ঢাকা-১৮ আসনে এগিয়ে হেভিওয়েট প্রার্থী সাহারা খাতুন
সালেহীন বাবু
উইমেননিউজ২৪.কম
প্রকাশিত : ০৩:৫৬ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০১৮ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:১৭ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০১৮ রবিবার
ঢাকা-১৮ আসনে এগিয়ে আছেন হেভিওয়েট প্রার্থী সাহারা খাতুন। এ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আগের মেয়াদেও তিনি এ আসনের এমপি ছিলেন। দলীয় প্রধানের আস্থাভাজন হওয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ঢাকা-১৮ সংসদীয় আসন হল বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার একটি। এটি ঢাকা শহরে অবস্থিত জাতীয় সংসদের ১৯১নং আসন। রাজধানীর উত্তরা পূর্ব, উত্তরা পশ্চিম, তুরাগ, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, উত্তরখান ও দক্ষিণখান থানার পুরো এলাকা এবং ভাটারা থানার সামান্য অংশ নিয়ে ঢাকা-১৮ সংসদীয় আসন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তিগতভাবে সাহারা খাতুন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খুবই কাছের। ফলে ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও সাহারাই মনোনয়ন পান। সে নির্বাচনে তিনি বিএনএফের রহমান নাজিমকে হারিয়ে আবারও সংসদ সদস্য হন। তিনি আগ্রহী থাকলে আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।
সাহারা খাতুন ১ মার্চ ১৯৪৩ সালে ঢাকার কুর্মিটোলায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা-মাতা হলেন যথাক্রমে, আব্দুল আজিজ ও টুরজান নেসা। তিনি বি.এ এবং এল.এল. বি ডিগ্রী আর্জন করেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক মহিলা আইনজীবী সমিতি ও আন্তর্জাতিক মহিলা জোটের সদস্য। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে একজন আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। সাহারা খাতুন ছাত্র জীবনেই রাজনীতিতে যুক্ত হন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রথম মহিলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তবে সাহারা খাতুনের ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতাও এবার দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্য নেতাদের মধ্যে আছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান, খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসলাম উদ্দিন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এস এম তোফাজ্জল হোসেন। ২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম,যুবদল মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর,তরুণ ব্যবসায়ী নেতা মো. বাহাউদ্দিন সাদীও এলাকায় সক্রিয় আছেন।
ঢাকা-১৮ আসনের এলাকাগুলো ছিল একসময় ঢাকা-৫ আসনের অন্তর্ভুক্ত। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আসন পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে এগুলো ঢাকা-১৮ আসনের আওতায় আসে। ১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে তত্কালীন ঢাকা-৫ আসন থেকে এমপি হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। পরে তার ছেড়ে দেওয়া আসনে উপনির্বাচনে বিজয়ী হন বিএনপির মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম। ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের এ কে এম রহমতুল্লাহর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। অষ্টম সংসদ নির্বাচনে আবার এমপি হন কামরুল। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ঢাকা-৫ আসনের আংশিক এলাকা নিয়ে ঢাকা-১৮ আসন গঠিত হয়। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বিএনপির আজিজুল বারী হেলালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হন। পরে পূর্ণমন্ত্রী হয়ে প্রথমে স্বরাষ্ট্র এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
খিলক্ষেত ও উত্তরা থানা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী জানায়, এ আসনে দলের নীতিনির্ধারকদের কাছে একজন স্থানীয় প্রার্থী দেওয়ার অনুরোধ জানানো হবে। স্থানীয় কোনো নেতা সংসদ সদস্য হলে এলাকার সাধারণ মানুষ বেশি উপকৃত হয়। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতে, এ আসনের এলাকাগুলোর মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং উত্তরার মতো গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকা যেমন রয়েছে তেমনি উত্তরখান, দক্ষিণখান, ডুমনি, হরিরামপুরের মতো পিছিয়ে থাকা এলাকাও আছে। ফলে উন্নয়নের সমন্বয়ের স্বার্থে আসনটিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।