ঢাকা, রবিবার ২৪, নভেম্বর ২০২৪ ৭:২৯:২২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

১৫ অক্টোবর থেকে দুর্গা পূজা, শিল্পীরা ব্যস্ত মূর্তি গড়তে

অনলাইন ডেস্ক

উইমেননিউজ২৪.কম

প্রকাশিত : ১০:০১ এএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০২:৩৭ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

শরৎ এসেছে। বাতাসে পূজার গন্ধ। অাগামী ১৫ অক্টোবর থেকে শুরু হবে হিন্দুদের শারদীয় দুর্গোত্সব। সাধারণত আশ্বিন শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ দিন অর্থাৎ ষষ্ঠী থেকে দশম দিন বা দশমী অবধি পাঁচ দিন দুর্গোত্সব অনুষ্ঠিত হয়। সবাই এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করছে। 

 

এই অপেক্ষা চিরন্তন, এই অপেক্ষা সারা বছরের। বছরের শুরুতে যেকোনও বাঙালি হিন্দু পরিবারে ক্যালেন্ডার আসা মানেই, একনজরে চোখ বুলিয়ে নেওয়া... কবে দুর্গা পূজো! দুর্গাপূজার দিনক্ষণ দেখা হতেই অপেক্ষা শুরু হয়ে যায় বাঙালির মহাপার্বনের। অপেক্ষাকে আরও যেন উস্কে দেয় মহালয়া। কাশ, শিউলি একসঙ্গে জানান দিতে থাকে.. মা আসছেন।

 

দুর্গার অাগমন : শাস্ত্র মতে প্রতি বছরই দুর্গা মা কোনও না কোনও বাহনে চড়ে আসেন। যার কিছু ফলাফল থাকে বলে মনে করা হয়। ২০১৮ সালের দুর্গা পুজোয় এবার মহা সপ্তমী পড়েছে ১৬ অক্টোবর, অর্থাৎ ২৯ শে আশ্বিন। পঞ্জিকা মতে সেদিন দেবীর আগমন হচ্ছে `ঘোটক`-এ। অর্থাৎ এবছর দেবী আসছেন ঘোড়ায় চড়ে। পঞ্জিকা মতে এর ফল `ছত্রভঙ্গ`। শাস্ত্রজ্ঞরা বলছেন, ঘোড়ায় আগমন সেভাবে শুভ বলে মনে করা হয় না, তাই দুর্যোগের একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। 

 

মহালয়া : বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে মহালয়ার স্তোত্রপাঠ না শুনে বাঙালির মহালয়ার দিন কিছুতেই শুরু হয় না। এবছর এই দিনটি পড়েছে ৯ অক্টোবর। কার্যত এদিন থেকেই বাঙালির সবচেয়ে বড় কাউন্টডাউন-এর শেষ পর্ব চালু হবে!

 

পূজার তারিখ ও দিন : ২০১৮ সালে দূর্গা পূজা পড়েছে রবিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত। রবিবার ১৪ অক্টোবর মহাপঞ্চমী, সোমবার ১৫ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, মহ্গলবার ১৬ অক্টোবর মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী পড়েছে ১৭ অক্টোবর বুধবার, মহা নবমী পড়ছে বৃহস্পতিবার ১৮ অক্টোবর, দশমী পড়ছে ১৯ অক্টোবর।

 

মা দুর্গার গমন : মা দুর্গার গমন দশমীর দিন। এবার দূর্গার গমন হচ্ছে দোলায়। শাস্ত্র মতে এমনই জানানো হচ্ছে। পঞ্জিকা অনুযায়ী এভাবে গমনের ফল `মড়ক`। মনে করা হচ্ছে মায়ের দোলায় গমনও খুব একটা সুখকর নয়। এর ফলাফল বেশ নেতিবাচক।

 

 

ব্যস্ত প্রতিমাশিল্পীরা : এরই মধ্যে প্রতিমাশিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন খড়-মাটির প্রতিমায় দুর্গাকে মূর্ত করে তোলায়। মানসপটের দুর্গাকে তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পী। এবার দুর্গা প্রতিমা বানাতে ৩০ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন প্রতিমাশিল্পীরা। ফরমায়েশ বেশি হওয়ায় একসঙ্গে অনেক প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন কারিগররা।

 


প্রথমে বাঁশের কাঠামো, পরে খড় দিয়ে তৈরি হয় প্রতিমার অবয়ব। এরপর মাটির প্রলেপ দিয়ে দেবীকে মূর্ত করে তোলা হয়। ভেজা মাটি দিয়ে ছোট ছোট নকশা করে তৈরি করা হবে দুর্গা প্রতিমার সাজসজ্জা।

 

রাজধানীর বাসাবোর প্রতিমা শিল্পী শশীভূষণ রায় জানান, ১৬-১৮ বছর ধরে বিভিন্ন এলাকার মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির চাহিদামতো তিনি প্রতিমা তৈরি করছেন। প্রতিমা তৈরির কাজ মোটামোটি শেষ। এখন সেগুলোকে সাজানোর পালা। দুর্গা, কার্তিক, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও গণেশের প্রতিমায় শেষ তুলির আঁচড় লাগলে সেগুলো জীবন্ত হয়ে উঠবে।

 

পুরান ঢাকার বাসিন্দা নিতাই গোসাই প্রতিমা তৈরি করছেন অনেক বছর ধরে। তিনি জানান, শুধু টাকার জন্য নয়, প্রতিবছর প্রতিমা তৈরি করার নেশা থেকে তিনি এ কাজ করেন। রাত-দিন পরিশ্রম করে যখন কাজ শেষ হয়, তখন প্রতিমার দিকে তাকালেই ভালো লাগে।

 


বিভিন্ন মন্দিরে প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি কিছুদিন পরেই শুরু হবে প্যান্ডেল তৈরি এবং সাজসজ্জার কাজ। প্রতি বছর দুর্গোত্সবে রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঝলমলে আলোকসজ্জায় রঙিন হয়ে ওঠে। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রবেশ তোরন থেকে মন্দিরজুড়েই বর্নিল আলোকের রূপবিন্যাস দেখা যায়। এ চিত্র কেবল ঢাকেশ্বরী নয়, দেশের প্রায় সব মন্দির ও পূজামণ্ডপেই দেখা যায়।

 

রাজধানীতে পূজা মন্ডপ : রাজধানীর রমনা কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, স্বামীবাগ লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, বাংলাবাজার পূজা কমিটি, নর্থব্রুক হল রোড, প্রতিদ্বন্দ্বী পূজা মণ্ডপ, তাঁতীবাজার পূজা কমিটি, শঙ্ঘমিত্র শাঁখারীবাজার, পাণিটোলা, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান কমিটি, হাজারীবাগ সুইপার কলোনি, মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দির, আজিমপুর সার্বজনীন পূজা মণ্ডপ বনানী পূজা মণ্ডপ, গৌতম মন্দির, ভোলাগিরি আশ্রমসহ বিভিন্ন পূজা মন্ডপ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

 


উল্লেখ্য, গত বছর পূজা মন্ডপের সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার ৭৭টি। সারাদেশে এবার পূজামণ্ডপের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। রাজধানী ঢাকায় গতবছর পূজা হয়েছে ২৩১টি মন্ডপে।