ভাষাসৈনিক হালিমা খাতুন: ভাষার জন্য নিবেদিত
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ১২:০৪ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সোমবার
ফাইল ছবি
‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’-এই দাবি নিয়ে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভেঙে যে মিছিল বের হয় সেই মিছিলের অন্যতম নারী নেত্রী ছিলেন হালিমা খাতুন।
ভাষা আন্দোলনে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া হালিমা খাতুন আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসার জন্য চাঁদাও তুলেছেন। পরে বাংলা ভাষার স্বীকৃতির দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য নারীদের সংগঠিত করার দায়িত্ব নেন ২০১৯ (মরণোত্তর) একুশে পদক প্রাপ্ত ভাষা সৈনিক হালিমা খাতুন।
হালিমা খাতুনের জন্ম ১৯৩৩ সালের ২৫ আগস্ট। তিনি জন্মগ্রহণ করেন বাগেরহাট জেলার বাদেকাড়াপাড়া গ্রামে।তাঁর বাবা মৌলবী আব্দুর রহিম শেখ ছিলেন স্কুল শিক্ষক এবং মা দৌলতুন নেসা ছিলেন গৃহিনী।
হালিমা খাতুনের প্রথম শিক্ষার হাতেখড়ি হয় বাদেকাড়াপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে। এরপর ১৯৪৭ সালে মনমোহিনী গার্লস স্কুল থেকে তিনি এসএসসি পাস করেন। তিনি এইসএসসি ও বিএ পাস করেন বাগেরহাট প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজ থেকে।
হালিমা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাস করেন।এখানেই তিনি তাঁর জ্ঞান অন্বেষণ থামিয়ে রাখেননি। পরবর্তীতে তিনি প্রাথমিক শিক্ষার ওপর পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নর্দান কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
তিনি শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। শিক্ষকতা করেছেন খুলনা করোনেশন স্কুল, আরকে গার্লস কলেজ এবং রাজশাহী গার্লস কলেজে। পরে যোগ দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট-এ। এখান থেকেই ১৯৯৭ সালে তিনি অবসরে যান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়েই তিনি ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। ভাষা আন্দোলনের সময় হলের মেয়েদের সাথে নিয়ে আহত ভাষা সৈনিকদের সহযোগিতার জন্য চাঁদা তুলেছেন তিনি। এছাড়া লিফলেট বিলি, পোস্টার লেখার দায়িত্বও পালন করেছেন ওই সময়। ভাষা সংগ্রামের প্রায় সব মিছিল-মিটিংয়েই তিনি অংশগ্রহণ করতেন।
ভাষা আন্দোলনে তাঁর এই অবদানের জন্য শিল্পকলা একাডেমি থেকে পেয়েছেন ভাষা সৈনিক সম্মাননা। এছাড়া পেয়েছেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, লেখিকা সংঘ পুরস্কারসহ আরো নানা পুরস্কার।
উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন রোগে ভোগার পর ২০১৮ সালের ৩ জুলাই মারা যান ভাষা সৈনিক হালিমা খাতুন।