ঢাকা, বুধবার ২০, নভেম্বর ২০২৪ ১১:৩৫:৫৩ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

এ বছর পাখি শূন্য জাহাঙ্গিরনগরের পাখি মেলা!  

নিজস্ব প্রতিবেদক

উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ০১:২৪ এএম, ১২ জানুয়ারি ২০১৯ শনিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

এ বছর পাখি শূন্য জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখি মেলা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে পাখি আসেনি। পাখির অভয়ারণ্যে প্রচুর মানুষ ও যন্ত্রচালিত যানের অবাধ চলাচলের কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন পাখি বিশেষজ্ঞরা।

এ অবস্থায় শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় ১৮তম পাখি মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সামনে উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে উপাচার্য বলেন, পাখির অভয়ারণ্য নিশ্চিত করতে হলে সুন্দর এবং প্রয়োজনীয় পরিবেশ ধরে রাখতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখির বসবাস উপযোগী পরিবেশ অক্ষুন্ন  রাখা হয়েছে। এ কারণে প্রতি বছর শীত মৌসুমে পরিব্রাজক পাখি নিয়মিতভাবে এখানকার জলাশয়ে আসে।

প্রতিবছর এ ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে আসে নাম না জানা অসংখ্য অতিথি পাখি। আর এসব অতিথি পাখিকে কেন্দ্র করে ২০০১ সাল থেকে পাখি মেলার আয়োজন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ। প্রতিবছরের মত এবারও পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হলো ১৮তম ‘পাখি মেলা-২০১৯’। 

কিন্তু এ বছর ‘অতিথি পাখি’র অভরায়ণ্য খ্যাত এ ক্যাম্পাসটির অধিকাংশ লেকেই দেখা যায়নি ‘অতিথি পাখি’। যার কারণে ভোরের কুয়াশা উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা লাল শাপলার জলে অতিথি পাখির কিচিরমিচির, খুনসুটি আর ওড়াওড়ি দেখতে পারেনি। আর এসব দেখতে না পেরে দর্শনার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হতাশা। তারা দ্রুত পাখির আবাসস্থল সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি জোড় দাবি জানিয়েছেন। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘পাখি মেলাকে উদ্দেশ করে প্রচুর বাহিরের দর্শনার্থী ক্যাম্পাসে আসে। তারা অনেকেই গাড়ি নিয়ে আসে। যেসব গাড়ির শব্দে পাখিরা চলে যায়। এছাড়াও বাহিরের থেকে আসা দর্শনার্থীরা অসতর্কতাবশত বিভিন্ন কাজ করে থাকে, যার কারণেও পাখিরা চলে যায়।’

পাখিমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট পাখিবিশারদ ড .ইনাম আল হক, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, আইসিইউএন বাংলাদেশ প্রতিনিধি রাকিবুল আমিন, কথা সাহিত্যিক আখতার হোসেন প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন পাখিমেলার আহবায়ক অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মডারেটর ছিলেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. এটিএম আতিকুর রহমান।

এদিকে এ বছর দ্বিতীয় বারের মত পাখিমেলায় বিগ বার্ড বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড, কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ও সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ প্রদান করা হয়। নতুন ও দুর্লভ প্রজাতির পাখির সন্ধান পাওয়ায় এবার বিগ বার্ড বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন যথাক্রমে শফিকুর রহমান শুভ্র, মো. কায়েস ও তৌকির হাসান হৃদয়। 

এছাড়া কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন রাহুল এম ইউসুফ, আদিব মুমিন আরিফ ও আব্দুল্লাহ আল ওয়াহিদ। এছাড়া সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন মুনতাছির আকাশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম পুরস্কৃতদের হাতে সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন।

এছাড়া মেলায় দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে ছিল- আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতা, পাখি বিষয়ক আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু-কিশোরদের জন্য পাখির ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, টেলিস্কোপ ও বাইনোকুলারস দিয়ে শিশু-কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ, স্টল সাজানো প্রতিযোগিতা (পাখির আলোকচিত্র ও পত্র-পত্রিকা প্রদর্শনী), জাবি ক্যাম্পাসের পাখি বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখিচেনা প্রতিযোগিতা (অডিও-ভিডিও এর মাধ্যমে), পাখি বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা (সকলের জন্য উন্মুক্ত) এবং পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।