দেশে বাড়ছে নারীদের সাক্ষরতার হার
সালেহীন বাবু
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০২:২৮ এএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শনিবার | আপডেট: ০২:৫৮ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ মঙ্গলবার
দেশে সাক্ষরতার দিক থেকে পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে নারীরা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দেশে বর্তমান সাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক।
যে কোন একটি দেশের উন্নয়ন করতে গেলে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে প্রথমেই মায়েদের (নারী) সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া জরুরি।
বর্তমানে দেশে নারী শিক্ষার হার ৫০ দশমিক ৫৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে একজন নারীও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকবে না। শিক্ষায় নারীর অগ্রযাত্রা সমাজ ও দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
নারী শিক্ষার প্রতি বর্তমান সরকার বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়ায় ইতিমধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষায় ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি হয়েছে এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে ছাত্রের সংখ্যার সমতা অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আর মাদ্রাসা শিক্ষায় ছাত্রীর অংশগ্রহণ ছাত্রের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি।
বর্তমানে সার্বিকভাবে শিক্ষায় পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ বেশি। প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫০ দশমিক ৫৪ শতাংশই নারী। এ দুই স্তরে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। উচ্চমাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষায়ও ছাত্রীর অংশগ্রহণ দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্র-ছাত্রীর হারে দেশ প্রায় সমতা অর্জনের পথে রয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) দেশের শিক্ষার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে মোট ছাত্রছাত্রীর প্রায় ৫১ শতাংশ ছাত্রী। মাধ্যমিক শিক্ষা পর্যায়ে মোট শিক্ষার্থীর ৫৪ শতাংশের বেশি ছাত্রী। এইচএসসি পর্যায়ে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা কিছুটা এগিয়ে থাকলেও এক্ষেত্রে সমতা প্রায় প্রতিষ্ঠার পথে। ওই স্তরে ছাত্রীর অংশগ্রহণের হার ৪৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বিগত সময়ের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি), জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি পরীক্ষার পরিসংখ্যানেও দেখা গেছে, অংশগ্রহণেই শুধু বেশি নয়, সফলতা অর্জনের দিক থেকেও নারীরা এগিয়ে রয়েছে।
গত ডিসেম্বরে পিইসি ও জেএসসি-জেডিসির ফল প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, পিইসিতে মোট অংশগ্রহণকারী ছাত্রীর মধ্যে ৯৫ দশমিক ৪০ শতাংশই উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু মোট অংশগ্রহণকারী ছাত্রের মধ্যে পাস করেছে ৯৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সর্বোচ্চ সাফল্যের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকেও ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা ভালো করেছে।
বর্তমানে নারী শিক্ষার হার যেভাবে বাড়ছে এ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। এর ফলে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা শিক্ষিত হয়ে পরিবার, সমাজ, দেশ ও জাতির সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। মনে রাখতে হবে একজন শিক্ষিত মা-ই পারেন একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দিতে।