রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও সার্বজনীন নয়
সালেহীন বাবু
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০১:৪০ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৮ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:৫৪ এএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৮ বুধবার
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও দলগুলোর কমিটিতে যে সংখ্যায় নারী সদস্য রাখার বাধ্য-বাধকতা রয়েছে তা এখনো পূরণ করতে পারেনি কোনও দলই। তাই বলে নারীরা রাজনীতিতে থেমে নেই। নির্দিষ্ট কয়েকটি দল ছাড়া বড় বড় দলগুলোতে কেন্দ্রীয় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত নারী রাজনীতিবিদরা সাফল্যের পরিচয় দিচ্ছেন।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর সমস্ত পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য ২০২০ সাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আওয়ামী লীগ, বিএনপির মতো দলে নারীদের অংশগ্রহণ আগের থেকে বাড়লেও কুড়ি শতাংশের ওপরে কোনো রাজনৈতিক দলেই নারী সদস্য নেই। সবেচেয়ে মন্দা অবস্থা ধর্মভিত্তিক ইসলামী দলগুলোর। এসব দলগুলোতে নারী সদস্য তো নেই। উল্টো দলগুলো নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপারেই সম্মত নয়। তারা মনে করেন নারীরা পুরুষের সহযোগী। সভা সমাবেশে তাদের যাওয়ার দরকার নেই।
দেশে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইসলামী ধর্মভিত্তিক দল ১১টি। এদের মধ্যে এমন দলও আছে যাদের কেন্দ্রীয় বা তৃণমূলের কোনো কমিটিতেই কোনো নারী সদস্য নেই।
এমতাবস্থায় সব দলে নারীরা অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলেও তারা থেমে নেই। নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। এরকমই একজন শেরপুরের সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী এডভোকেট ফারহানা পারভীন মুন্নী। তিনি বলেন,এখন নারীরা সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাচ্ছে। সাংগঠনিকভাবে একজন নারী দক্ষ হলে রাজনীতিতে অনেকদূর আগানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। এ ব্যাপারে দলের নেতাকর্মীরাও সর্বাত্বক সহযোগিতা করে বলে জানান তিনি।
ফারহানা পারভীন এডভোকেট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে শেরপুর যুব মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক তিনি। তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের দলে তৃণমূল পর্যায়েও অনেক নারীরা সক্রিয়। তারাই নারীদের সংগঠনগুলো টিকিয়ে রেখেছে। দিনকে দিন নারীর অংশগ্রহণ বাড়বে বৈকি কমবে না। বিষয়টি সহজ না হলেও নারীরা রাজনীতিতে কখনও আর পিছিয়ে আসবেনা বলে মনে করেন তিনি।
রাজনীতিতে নারীর সাফল্যের প্রমাণ পাওয়া গেছে জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে। এমনকি আগামী নির্বাচনেও অনেক নারী রাজনীতিবিদরা সরাসরি নির্বাচন করবেন। যে কোন দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নারীর সম্পৃক্ততা যত বেশি হবে ঐ দলের তৃণমূল পর্যায়ে নারীরা তত বেশি সংগঠিত হবেন। যদি নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব প্রত্যেক দলে নিশ্চিত করা যায় তাহলে দেশের রাজনীতিতে নারীদের সাফল্যের নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ সার্বজনীন হবে।