পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী অন্যরাও
নিজস্ব প্রতিবেদক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৪:০৩ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ বৃহস্পতিবার
সংগৃহীত ছবি
পুঁইশাক চাষে ভাগ্য বদলেছে ত্রিশোর্ধ্ব গৃহবধূ সুফিয়া বেগমের। তিনি গত ১০ বছরে ধরে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চুপাইর গ্রামে পুঁইশাক চাষ করছেন।
তাকে দেখে আগ্রহী হচ্ছেন ওই গ্রামের আশপাশের কৃষকেরাও। তার পুঁইশাক চাষ দেখতে ও পরামর্শ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন অনেকেই।
পুঁইশাক চাষি সুফিয়া বেগম জানান, তাদের ৪ সদস্যের সংসার। পরিবার পুরোপুরি কৃষিনির্ভর। স্বামী ট্রাকটর দিয়ে নিজের জমি চাষ করার পর ভাড়ায় অন্যের জমি চাষ করে আয় করেন। স্বামীকে সহযোগিতা করতে তিনি পুঁইশাক চাষে আগ্রহী হোন। তবে বেশ কয়েক বছর পুঁইশাক চাষে লাভবান হওয়ায় বড় পরিসরে চাষ শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘আমার প্রায় ৪০ শতাংশ জমি আছে। সেখানে গত ১০ বছর ধরে পুঁইশাক চাষ করছি। যদি ৫০ হাজার টাকা খরচ হয় এবং প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হয়, তাহলে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করা যায়।’
চুপাইর গ্রামের চল্লিশোর্ধ্ব কৃষক মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘সুফিয়া বেগম পুঁইশাকের চাষ করেছেন। প্রতি বছরই তিনি করেন। এবারও তার ক্ষেতে খুব সুন্দর হয়েছে। তিনি পুঁইশাক চাষ করে খুবই লাভবান হয়েছেন। আমার ইচ্ছা আছে, আগামী বছর পুঁইশাকের চাষ করবো।’
আরেক কৃষক মো. ইমান আলী মোড়ল বলেন, ‘সুফিয়া বেগম পুঁইশাকের চাষ করে প্রচুর পরিশ্রম করছেন। প্রতি বছর পুঁইশাক চাষ থেকে তার ভালো আয়ও হচ্ছে। তাকে দেখে আমি উদ্বুদ্ধ হচ্ছি। আগামীতে আধা বিঘা জমিতে পুঁইশাক চাষ করবো।’
কালীগঞ্জ উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলার কৃষকেরা পুঁইশাকের চাষ ব্যাপকভাবে আয়ত্ত করতে পেরেছেন। তাই চাষিরা স্থানীয় বাজারগুলোর চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতে পারছেন। প্রতিদিন স্থানীয় দোলান বাজার এলাকা থেকে ট্রাক-পিকআপ ভর্তি করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে।’
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ২০০ গ্রাম শাক-সবজি খাওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে ১০০ গ্রাম শাক ও ১০০ গ্রাম সবজি খেতে হয়। পুঁইশাক একটি জনপ্রিয় শাক। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই শাক-সবজির চাষ হয়। এর মধ্যে জামালপুর ইউনিয়নের কিছু কিছু গ্রামে পুঁইশাকের চাষ একটু বেশি হয়।’
তিনি বলেন, ‘পুঁই যেহেতু শাক জাতীয়, তাই এ থেকে আমরা বেশি পুষ্টি পাই। কৃষক পুঁইশাকের চাষ খুব সহজেই করতে পারেন। জমিতে বিছিয়ে বা মাচা করেও চাষ করে থাকেন। তবে পুঁইশাক চাষের সময় রোগবালাই হয়। বিশেষ করে পাতায় দাগ রোগটি বেশি দেখা যায়। এ বিষয়ে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পরামর্শ দিয়ে থাকি।’