে ভারতীয় চাল। তারপরও খুচরা বাজারে কমছে না দাম।
চলতি মৌসুমে ধানের দাম বেশি, যে কারণে কমছে না চালের দাম-এমনটাই বলছেন অটোরাইস মিল মালিক ও ধান ব্যবসায়ীরা। আমদানিকারকদের মতে, ভারতে চালের দাম বেশি, এ কারণে আমদানিকৃত চাল কম দামে বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। ভরা মৌসুমেও কম দামে চাল না কিনতে পেরে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। সীমান্ত অঞ্চলে শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে ওঠায় চালের মূল্য কমছে না বলে মনে করছেন সাধারণ ক্রেতারা। বিশেষ করে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে নজরদারির ব্যবস্থা না থাকায় মূল্য কমছে না বলে মত তাদের।
যশোরের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সিংহভাগ ধানের উৎপাদন হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে এই অঞ্চলে ২১ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। ৮০ শতাংশ ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়ে গেছে। এবার ধানের বাজার চড়া। ১৩৫০ থেকে ১৪৫০ টাকা মনে দাম পাচ্ছেন কৃষক। এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি অটোরাইস মিল ঘুরে দেখা যায়, এখনো ধান কিনতে পারেননি মিল মালিকরা। কৃষকেরা তাদের ধান বাজারজাত করতে পারেননি এখনো। তবে মিল মালিকরা অন্য জেলা থেকে ৩২-৩৪ টাকা কেজি দরে ধান কিনছেন। এসব ধান থেকে চাল প্রস্তুত করতে দাম পড়ছে ৫২ টাকা।
দেশের বাজারে দাম স্বাভাবিক রাখতে বিনা শুল্কে ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। ১৭ নভেম্বর ভারত থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। এক মাসে এই বন্দর দিয়ে ৪ হাজার ৫০০ টন ভারতীয় চাল আমদানি হয়েছে। এসব চাল ৪১০ মার্কিন ডলারে আমদানি করা হচ্ছে। তবে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বন্দরে জোর করে প্রতি টন চাল ৪৫০ মার্কিন ডলারে শুল্কায়ন করায় মূল্য বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে একই মোটা চাল সাতক্ষীরার ভোমরা কাস্টমস হাউজে শুল্কায়ন হচ্ছে প্রতি টন ৪১০ মার্কিন ডলারে।
দেশে আমন ধানের বাম্পার ফলন এবং পর্যাপ্ত ভারতীয় চাল আমদানি হলেও তার কোনো প্রভাব পড়েনি এ অঞ্চলের খুচরা বাজারে। ভারত থেকে আমদানিকৃত স্বর্ণা চাল-৫ বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৪-৫৫ টাকায়। আর দেশি মিনিকেট, নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। ভরা মৌসুমে কম দামে চাল কিনতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা।
বেনাপোল বাজারে চাল কিনতে আসা মেহের আলী বলেন, ‘এখন ধানের মৌসুম, আবার ভারত থেকে গাড়ি-গাড়ি চাল আমদানি হচ্ছে। তারপরও চালের দাম কমছে না কেন? প্রতিবছর এ সময় নতুন ধান উঠলে বাজারে চালের দাম অনেক কমে যায়। কিন্তু এবার বাজারের চিত্র উলটো।’
আরেক চাল ক্রেতা আতাউর রহমান বলেন, ‘দেশে পর্যাপ্ত ধানের আবাদ হয়েছে। তারপরও দাম কমছে না কেন? আমরা গরিব মানুষ, দাম না কমলে কীভাবে চলব? হয়তো সিন্ডিকেটের কারণে দাম কমছে না। তাই আমি মনে করি, প্রশাসন বাজারে নজরদারি করলে দাম অনেকটা কমে যাবে।’