ঢাকা, শুক্রবার ২৯, নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৯:১৯ পিএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

রাজনীতিতে নারীর সংখ্যাবৃদ্ধিতে ধীরগতি, এবার প্রার্থী মাত্র ৬৭

সাদেকুর রহমান

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:১২ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার

ছবি : সংগ্রহ করা

ছবি : সংগ্রহ করা

৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচন। এবার ভোট যুদ্ধে অংশ নিতে অবশেষে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মাত্র ৬৭ জন নারী প্রার্থী।  ক্ষমতাসীন  আওয়ামী লীগ থেকে ২০ জন এবং বিএনপি থেকে ১৪ জন নারী প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়াইয়ের টিকিট পেয়েছেন। অন্যান্য দলগুলোতেও নারী প্রার্থীর সংখ্যা কম। মোট প্রার্থীর সংখ্যা ছিলো ১৮ শতাধিক।


এদিকে নির্বাচন কমিশনের গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) ২০২০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী কোটা পূর্ণ করার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা আছে। আরপিওর ৯০-এর খ-এর খ(২) অনুচ্ছেদে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ রাজনৈতিক দলের সব স্তরের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ পদ নারী সদস্যদের জন্য সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পর্যায়ক্রমে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া আছে। 

নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, এবার জাতীয় নির্বাচনে দেশের ৬৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৬৭ জন নারী প্রার্থী, যা অতীতের সব জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে বেশি। যদিও ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৮ জন নারী মনোনয়ন পান।  নির্বাচনে এবার আওয়ামী লীগের হয়ে নৌকা প্রতীকে ২০ জন, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে ১৪ জন, জাতীয় পার্টির (এরশাদ) লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ৫ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়বেন ৬ জন নারী প্রার্থী। এ ছাড়া ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ৪ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের ৩ জন, জাকের পার্টির ৩ জন, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২ জন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের ২ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ২ জন নারী প্রার্থী ভোটের মাঠে লড়াই করবেন। আর জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, গণফ্রন্ট, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির একজন করে নারী প্রার্থী নির্বাচন করছেন। 

যদিও নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি ছিল নারী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে, তবে সে দাবি এবারও পূরণ হয়নি। 

২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বিধিমালা প্রণয়নের সময় এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্বের শর্ত দেয়। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এখনো এই শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ফলে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে খুব ধীরগতিতে।  

দেশের প্রথম নির্বাচনে ১৯৭১ সালে মোট প্রার্থী ছিলেন মাত্র দুজন নারী। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ম সংসদ নির্বাচনে ৩০ জন নারী প্রার্থী ছিলেন। এর আগে ৯ম সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৬৪ জন নারী।

নির্বাচনে এবার যারা প্রতিদ্বন্দি¦তা করছেন- পঞ্চগড়-২ থেকে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, দিনাজপুর-৬ থেকে শাহিদা খাতুন, নীলফামারী-২ থেকে মোছা. রাবেয়া বেগম, রংপুর-৩ থেকে রিটা রহমান, রংপুর-৪ থেকে লায়লা আঞ্জুমান আরা বেগম, রংপুর-৬ থেকে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, গাইবান্ধা-১ থেকে আফরুজা বারী, গাইবান্ধা-২ থেকে মাহাবুব আরা গিনি, গাইবান্ধা-৩ থেকে দিলারা খন্দকার, জয়পুরহাট-১ থেকে মোছা. আলেয়া বেগম, নাটোর-২ থেকে সাবিনা ইয়াসমিন, সিরাজগঞ্জ-১ থেকে রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা, সিরাজগঞ্জ-২ থেকে রুমানা মাহমুদ, চুয়াডাঙ্গা-১ থেকে মোছা. মেরিনা আক্তার, যশোর-৬ থেকে ইসমত আরা সাদেক, বাগেরহাট-৩ থেকে হাবিবুন নাহার, খুলনা-২ থেকে মনিরা বেগম, খুলনা-৩ থেকে বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, পটুয়াখালী-২ থেকে সালমা আলম, বরিশাল-৫ থেকে শামিমা নাসরিন, বরিশাল-৬ থেকে নাসরিন জাহান রতনা, ঝালকাঠি-২ থেকে জীবা আমিনা খান, টাঙ্গাইল-৭ রুপা রায় চৌধুরী, টাঙ্গাইল-৮ থেকে ব্যারিস্টার কুঁড়ি সিদ্দিকী, শেরপুর- ১ থেকে সানসিলা জেবরিন, শেরপুর-২ মতিয়া চৌধুরী, ময়মনসিংহ-৪ এবং ৭ থেকে বেগম রওশন এরশাদ, ময়মনসিংহ-১১ থেকে নাজমা আক্তার, নেত্রকোনা-৪ থেকে জলি তালুকদার, তাহমিনা জামান, রেবেকা মমিন, কিশোরগঞ্জ-৫ থেকে সেলিনা সুলতানা, মানিকগঞ্জ-২ থেকে মমতাজ বেগম, মানিকগঞ্জ-৩ থেকে আফরোজা খান রিতা, মুন্সীগঞ্জ-২ থেকে সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, মুন্সীগঞ্জ-৩ থেকে চৌধুরী ফাহরিয়া আফরিন, ঢাকা-১ থেকে এডভোকেট সালমা ইসলাম, ঢাকা-৮ থেকে প্রকৌশলী শম্পা বসু, সুমি আক্তার শিল্পী, হাসিনা হোসেন, ঢাকা-৯ থেকে আফরোজা আব্বাস ও মাহফুজা আক্তার, ঢাকা-১১ থেকে শামীম আরা বেগম, ঢাকা-১৬ থেকে নাঈমা খালেদ মনিকা, ঢাকা-১৮ থেকে এডভোকেট সাহারা খাতুন, গাজীপুর-৪ থেকে সিমিন হোসেন রিমি, গাজীপুর-৫ মেহের আফরোজ চুমকী ও রাহেলা পারভীন শিশির, নরসিংদী-২ থেকে সাদিকুন নাহার খান, ফরিদুর-২ থেকে শামা ওবায়েদ রিংকু ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, গোপালগঞ্জ-৩ থেকে শেখ হাসিনা, সুনামগঞ্জ-২ থেকে জয়া সেনগুপ্তা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ থেকে জেসমিন নূর বেব, কুমিল্লা-২ থেকে সেলিমা আহমেদ মেরীনা, চাঁদপুর-৩ থেকে ডা. দীপু মনি ও দেওয়ান কামরুন্নেছা, ফেনী-১ থেকে শিরীন আখতার, নোয়াখালী-৪ থেকে সামসুন নাহার, নোয়াখালী-৫ থেকে মমতাজ বেগম, নোয়াখালী-৬ থেকে আয়েশা ফেরদৌস, লক্ষ্মীপুর-৪ থেকে তানিয়া রব, চট্টগ্রাম-১০ থেকে সাবিনা খাতুন, কক্সবাজার-১ থেকে তানিয়া আফরিন ও হাসিনা আহমেদ, কক্সবাজার-৪ থেকে শাহীন আক্তার এবং রাঙামাটি থেকে জুঁই চাকমা।

বাংলাদেশের মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক নারী। এ সংখ্যা ৫ কোটি ১৬ লাখের বেশি।