বং থেকে বাংলা’র রিজিয়া রহমান এবং বাংলা সাহিত্য
অনলাইন ডেস্ক
উইমেননিউজ২৪
প্রকাশিত : ০৭:৩৪ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ মঙ্গলবার
রিজিয়া রহমান, ফাইল ছবি
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এবছর ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক পেয়েছেন রিজিয়া রহমান। দেশের জনপ্রিয় এই লেখকের বেড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলেই। দাদা মুন্সী আব্দুল খালেক সাহিত্য চর্চা করতেন। বাংলার পাশাপাশি ইংরেজী আর ফার্সি বইয়ের সংগ্রহ ছিলো বাসায়।
রিজিয়া রহমানের জন্ম হয় ১৯৩৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভারতের কোলকাতার ভবানীপুরে। তবে বাবার বদলির চাকরির সূত্রে তাঁকে থাকতে হয়েছে ভারত ও কলকাতার বিভিন্ন জায়গায়। চিকিৎসক বাবা আবুল খায়ের মোহম্মদ সিদ্দিক ও মা মরিয়ম বেগমেরও সঙ্গীতের প্রতি ঝোঁক ছিলো।
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বেড়ে ওঠা রিজিয়া রহমানের সাহিত্য চর্চাটাও শুরু হয় সেই শৈশব থেকেই। ওই সময়ই বিভিন্ন পত্রিকাতে তাঁর গল্প ও কবিতা ছাপা হতে থাকে। পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই তাঁর লেখা গল্প টারজান ছাপা হয়েছিলো সত্যযুগ পত্রিকায়। প্রথম গল্পগ্রন্থ অগ্নিস্বাক্ষর প্রকাশিত হয় ১৯৬৭ সালে।
একুশে পদক প্রাপ্ত এই সাহিত্যিকের চলার পথটা সবসমই কিন্তু মসৃণ ছিলো না। নানা চড়াই-উৎরাই পার করতে হয়েছে তাঁকে। ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর পরিবারের সাথে চলে আসেন বাংলাদেশে। ফরিদপুরে শুরু করেন প্রাথমিক শিক্ষা।
১৯৫২ সালে বাবা মারা গেলে ঢাকার শাইনপুকুরে নানাবাড়িতে চলে আসতে হয় তাঁকে। নানার পরিবার ছিলো অতিমাত্রায় রক্ষণশীল। আর এজন্যে তাঁকে একটা সময় বন্ধ করে দিতে হয় পড়াশোনা। পরে তিনি এসএসসি পাস করেন প্রাইভেটে পরীক্ষা দিয়ে।
নানা বাড়ির লোকেদের এই রক্ষণশীল মনোভাব তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। তিনি ১৯৬০ সালে ইত্তেফাকের সাহিত্য পাতায় গল্প লেখার মাধ্যমে আবারো শুরু করেন লেখালেখি।
তবে পড়ালেখাটা তাঁকে সম্পন্ন করতে হয়েছে বিয়ের পর। তিনি ইডেন মহিলা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন।
রিজিয়া রহমান উপন্যাসের পাশাপাশি লিখেছেন অসংখ্য গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ ও রম্যরচনা। তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মগুলো হলো-ঘর ভাঙা ঘর, উত্তর পুরুষ, রক্তের অক্ষর, বং থেকে বাংলা প্রভৃতি। সাহিত্যে অবদানের জন্য এর আগেও তিনি পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার।
কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ত্রিভুজ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে। জাতীয় জাদুঘরের পরিচালনা বোর্ডের ট্রাস্টি ও জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের কার্য পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়াও বাংলা একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন তিন বছর।