ইতিহাস গড়ে নোবেল পেলেন ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড
সালেহীন বাবু
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ১২:৩২ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৩:১৬ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০১৮ বুধবার
ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড
চলতি বছর পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার জিতেছেন তিন পদার্থ বিজ্ঞানী। এ তিন বিজয়ীর মধ্যে দুজন পুরুষ একজন নারী। নোবেল পাওয়া নারী পদার্থবিজ্ঞানী হলেন ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড।
গত ৫৫ বছরের মধ্যে ইতিহাস গড়ে এবারই প্রথম নারী হিসেবে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেলেন কানাডার পদার্থবিজ্ঞানী ডোনা। এর আগে ১৯০৩ সালে পদার্থবিদ্যায় প্রথম নারী হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ম্যারি কুরি। সর্বশেষ ১৯৬৩ সালে জার্মান বংশোদ্ভূত মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী মারিয়া গ্যোপের্ট-মায়ার দ্বিতীয় নারী হিসেবে পদার্থের নোবেল পান।
কানাডার নারী পদার্থবিজ্ঞানী ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড উচ্চ তীব্রতা ও অতি ক্ষুদ্র লেজার পালস তৈরির উপায় উদ্ভাবন করেছেন যা বিভিন্ন ধরনের কাজ করে। এর মধ্যে একটি হলো, চোখের লেজার সার্জারি।
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমী অফ সায়েন্সেসের সঙ্গে একটি টেলিফোনে সাক্ষাত্কারে স্ট্রিকল্যান্ড বলেন, আমি শুনেছি আমার আগে কেবলমাত্র দুজন নারী নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। নারী পদার্থবিদদের পুরস্কারের জয় উদযাপন করতে হবে কারণ আমরা সেখানে রয়েছি, এবং আশা করছি সময়ের সাথে সাথে এটি দ্রুত হারে এগিয়ে যেতে শুরু করবে। আমি এমন বিরল নারীদের মধ্যে একজন হতে পেরে সম্মানিত।
বিবিসি নিউজের কাছে অন্য এক সাক্ষাৎকারে প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ড. স্ট্রিটল্যান্ড জানান, প্রথমে আপনি নিজেকে পাগল মনে করবেন, তাই আমার প্রথম চিন্তা ছিল এবং আপনি যদি এটা বাস্তবেই দেখেন যে আপনি পদার্থে নোবেল লাভ করেছেন তা হলে তা আপনার কাছে সর্বদাই অবিশ্বাস্য মনে হবে। জেরার্ডের সাথে ভাগ করে নেওয়া বলতে আমার কাছে যা মনে হয়, অবশ্যই তিনি আমার সুপারভাইজার এবং পরামর্শদাতা ছিলেন এবং তিনি সিপিএ (চির্পড পালস এম্প্লিফিকেশন)কে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, পুরস্কারটি অবশ্যই তার প্রাপ্য। এবং ড.আশকিন পুরস্কার পাওয়ায় আমি অত্যন্ত খুশি। আমি মনে করি তিনি এতগুলি আবিষ্কার করেছেন যে তাড়াতাড়ি অন্যান্য লোকেরা এমন দুর্দান্ত কাজ করে স্বীকৃতি পেয়েছেন। অবশেষে তাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে বলে তিনি যুক্ত করেন।
৫৯ বছর বয়সী ডোনা ১৯৫৯ সালে কানাডার ওন্টারিওতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৮১ সালে ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পদার্থে স্নাতক করেন। ১৯৮৯ সালে রোচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি পান। ডোনা ১৯৯৮ সালে আলপ্রেড পি.স্লোয়ান রিসার্চ ফেলোশিপ,১৯৯৯ সালে প্রিমিয়ার্স রিসার্স এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড,২০০২ সালে কট্রেল স্কালার্স অ্যাওয়ার্ড পান। ২০০৮ সালে ফেলো অফ দা অপটিকাল সোসাইটি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ নোবেল পেলেন।
ব্যাক্তিগত জীবনে লেজার বিজ্ঞানী ডগলাস ডাইকারকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের দুইটি সন্তান আছে।
বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞান ,অর্থনীতি ও শান্তিতে সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয় নোবেল পুরস্কারটিকে। পদার্থে নোবেল পুরস্কারটিতে নারীদের অংশগ্রহণ খুবই অপ্রতুল, তাই এবছরের নোবেলটি অর্ধশতক বছর পরে ঐতিহাসিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে যা দুনিয়াজুড়ে নারীদের অনুপ্রাণিত করবে। সেই হিসেবে ডোনা এখন নারীদের আইকনে পরিণত হয়েছেন।